মডেল ও বড় পর্দার নবাগত নায়িকা সানাই মাহবুব। আলোচনা-সমালোচনা তাঁর পিছু ছাড়ে না। অনেক দিন পর একটি গানের ভিডিওতে মডেল হয়েছেন। সুদীপ কুমার দীপের লেখা আর সাবার গাওয়া গানটির শিরোনাম ‘দেশলাই’। শুক্রবার সকাল থেকে রাজধানীর একটি শুটিংবাড়িতে গানের ভিডিওটির শুটিং হয়েছে। পরিচালনা করছেন এ কে আজাদ।
কী ধরনের গানে মডেল হয়েছেন?
আইটেম গান। বড় বাজেটের। ঈদুল ফিতরের এক্সক্লুসিভ। যে পরিকল্পনা নিয়ে গান ভিডিওটির কাজ হচ্ছে, আশা করছি ঈদের বড় ধামাকা হবে এটি। ভিডিওতে আমার সঙ্গে চলচ্চিত্রের খলনায়ক ডনও আছেন। এ ছাড়া ৩০ জন ছেলেমেয়ে গানটির সঙ্গে নৃত্যে অংশ নিয়েছেন।
আপনি তো এর আগেও গানের ভিডিওর মডেল হয়েছেন?
এর আগে তিনটি গান ভিডিওতে কাজ করেছি। গানগুলো হলো ‘প্রেমের নেশায়’, ‘বড় লোকের মেয়ে’ ও ‘অবাক তুমি’। গত জানুয়ারি মাসে পর্যায়ক্রমে ইউটিউবে প্রকাশিত হয়েছে গান ভিডিওগুলো।
কিন্তু কাজগুলো নিয়ে তেমন আলোচনা হয়নি।
কেন আলোচনা হয়নি, তা আমার জানা নেই। মাঝে মাঝে মনে হয়, আমাদের দর্শকেরা আসলে কী চায়? আমি নিজেও বিভ্রান্ত হয়ে পড়ি। আমি যখন ফেসবুকে বোরকা পরা ছবি দিচ্ছি, তাতে যে ধরনের মন্তব্য পাচ্ছি, আবার হাফপ্যান্ট পরা ছবি দিলে একই ধরনের মন্তব্য। এসব আমাকে ভীষণ যন্ত্রণা দিচ্ছে। খুবই হতাশ আমি।
আপনার সিনেমার তো কোনো খবর নেই। কেন?
‘ময়নার ইতিকথা’ ও ‘সুপ্ত আগুন—দ্য হিডেন ফায়ার’ নামে দুটি সিনেমায় কাজ করেছি। আরও একটি হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ছবিটি আর হচ্ছে না।
২০১৭ সালে আপনি সিনেমাতে নাম লিখিয়েছেন। এখনো একটি ছবিও মুক্তি পায়নি। কারণ কী?
এর মধ্যে ‘ময়নার ইতিকথা’ ছবির শুটিং শেষ হয়েছে। ‘সুপ্ত আগুন—দ্য হিডেন ফায়ার’ ছবির শুটিং বাকি আছে। ‘ময়নার ইতিকথা’ ছবিটি আগেই মুক্তি পেত, কিন্তু প্রযোজক আজম খান ও পরিচালক বাবু সিদ্দিকীর মধ্যে মাঝে ভীষণ ঝামেলা হয়। এ কারণে ছবিটির মুক্তি পিছিয়ে গেছে। আশা করছি দুই ঈদের মাঝে ছবিটি মুক্তি পাবে।
সাধারণত ছবি মুক্তির পরে নায়ক-নায়িকা আলোচনায় আসে। আপনি তো ছবিতে নাম লিখেই আলোচিত।
ওই সময় আমি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সরব ছিলাম। সেখানে মাঝে মাঝে আমার কিছু ভিডিও ছাড়তাম। সেগুলো নিয়ে কিছু মানুষ সমালোচনা করেছে। ভিডিওগুলো ভাইরাল হয়েছে। আমার কাছে মনে হয় এভাবেই আমাকে ঘিরে আলোচনা তৈরি হয়।
কিন্তু পরে আপনাকে ঘিরে সেই আলোচনা তো আরও বেগবান হয়েছিল।
মাঝে আমার শরীরের একটা অংশে প্লাস্টিক সার্জারি করেছি। কিন্তু আমার দেশের মানুষ তা মেনে নিতে পারেনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ঝড় উঠে গেল। আমার মনে হয়, ওটা ছিল আমার জীবনের বড় ভুল। এই বিড়ম্বনা আমি নিজেই তৈরি করেছি।
পরিবারের অনুমতি নিয়ে কাজটি করেছিলেন?
না। এ কারণে পরিবারের সবাই রাগ করেছেন। বাইরে অনেকেই আমাকে নিয়ে মজা করেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রল করেছেন। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে, যেসব ইউটিউব চ্যানেল বা রেডিওতে আমি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলাম, তারা। আমার সাক্ষাৎকারের কথা কেটে এমন অংশটুকু প্রচার করেছে, যে অংশটুকু ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। যার কারণে আমাকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা বেশি হয়েছে। মানসিকভাবে আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছি।
কেমন?
ভেতরের খবর হয়তো কেউ রাখেন না, প্রায় ছয় মাস আমাকে ঘরের মধ্যে বন্দীর মতো থাকতে হয়েছে। রাত-দিন মানুষ এসে বাসার নিচে ভিড় করত। কিছু মানুষকে ভোর পর্যন্ত বাসার নিচে এসে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছি। মানুষের অত্যাচারে দুবার বাসা বদল করেছি। ছয় মাস ঠিকমতো বাসায় থাকতে পারিনি। মামার বাসায়, ফুফুর বাসায়, আত্মীয়স্বজনের বাসায় গিয়ে থাকতে হয়েছে। বোরকা পরে চলাফেরা করেও রেহাই পাইনি।
এর আগে বলেছেন একজন সাবেক মন্ত্রী, বর্তমান সংসদ সদস্যের সঙ্গে বিয়ে করছেন। তার খবর কী, নাকি আলোচিত হওয়ার জন্য এমন কথা প্রচার করেছেন?
তা কেন হবে! বিয়ে একটা পবিত্র ব্যাপার। তা নিয়ে কেউ মিথ্যা বলে? সত্যি, আমাদের বাগদান হয়ে গেছে। বিয়ে করতে সময় নিচ্ছি। কারণ আমি যে পরিমাণ মানসিক যন্ত্রণায় আছি, এখন বিয়ে করলে দুই পরিবারই ধ্বংস হবে। আমাকে নিয়ে সবার ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে নিজেকে একটা জায়গায় নেওয়ার চেষ্টা করছি। যদি এর জন্য পাঁচ বছর সময় লাগে, তাহলে পাঁচ বছর পরই বিয়ে করব।সূত্র: প্রথম আলো
সোনালীনিউজ/এইচএন