রাষ্ট্রীয় শেষকৃত্যের মধ্যে দিয়ে ভূমিকম্পে নিহতদের শেষ বিদায় জানিয়েছে ইতালি। শনিবার নিহত প্রায় ২৯১ জনের কান্নারত স্বজনরা পরস্পরকে আলিঙ্গন করে ও কাঠের তৈরি কফিনগুলোতে স্পর্শ করে প্রিয়জনকে শেষ বিদায় জানান।
শেষকৃত্যানুষ্ঠানে নিহতদের ৩৫ জনের কফিন রাখা ছিল। ছোট একটি কফিনে ১৮ মাস বয়সী এক শিশুর লাশ, আরেকটিতে নয় বছর বয়সী এক বালিকার লাশ। বুধবার ভোররাতে দেশটির পার্বত্য মধ্যাঞ্চলে ছয় দশমিক দুই মাত্রার এক শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতদের মধ্যে ২১টি শিশু ছিল। এদের মধ্যে ওই দুজনের লাশ শেষকৃত্যানুষ্ঠানে রাখাছিল। আপনারা দুর্ভোগের জন্য শোক করতে ভয় পাবেন না, আমরা অনেক দুর্ভোগ সয়েছি। তারপরও বলছি, সাহস হারাবেন না, বলেন শেষকৃত্যানুষ্ঠান পরিচালনাকারী বিশপ গিওভান্নি ডি’এরকোলি।
একটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই শেষকৃত্যে নিহতদের স্বজনরা ছাড়াও ইতালির প্রেসিডেন্ট সের্গিও মাত্তারেল্লা এবং প্রধানমন্ত্রী মাত্তেও রেনজিসহ শীর্ষ রাজনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রীয় শেষকৃত্যানুষ্ঠানের পাশাপাশি উদ্ধারকারীরা জীবিত কাউকে খুঁজে পাওয়ার আশায় ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে তল্লাশিও অব্যাহত রেখেছিলেন। তবে ভূমিকম্পের চারদিন পর জীবিত কাউকে খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা কমে আসছে এ বিষয়টিও বিবেচনায় রেখেছিলেন তারা।
শনিবার আমাত্রিসি টাউনের ধ্বংসস্তূপ থেকে আরো নয়টি মৃতদেহ খুঁজে পাওয়া গেছে। এতে শুধু আমাত্রিসিতেই নিহতের সংখ্যা ২৩০ জনে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে স্থানীয় বাসিন্দা ছাড়াও পর্যটকও রয়েছেন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আহত ৩৮৭ জন এখনো হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এছাড়া আহতদের একজন শনিবার মারা গেছেন। এর মধ্যে আরেকজন বালিকাকে ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার গ্লোরিয়া নামের এই বালিকাটির চতুর্থ জন্মদিন ছিল। শেষকৃত্যানুষ্ঠানে ছোট যে কফিনটি রাখা ছিল তা গ্লোরিয়ার নিহত ছোট বোন গিউলিয়ার।
কর্তৃপক্ষ নিহত ১৮১ জনের নাম প্রকাশ করেছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট জনের বয়স পাঁচ মাস, আর সবচেয়ে বেশি বয়সী জনের বয়স ৯৩ বছর। নিহত ১২ জন বিদেশির মধ্যে ছয়জন রোমানীয়, তিনজন ব্রিটিশ, একজন স্পেনীয়, একজন কানাডীয় এবং একজন আলবেনীয়।
সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই