এবারের নির্বাচনে ভারতের ভূমিকা রহস্যজনক?

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৮, ২০১৮, ১০:২১ পিএম

ভোটের মাত্র একদিন বাকি। প্রতিবার জাতীয় সংসদ নির্বাচন এলেই ভারতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কারণ স্বাধীনতার পর থেকে প্রতিটি নির্বাচনেই ভারতের প্রত্যাক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা ছিল। তবে এবারের নির্বাচনে ভারতের ভূমিকাটি রহস্যজনক বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকগণ।

স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ভারতের অবস্থান বিবেচনা করলে দেখা যায় যে তারা আওয়ামী লীগকেই সমর্থন করে আসছে। ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যমের খবর বিশ্লেষণ করে দেখা যায়- ভারত ২০০৮ সালের নির্বাচনে প্রথম সরাসরি আওয়ামী লীগের পক্ষে অবস্থান নেয়। বিষয়টি আরো পরিষ্কার হয় ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারির প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে। সে সময় ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বাংলাদেশ সফরে এসে শেখ হাসিনা সরকারে সমর্থন করেন।

তবে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভারতের সেই অবস্থান দেখা যাচ্ছে না। তবে ভারতের একাধিক কূটনীতিকরা বলেছেন, তখন (২০১৪ সাল) ছিল এক অবস্থা, আওয়ামী লীগ ততটা শক্তভাবে দাঁড়িয়েছিল না। আর এখন সেই অবস্থানের পরিবর্তন হয়েছে। এখন দুই প্রধান দল ভারতের পক্ষে আছে। 

শুক্রবার ভারতের ইংরেজি দৈনিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়, এবারের নির্বাচনী প্রচারে বরাবরের মতো ‘ভারত ইস্যু’ দেখা যায়নি। অথচ অতীতে বাংলাদেশের নির্বাচনের আগে আগে ভারতকে টেনে আনার ‘বাহুল্য’ ছিল।

যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপের মতো পশ্চিমা দেশগুলোর মতো নয়, ভারত শুধু ‘অবাধ ও সুষ্ঠু’ নির্বাচন চাওয়া ছাড়া কোনো বক্তব্য দেয়নি। ভারতের একজন কূটনীতিক বলেন, এটা খুবই চমকপ্রদ যে নির্বাচনী প্রচারের সময় দুটি প্রধান দল ভারতের কথা উল্লেখ করেনি। 

তবে সাউথ এশিয়ান মনিটরকে দেয়া এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে ড. কামাল হোসেন আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে ভারত সমর্থন দেয়া অব্যাহত রাখলে বাংলাদেশের গণতন্ত্রায়ণ প্রক্রিয়া ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় নিয়ে আসবে ভারত।’

ড. কামালের এমন বক্তব্যে প্রতিয়মান হয় যে একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ভারতের অবস্থান রহস্যজনক। দেশটি বিগত দিনের মত প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিলেও এবার বিষয়টি গোপনেই সারতে চায়!

বিষয়টি আরও পরিষ্কার হয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ার পর থেকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো ভূমিকা দেখে। তাদের প্রতিবেদনে প্রতিনিয়তই উঠে এসেছে আওয়ামী লীগ সরকারের গেলো দুই দফা ক্ষমতার সময়ের উন্নয়ন, ভারত আওয়ামী লীগের সম্পর্ক এবং বিএনপির দুর্নীতি ও রাজনৈতিক আন্দোলনের সময়ের সহিংসতার বিষয়। এখানেই শেষ নয় মাঝে মধ্যেই বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে রেল লাইন নির্মাণ, গ্যাস লাইন নেয়াসহ নানা দাবি দাওয়ার কথাও মনেকরে দিয়েছে বাংলাদেশের রাজনীতিকদের।

গতকালও বাংলাদেশের তিন বছর দায়িত্বপালন করা বিদায়ী ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা ঢাকায় এক অনুষ্ঠানেও ভারত ও আওয়ামী লীগ সরকারের সম্পর্কের উন্নয়নের কথা তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে ভারত বরাবরই গুরুত্ব দেয়। গত তিন বছরে দুই দেশের উদ্বেগের জায়গাগুলো নিরসনে সাফল্য এসেছে। ভিসা পদ্ধতি সহজীকরণ, বিশ্বে সবচেয়ে বড় ভিসা কেন্দ্র হিসেবে ঢাকায় ভারতীয় ভিসা কেন্দ্র স্থাপন, রেকর্ডসংখ্যক ৯৩টি চুক্তি স্বাক্ষরের মতো সাফল্য রয়েছে। বাংলাদেশে নেয়া ভারতের উন্নয়ন প্রকল্পের বেশির ভাগ কাজ শেষ করা হয়েছে।’

সোনালীনিউজ/এআই