চট্টগ্রাম : শান্তিকামী জাতি হলেও আত্মরক্ষা এবং স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ আপসহীন বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
রোববার (৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ নেভাল একাডেমিতে শীতকালীন রাষ্ট্রপতির কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। গতকাল মিডশিপম্যান-২০১৬ এবং ডিইও (ডিরেক্ট এন্ট্রি অফিসার) ২০১৮/বি ব্যাচের কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে মো. আবদুল হামিদ বলেন, আমাদের পররাষ্ট্র নীতি সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়। আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ চাই না। আমরা শান্তিকামী জাতি। আমরা সবার সাথে বন্ধুত্ব চাই। কিন্তু আত্মরক্ষার্থে এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখতে আমরা আপসহীন। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নৌবাহিনীর প্রতিটি সদস্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে কখনো পিছ-পা হবে না।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তোলার জন্য একটি যুগোপযোগী নেভাল একাডেমি প্রতিষ্ঠা ছিল বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্ন। জাতির পিতার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ‘বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স’ নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে অধিক সংখ্যক দেশি-বিদেশি প্রশিক্ষণার্থীকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ প্রদান এবং অপার সম্ভাবনাময় ব্লুইকোনমি বা সুনীল অর্থনীতির পূর্ণাঙ্গ সুবিধা আহরণের ক্ষেত্রেও সুযোগ সৃষ্টি হবে।’
তিনি বলেন, সমুদ্র অঞ্চলের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে এবং সমুদ্র সম্পদ রক্ষার্থে একটি দক্ষ ও চৌকস নৌবাহিনীর বিকল্প নেই। এ লক্ষ্যে জাতির পিতার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতির পিতা প্রণীত প্রতিরক্ষা নীতির আলোকে গৃহীত হয়েছে ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’। এই মহাপরিকল্পনার আলোকে বর্তমান সরকারের উদ্যোগে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে অত্যাধুনিক ফ্রিগেট ও করভেটসহ মোট ২৭টি যুদ্ধজাহাজ সংযোজিত হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ২০১১ সালে সংযোজিত নেভাল এভিয়েশন, স্পেশাল ওয়ার ফেয়ার ডাইভিং এবং স্যালভেজ কমান্ড বা ‘কমসোয়াডস’ এ বাহিনীর সক্ষমতাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। সর্বোপরি ২০১৭ সালে নৌবহরে যুক্ত হওয়া দু’টি সাবমেরিন আমাদের প্রিয় নৌবাহিনীকে সত্যিকারের একটি পূর্ণাঙ্গ ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
তিনি বলেন, নৌবাহিনী শক্তিশালী বাহিনী হিসেবে দেশের সমুদ্র জলসীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নিজেদের ভাবমূর্তি আরও সমুন্নত রাখতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।
এ কুচকাওয়াজের মধ্য দিয়ে নৌবাহিনীর ২০১৬ ব্যাচের ৫৯জন মিডশিপম্যান এবং ২০১৮ ব্যাচের সাতজনসহ ৬৬ জন নবীন অফিসার কমিশন লাভ করেন। এদের মধ্যে চারজন নারী, একজন মালদ্বীপ ও একজন শ্রীলংকার নাগরিক রয়েছেন।
সোনালীনিউজ/এমটিআই