ঢাকা : খালেদার জিয়ার মুক্তি নিয়ে সংসদে যোগ দেওয়ার বিষয়ে দরকষাকষি করা বাজে দৃষ্টান্ত বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ। তিনি বলেন, ‘কারও মুক্তির জন্য জনগণ প্রার্থীদের ভোট দেয়নি।’
শনিবার (২০ এপ্রিল) ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
হানিফে বলেন, ‘আমাদের করা বিধান অনুযায়ী একেবারে সুনির্দিষ্টভাবে আছে যদি কোনো দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদি বা তার যদি কোনো নিকটস্থ স্বজন ইন্তেকাল করেন। তবে তার শেষকৃত্যের জন্য তাকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়। আর যদি কোনো দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গুরুতর অসুস্থ হন এবং সেই অসুস্থতার চিৎকিসায় দেশের বাইরে নেওয়ার প্রয়োজন হয়, তখন সেই ক্ষেত্রে প্যারোলের আবেদন বিবেচিত হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘বেগম জিয়ার পক্ষ থেকে বা বিএনপির পক্ষ থেকে প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে এখন অব্দি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে বলে জানা নেই। তবে সাংবাদিকদের কথার পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, যদি বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে বা বিএনপির পক্ষ থেকে আবেদন করা হয় তবে সেটা বিবেচনা করা হবে।’
আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, ‘জাতীয় সংসদে যারা নির্বাচিত হয়েছেন তাদের সংসদে যাওয়া না যাওয়া এটা কোনো দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদির মুক্তির বা জামিনের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে না। জাতীয় সংসদে নির্বাচিত একজন সংসদ সদস্যের নৈতিক দায়িত্ব হচ্ছে তার সংসদে যাওয়া।’
হানিফ বলেন, ‘যে ভোটাররা তাকে ভোট দিয়েছেন সেই ভোটারদের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে তাকে সংসদে যাওয়া উচিত। সেই ভোটারদের পক্ষে কথা বলা, সেই ভোটারদের এলাকার উন্নয়নের জন্য, এলাকার সমস্যা দূর করার জন্য এবং জাতীয় পর্যায়ে আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রেও ভূমিকার জন্যই কিন্তু তাকে ভোটাররা তাকে ভোট দিয়েছেন। নিশ্চয়ই কোনো ভোটাররা কাউকে মুক্তির জন্য কোনো দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদির মুক্তির জন্য তাকে ভোট দেয়নি। যে এটা নিয়ে দরকষাকষি করে সংসদে যাবে কি যাবে না এ রকম সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনো ভোটাররা ভোট দেয়নি।’
হানিফ বরেন, ‘আমি মনে করি যারা বেগম খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে এই জাতীয় সংসদে শপথ নেওয়া না নেওয়া নিয়ে দরকষাকষি করছেন, এটা একটা বাজে দৃষ্টান্ত হয়ে বাংলাদেশে থাকবে। এই ধরনের রাজনীতি বাংলাদেশের জনগণের জন্য কাম্য নয়।’
ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফির মৃত্যুতে উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তারের পর তার বিরুদ্ধে কোন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সব সময় আইনের শাসনে বিশ্বাসী। আওয়ামী লীগ জনগণের দল। আওয়ামী লীগ কোন অপরাধে কে প্রশ্রয় দিতে পারে না যে কোন মানুষের এই চলার পথে জীবনে ভুল ত্রুটি থাকতে পারে যে আইনের চোখে অপরাধী তাদের কে আমরা অপরাধী হিসেবে বিবেচনা করবো কেউ যদি অপরাধী হিসেবে প্রমাণিত হয় তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে যারা কাজ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, বিভিন্ন উপজেলা থেকে আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। সে অভিযোগগুলো ঢালাওভাবে এসেছে। এই অভিযোগগুলো আমরা খতিয়ে দেখছি অভিযোগগুলোর কতটুকু সত্য তা আছে কারো বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ যদি প্রমাণিত হয় তখন তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা পদক্ষেপ নিতে পারব।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আফজাল হোসেন, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যরিষ্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য এসএম কামাল হোসেন, ইকবাল হোসেন অপু প্রমুখ।
সোনালীনিউজ/এমটিআই