ছাত্রদলের শীর্ষ পদ পেতে ৭৬ জনের লড়াই

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ২০, ২০১৯, ০৭:৫৬ পিএম

ঢাকা: জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের শীর্ষ নেতৃত্ব সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হতে চান মোট ৭৬ জন নেতা। বিএনপির অন্যতম সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ পদ পেতে এরমধ্যে সভাপতি পদে ২৭ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ৪৯ জন নিজেদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) মনোনয়নপত্র জমা দেবার শেষ দিনে এই দুই পদে মোট ৭৬টি ফরম জমা পড়ে।

নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কাছে ফরমসহ কাগজপত্র জমা দেয় প্রার্থীরা। মনোনয়নপত্র জমা দেবার সময়ে প্রার্থী সাথে আসা কর্মী-সমর্থক শিক্ষার্ধীদের ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই, মুক্তি চাই’ শ্লোগানে মুখর ছিলো নয়াপল্টন এলাকা।

এর আগে গত ১৭ ও ১৮ আগস্ট সভাপতি পদে ৪২ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ৭০ জন মনোনয়ন ইচ্ছুক প্রার্থী ফরম কিনেন। ১‘শ টাকা মুল্যমানে এই ফরম ক্রয় করেন তারা। 
সাধারণ সম্পাদক পদে তিনজন নারী প্রার্থী ফরম কিনে ছিলেন। তাদের মধ্যে দুজন বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের নাদিয়া পাঠান পাপন ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ডালিয়া রহমান সংগৃহিত মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। 

এদিকে, আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর এই দুই পদের নেতা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে যাতে সারাদেশের ছাত্রদলের ১১৭টি সাংগঠনিক ইউনিটের ৫৮০ জন কাউন্সিলর ভোট দেবেন। মনোনয়নপত্র জমার বিষয়টি জানিয়ে ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির সাবেক দফরত সম্পাদক আবদুস সাত্তার পাটোয়ারি। 

তিনি বলেন, সর্বমোট ৭৬ টি ফরম জমা পড়েছে। বিক্রি হয়েছিলো ১১০টি। আগামীকাল বুধবার থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত পাঁচ দিন জমাকৃত মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করবেন  বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফজলুল হক মিলনের নেতৃত্বে বাছাই কমিটি।

তিনি আরো জানান, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৩১ আগস্ট। প্রার্থীর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হবে ২ সেপ্টেম্বর। প্রার্থীদের প্রচারনা ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ সেপ্টেম্বর মধ্য রাত পর্যন্ত। তফসিল অনুযায়ী প্রার্থীরা আগামী ১৩ জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত ভোটের প্রচারনা চালাতে পারবেন। আগামী ৪ জুলাই প্রার্থীদের খসড়া তালিকা প্রকাশ, তালিকার ওপর আপত্তি ও নিষ্পত্তি ৫ ও ৬ জুলাই এবং চূড়ান্ত তালিকা ৭ জুলাই প্রকাশ করা হবে।

ছাত্রদলের শীর্ষ নেতৃত্ব নির্বাচন সুষ্ঠভাবে পরিচালনার জন্য সাবেক ছাত্রদল নেতা, ডাকসুর সাবেক জিএস খায়রুল কবির খোকনের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফজলুল হক মিলনের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের বাছাই কমিটি ও সাবেক সভাপতি শামসুজ্জামান দুদুর নেতৃত্বে ৩ সদস্যের আপীল কমিটি গঠন করেছে বিএনপি। ছাত্রদলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচনে প্রার্থী হতে ইচ্ছুকদের অবশ্যই ২০০০ সালে এসএসসি অথবা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে বলে শর্ত দিয়েছে বিএনপির হাইকমান্ড। 

এছাড়া, প্রার্থীদের অবশ্যই অবিবাহিত হওয়াও অন্যতম শর্ত।   ছাত্রত্বর প্রমাণ হিসেবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রমাণপত্র অবশ্যই প্রার্থীদেরকে মনোনয়ন পত্রের সঙ্গে দাখিল করতে হবে। প্রার্থীকে ন্যুনতম স্নাতক পাশ হতে হবে এবং পাশের সার্টিফিকেটের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে। প্রমাণের জন্য সকল সার্টিফিকেটের মূল কপি প্রার্থীদেরকে নিয়ে আনতে হবে।

