ঢাকা: সমুদ্র বাণিজ্যর উপর নির্ভরশীল চীনের অর্থনীতি। সেই সঙ্গে প্রতিরক্ষা ও ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব বাড়তে বাড়াতে চীনা নৌবাহিনী প্রায়ই দূর সমুদ্রে মহড়া পরিচালনা করে আসছে। সক্ষমতা অর্জনে দিন দিন তা বাড়িয়েই চলছে। সম্প্রতি চীনা নৌবাহিনী সোমালিয়া উপকূলে আন্তর্জাতিক জলদস্যুবিরোধী টহলেও যোগ দিয়েছে। সামরিক বাহিনী বিশেষ করে নৌবাহিনীকে আধুনিকায়ন করার একটি উচ্চাভিলাষী কর্মসূচিতে কয়েক হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে চীন। এই মহড়া অব্যাহত রাখতে বৈশ্বিক কোন চাপ বা উসকানিকে মূল্য দেবে না দেশটি।
এমন খবরই জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম পিপলস ডেইলি।
লিয়াওনিংয়ের এ পরিক্রমার পর চলতি মাসের শুরুতে তাইওয়ান যুদ্ধবিমান ও নৌবাহিনীর জাহাজ একত্র করে। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মনোনীত পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন দক্ষিণ চীন সাগরে দেশটির প্রবেশাধিকার প্রত্যাখ্যান করা হতে পারে মন্তব্য করার পর চীন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে। টিলারসনের এ মন্তব্যের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে পিপলস ডেইলি। প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, টিলারসনের দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে মন্তব্যের মতো কোনো ‘কথার বোমাই’ চীনের সামরিক মহড়া বন্ধ করতে পারবে না।
সংবাদপত্রটির ভাষ্যমতে, এসব উসকানি, চাপ, কল্পনা ও অতিরঞ্জন চীনের স্বাভাবিক সামরিক মহড়া প্রতিরোধ করতে পারবে না। সংবাদপত্রটি আরো জানায়, এ অঞ্চলের বাইরের দেশগুলোর হস্তক্ষেপ এবং তাদের সৃষ্ট বিভিন্ন বিচ্যুতি, এ অঞ্চল ও বিশ্বের সঙ্গে সাধারণ স্বার্থের যে ঐকমত্য রয়েছে তার পরিপন্থী হবে। এখন থেকে চীনের সামরিক মহড়া স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়াবে।
২০১৫ সালে পাঁচটি চীনা জাহাজ যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় বেরিং সাগরের আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমায় অনুশীলন পরিচালনা করে।
সামরিক মহড়া চালানো অব্যাহত রাখার পাশাপাশি দূর সমুদ্রে চীনের একমাত্র এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ারের মহড়া স্বাভাবিকভাবে চলবে বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদপত্র পিপলস ডেইলি। এদিকে গত মাসে চীনের ক্যারিয়ার ‘দ্য লিয়াওনিং’ বেশকিছু যুদ্ধবিমান সহকারে স্বশাসিত তাইওয়ান ও প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে পরিভ্রমণ করে। ক্যারিয়ারটি এ পরিক্রমাকে নিয়মিত মহড়া বলে দাবি করেছে চীন। তবে চীনের এ আচরণ প্রতিবেশি কয়েকটি দেশের অস্বস্তি বাড়িয়ে তুলেছে।
নৌবাহিনীর অনুশীলন সম্পর্কে চীন জানায়, বাণিজ্যপথ সুরক্ষা করতে দেশের ‘ব্লু ওয়াটার’ সক্ষমতা বিকাশের আইনসঙ্গত প্রয়োজন রয়েছে। বিশেষ করে চীনের অর্থনীতি এই বাণিজ্যপথের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায়। একই সঙ্গে বিদেশী নাগরিকদের স্বার্থ রক্ষা এবং বিশ্বের প্রতি নিজের দায়িত্ব তুলে ধরার জন্যও চীনের নৌ-সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে বলে দেশটি জানায়। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে চীনা সামরিক বাহিনী প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক সংকটে অন্য দেশকে সহায়তা করে। সে সময় চীনের একটি রণতরী সংঘাতময় ইয়েমেন থেকে বিদেশী নাগরিকদের সরিয়ে আনতে সাহায্য করে।
সোনালীনিউজ/আতা