ঢাকা: সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আপনারা অতীতের আমলাতান্ত্রিক মনোভাব ছেড়ে জনগণের খেদমতের জন্য নিজেদের মানসিকতা তৈরি করুন। কারণ জাতীয় স্বার্থকে সবকিছুর ঊর্ধ্বে স্থান দিতে হবে। এজন্য জনগণের সেবার জন্য নিজেদের উৎসর্গ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমির ৯৮ ও ৯৯তম আইন ও প্রশাসন কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্ত্যেবে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে, এজন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের দক্ষতার ওপর আমাদের গুরুত্বারোপ করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা যেন আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারি, সেই উদ্ভাবনী চিন্তা-ভাবনা আমাদের মধ্যে থাকতে হবে।
নবীন সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, নিজস্ব উদ্ভাবনী চিন্তা দিয়ে এলাকার জনগণকে সম্পৃক্ত করে কাজ করবেন। আপনারা যখন যে এলাকায় কাজ করবেন, সে এলাকাকে নিজের এলাকা মনে করে কাজ করবেন।
একটি দেশকে গড়ে তুলতে যারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করবেন তাদের প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই চিন্তা মাথায় রেখেই বর্তমান সরকার বিভিন্ন দেশে উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন। যাতে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান দেশ গড়ার কাজে লাগাতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের যে সম্পদ আছে, সেই সম্পদ নিয়েই আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব। আর সেই সক্ষমতাও আমাদের আছে, এই আত্মবিশ্বাস সবার মধ্যে ধারণ করে দেশকে সামনের দিকে এড়িয়ে নিয়ে যেতে হবে।
শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, শিক্ষা ছাড়া কখনো দেশ ও জাতির উন্নয়ন সম্ভব না। একমাত্র শিক্ষাই পারে এদেশের দারিদ্রতা দূর করে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিতে।
তিনি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার পাশাপাশি জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসরোধে ভূমিকা রাখতে প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশে নতুন উৎপাত সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ শুরু হয়েছে। যে কোন মূল্যে বাংলাদেশ থেকে এই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দূর করতে হবে। এজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, কোনভাবেই যেন বাংলার মাটিতে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে তিনি জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ওই সময় ‘অতিদ্রুত’ কিছু পদক্ষেপ নেয়ায় আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের চাকা আবার সচল হতে শুরু করে।
এরপর ২০০৮ সালে সরকার গঠন করে গত আট বছরে দেশের আর্থ-সামাজিক, অবকাঠামোসহ বিভিন্ন খাতের উন্নয়ন এবং চলমান বড় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের অগ্রগতির তথ্য তুলে ধরেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের উন্নয়নের মূল লক্ষ্য হচ্ছে গ্রাম। গ্রামের অর্থনীতিকে আমাদের আরও শক্তিশালী, আরও উন্নত করতে হবে। গ্রামের দারিদ্র্য বিমোচন করতে হবে। সেই লক্ষ্য নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি ও অবকাঠামো উন্নয়ন আমরা করে যাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদিক। স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির রেক্টর এম আসলাম আলম। এসময় প্রধানমন্ত্রী নবীন কর্মকর্তাদের মধ্যে রেক্টর অ্যাওয়ার্ড বিতরণ করেন।
সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম