ঢাকা: আমন ধানের মৌসুমেও চালের দাম কেজি প্রতি এক টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় সবজির দাম কিছুটা নাগালের মধ্যে রয়েছে। তবে, কমেছে পেয়াজের দাম।
শুক্রবার (৯ মার্চ) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে চালের দামে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেলেও নতুন করে আর বাড়েনি বলে দাবি করেছেন বিক্রেতাদের কেউ কেউ। কিন্তু গত এক সপ্তাহে চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
কারওয়ান বাজারের এক চাল বিক্রেতা মাসুদ মিয়া বলেন, আমন মওসুম শেষ হওয়ার পর এখন ধাপে ধাপে চালের দাম বাড়ছে। গত এক সপ্তাহে কারওয়ান বাজারে প্রতিকেজি মিনিকেটের দাম বেড়েছে ১/২ টাকা করে। অন্য চালের দামও বেড়েছে।
কারওয়ান বাজারে মিনিকেট প্রতিকেজি ৬৩ থেকে ৬৪ টাকা, বিআর আটাশ ৫০ টাকা, মোটা চাল (স্বর্ণা) ৪৪ থেকে ৪৫ টাকা, নজিরশাইল ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি। তবে উত্তর বাড্ডার সাতারকুল রাইস এজেন্সির ব্যবস্থাপক বিপ্লব হোসেন বলেন, গত সপ্তাহে মিনিকেট চালের দাম প্রতি বস্তায় (৫০ কেজি) ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেড়েছিল। এই সপ্তাহে নতুন করে আর দাম বাড়েনি।
এদিকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে আমদানি ও দেশি পেঁয়াদের দাম কেজিতে অন্তত ৫ টাকা কমেছে বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন।
কারওয়ানবাজারে পেঁয়াজ বিক্রেতা জয়নাল আবেদিন বলেন, গত শুক্রবার দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজের পাল্লা (৫ কেজি) ২০০ টাকা থেকে ২১০ টাকার মধ্যে ছিল। তবে এই সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজের পাল্লা ১৮০ টাকায় নেমেছে। ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়।
অবশ্য কারওয়ান বাজারে দাম কমার এই প্রভাব দেখা যায়নি দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হাতিরপুল কাঁচাবাজারে। সেখানে এদিনও ৪৫ টাকায় প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল। তবে সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্যে শুক্রবার প্রতিকেজি ৩৫ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি হওয়ার কথা বলা হয়েছে। সেই হিসাবে গত এক মসে পণ্যটির দাম কমেছে ১৯ শতাংশ।
সরবরাহ ঘাটতির কারণে গত নভেম্বর মাসে পেঁয়াজের দাম প্রতিকেজি ১২০ টাকা হয়েছিল। ভারতীয় পেঁয়াজের দামও বেড়ে একশ টাকার কাছাকাছি চলে যায় তখন। পেঁয়াজের দাম কমলেও আমদানি রসুনের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে এখন ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে কারওয়ান বাজারে। কারওয়ান বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম আগের মতোই প্রতিকেজি ১২৫ থেকে ১৩০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। হাতিরপুল বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতিকেজি ১৩৫ টাকা।
বাজারে নতুন আসা পটল, করলা, উচ্ছে, ঢেঁড়শের দাম গত সপ্তাহের মতোই চড়াভাবে রয়েছে। কারওয়ান বাজারে এসব সবজির দাম প্রতিকেজি ৬০ টাকা থেকে ৭০ টাকার মধ্যে। হাতিরপুলে ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে করলা ও পটল। আর যাত্রবাড়িতে বিক্রি হচ্ছে করলা ৮০ টাক, ঢেঁড়শ ১০০ টাকা, টমেটো ৩০ টাকা, কায়তা ৫০ টাকা, শালগম ৩০ ও পেঁপে ৩০ টাকা কেজি।
প্রতি ডজন ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ফার্মের মুরগির ডিম। তবে দোকানগুলোতে তা বিক্রি হচ্ছে ৮৪ টাকায়। মাছের বাজার কিছুটা চড়া বলে জানিয়েছেন কারওয়ান বাজারের বিক্রেতারা। এই বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ৭০০ গ্রাম ওজনের মাঝারি মানের একটি ইলিশের দাম চাওয়া হচ্ছে ৬শ টাকা। দুই সপ্তাহ আগে একই আকারের মাছ সাড়ে ৪শ থেকে ৫শ টাকায় বিক্রি হয়েছিল বলে এক বিক্রেতা দাবি করেন।
এছাড়া মাঝারি আকারের রূপচাঁদা মাছ বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৭শ থেকে ৮শ টাকায়। রুই কাতলের দাম আকার ভেদে বেশ পার্থক্য রয়েছে। বড় আকারের রই মাছের কেজি যেখানে সাড়ে ৩শ থেকে চারশ টাকা, সেখানেই ছোট রুই মাছগুলোর দাম চাওয়া হচ্ছে আড়াশই টাকা।
কারওয়ান বাজারে বাতাসি মাছ প্রতিকেজি আড়াশ টাকা, বাইম মাছ ৭শ টাকা, টেংরা ৪শ’ টাকা এবং শোল মাছ ৪০০ টাকা করে দাম চাচ্ছিলেন বিক্রেতারা।
সোনালীনিউজ/আতা