অর্থনীতি রিপোর্টা
যশোরের গদখালীর ফুলচাষিরা বসন্ত বরণ ও ভালবাসা দিবসে প্রায় ১২ কোটি টাকার ফুল বিক্রি করেছেন বলে গদখালী ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি এবং বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আবদুর রহিম দাবি করেছেন।
রহিম জানান, গত ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে গদখালীতে ফুল বিক্রি শুরু হয়। এর আগেই ব্যবসায়ীরা ফুল মজুত করে রাখেন। যশোর শহর থেকে ২০ কিলোমিটার পশ্চিমে যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক ধরে এগিয়ে গেলে ঝিকরগাছার গদখালী বাজার। ফুলের সাম্রারাজ্য হিসেবেই এলাকাটির রয়েছে সারাদেশে পরিচিতি। দেশের ফুলের চাহিদার ৬০-৭০ ভাগ জোগান দেন এখানকার চাষিরা। বিভিন্ন দিবসে সারাদেশে যে পরিমাণ ফুল বেচা-কেনা হয় তার বেশিরভাগই যশোর থেকে সরববাহ করা হয়। প্রতিদিন ভোর থেকে গদখালী বাজারে বসে ফুলের পাইকারি বাজার। এইবাজার থেকে গড়ে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার বিভিন্ন জাতের ফুল রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পৌঁছে যায়। তাই বিশেষ বিশেষ দিবস উপলক্ষে এখানে বেচা-কেনা হয় কয়েক কোটি টাকার ফুল।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপ-পরিচালক শেখ হেমায়েত হোসেন জানান, এ বছর গদখালীতে ৫৬০ হেক্টর জমিতে ফুলের আবাদ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফুলের ফলন ভাল হয়েছে। এছাড়া এই অঞ্চলের অনেক কৃষক বাইরে থেকে ফুল চাষের প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন। সব মিলিয়ে সচেতন হওয়ায় ফুলের আবাদে কৃষকরা অধিক লাভবান হচ্ছেন।
গত শনিবার ও রোববার গদখালীতে ১শ’ গোলাপ ১ হাজার টাকা আর গাঁদা ফুল বিক্রি হয়েছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা প্রতি হাজার। এছাড়া রজনীগন্ধা প্রতি পিস ৪ থেকে ৫ টাকা, জারবেরা প্রতি পিস ৮ থেকে ১৫ টাকা বিক্রি হয়েছে। চাষিরা এ দাম পেয়ে খুশি। এ অঞ্চলের ফুল চাষের পথিকৃত শের আলী জানান, বসন্তবরণ, উৎসব আসতেই সবাই তাকিয়ে থাকেন যশোরের ফুলের দিকে। তাই চাষিদের দম ফেলার ফুসরত থাকে না। প্রতিদিনই পাইকারি বাজারে দূর-দূরান্তের ক্রেতা আসছেন। কেউ বিকাশে, কেউ ব্যাংকে টাকা দিয়ে ফুলের অর্ডার দিচ্ছেন। তবে চাষিরা ন্যায্যমূল্যেই ফুল বিক্রি করছে বলে তিনি দাবি করেন।
এদিকে ফুল নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন গদখালীর ফুল চাষিরা। কোনো কোনো কৃষক ক্ষেত পরিচর্যা, কেউ ক্ষেত থেকে ফুল তুলে সাজগোজ করছেন আবার অনেকে বাজারে ফুল বিক্রি করতে আসছেন। সব মিলে ফুলের সাম্রারাজ্য গদখালী এখন কর্মচাঞ্চল্য।
সোনালীনিউজ/এমটিআই