উল্লেখ্য, গত ৩ জুন বিএনপি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দেয়। এরপর আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে কাউন্সিলের মাধ্যমে প্রত্যক্ষভোটে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করার সিদ্ধান্ত হয়। বয়সসীমা উঠিয়ে দেয়ার প্রতিবাদে গত ১০ জুলাই থেকে ছাত্র দলের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের আন্দোলন এবং পরবর্তিতে তাদের ১২ নেতাকে সংগঠনের শৃঙ্খলা বিরোধী কার্যক্রমের অভিযোগ বহিস্কারের পর নির্বাচন পরিচালনা কমিটি এই পূণ:তফসিল ঘোষণা করলো। 

ছাত্রদলের কমিটি গঠন হয়েছিলো ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর। ওই কমিটিতে সভাপতি হিসেবে রাজীব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আকরামুল হাসানকে নির্বাচিত করা হয়। রাজীব-আকরামের নেতৃত্বে ১৫৩ সদস্যের আংশিক কমিটি গঠন করা পর দীর্ঘদিন পরে এই কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়, পরে দেশের সব সংগঠনের রেকর্ড ভঙ্গ করে ৭৩৬ জনের ঢাউস সাইজের দেয়া হয়েছিলো।
 
রিজভীর স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্রদলের অনুষ্ঠিতব্য কাউন্সিলে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা নির্ধারণ করে দেয়া হয়।
এগুলো হচ্ছে, এক.প্রার্থীদের জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রাথমিক সদস্য হতে হবে, দুই. অবশ্যই বাংলাদেশে অবস্থিত কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র হতে হবে এবং তিন.কেবলমাত্র ২০০০ সাল থেকে পরবর্তীতে যেকোন বছরে এসএসসি/সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণহতে হবে।

সভাপতি পদে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া ছাত্রদল নেতার হলেন, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবন, আজিম উদ্দিন মেরাজ, মো. ইলিয়াস, হাফিজুর রহমান হাফিজ, মো. মামুন খান,  সাজিদ হাসান বাবু, আল মেহেদি তালুকদার, মাহমুদুল হাসান বাপ্পি, তানভীর রেজা রুবেল, মো. এরশাদ খান, এবিএম মাহমুদ আলম, মো. আসাদুল আলম টিটু, এম আরজ আলী শান্ত, মো. সুরুজ মন্ডল, মো. আবদুল মাজেদ, মাইনুল ইসলাম, মো. ফজলুর রহমান, আশরাফুল আলম ফকির লিংকন, মুহাম্মদ ফজলুল হক নিরব, আরাফাত বিল্লাহ খান, এসএম আল আমিন, মো. জুয়েল মৃধা, আবদুল হান্নান, মো. শামীম হোসেন, এসএএম আমিরুল ইসলাম, সুলায়মান হোসাইন ও আল আমিন কাউছার।

সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র জমানেতার হলেন, মো. জোবায়ের আল মাহমুদ রিজভী, রিয়াজ মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন, মো. ওমর ফারুক শাকিল চৌধুরী, সিরাজুল ইসলাম, সাজ্জাদ হোসেন রুবেল, সাইফ মাহমুদ জুয়েল হাওলাদার, আবদুল মান্নান, নাদিয়া পাঠান পাপন, এবিএম বাকির জুয়েল, মিজানুর রহমান শরীফ, মো. ওমর ফারুক, মো. হাসান(তানজিল হাসান), মো. আলাউদ্দিন খান, রাশেদ ইকবাল খান, আমিনুর রহমান, ইকবাল হাসান শ্যামল, ইমদাদুল হক মজুমদার, মো. নাইম হাসান, কেএম সাখাওয়াত হোসেন, শাহনেওয়াজ, এএএম ইয়াহইয়া, ডালিয়া রহমান, সোহেল রানা, মোহাম্মদ কারীমুল হাই নাঈম, মো. মহিনউদ্দীন রাজু, আরিফুল হক, মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব, মোস্তাফিজুর রহমান, মো. আসাদুজ্জামান রিংকু, মো. আবুল বাশার, মো. মিজানুর রহমান সজীব, মো. জুলহাস উদ্দিন, মো. মিজানুর রহমান, মো. জাকিরুল ইসলাম জাকির, সাদিকুর রহমান সাদিক, আবদুল মোমেন মিয়া, কাজী মাজাহারুল ইসলাম, মো. আজিজুল হক সোহেল, শেখ মো. মশিউর, মো. জামিল হোসেন, শেখ আবু তাহের, মো. তবিবুর রহমান সাগর, মাজেদুল ইসলাম, মাহমুদুল আলম শাহিন, নাজমুল হক হাবীব, মো. জহিরুল ইসলাম (দিপু পাটোয়ারি), আনিসুর রহমান সুমন, এমএম বাবুল আক্তার শান্ত ও মুন্সি আনিসুর রহমান।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