ঢাকা : আগামী সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা। এতে দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ আকার নিতে পারে। প্রতিরোধ করা না গেলে রূপ নিতে পারে মহামারিতেও। বিশেষ করে ডেঙ্গু নিয়ে জনসচেনতামূলক কর্মসূচি বাড়ানোর জন্য সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
দেশে সাধারণত সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা যায় বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি হেলথ) অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ।
তিনি বলেন, তবে এবার ডেঙ্গু আগেই চলে এসেছে। ফলে রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে। এসব কারণে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ডেঙ্গু পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
তিনি আরো জানান, সরকারের অন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। আমরা জনসচেনতার ওপর জোর দিচ্ছি সবচেয়ে বেশি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহ জানান, বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর বিস্তার সবচেয়ে বেশি হয়। যেসব স্থানে পানি জমে থাকে এডিস মশা, সেসব স্থানে প্রজনন করে। চক্রাকারে প্রজাতির বিস্তার ঘটায়। আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাস ডেঙ্গু বিস্তারের সবচেয়ে উপযোগী সময়। কারণ এ সময় থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হয়। আর জমে থাকা পানিতে এডিস মশা বংশবিস্তারের সুযোগ তৈরি হয়। তাই আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমাদের ভয় বেশি। প্রতিরোধ করা না গেলে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে আগাম সতর্কতার কথা বলা হলেও সিটি করপোরেশনসহ অন্য সংস্থাগুলো এসব আমলে নেয়নি। যে কারণে এবার ডেঙ্গু পরিস্থিতিও প্রায় মহামারি আকার ধারণ করেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. সানিয়া তহমিনা বলেছেন, চলতি বছরের মার্চে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে এবার ডেঙ্গু আউটব্রেক হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছিল।
সোমবার (২৯ জুলাই) সকালে ডেঙ্গু নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
ডা. সানিয়া তহমিনা বলেন, জানুয়ারিতে আমরা পুরো ঢাকায় জরিপ করেছিলাম। ওই সময় এডিস মশার লার্ভা এবং কোথাও কোথাও অ্যাডাল্ট এডিস মশা দেখা গিয়েছিল। সে জন্য মার্চে সিটি করপোরেশনকে জানানো হয়েছিল।
২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে : সোমবার (২৯ জুলাই) সকাল ৮টা পর্যন্ত্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৯৬ জন। এ নিয়ে এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১৩ হাজার ৬৩৭ জনে। ২০০০ সালে প্রথম ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের পর থেকে এ সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের হিসাব থেকে জানা যায়, ঢাকার ১৩টি সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত ৩৬টি বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ভর্তি আছেন ৩ হাজার ৮৪৭ জন। আর বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে গত ২৪ ঘণ্টায় রোগী ভর্তি হয়েছেন ২৬৫ জন। এসব হাসপাতালে এখন রোগী ভর্তি আছেন ১ হাজার ২০৭ জন। আর এরই মধ্যে চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র নিয়েছেন ৪ হাজার ৪০৪ জন রোগী।
ঢাকার বাইরেও আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। কন্ট্রোল রুমের হিসাব থেকে জানা গেছে, ঢাকার বাইরে এ পর্যন্ত ১ হাজার ২৮৩ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৫৩১ জন।
বিভিন্ন মাধ্যমে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৪৬ জনের মৃত্যুর খবর দেওয়া হলেও সরকারি হিসাবে এ সংখ্যা ৮।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিগত বছরগুলোতে আগস্ট-সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি দেখা গেছে। কারণ ওই দুই মাসে বৃষ্টি বেশি হয়। বর্ষায় এডিস মশার প্রজনন ক্ষমতা চক্রাকার হারে বাড়ে। আর থেমে থেমে বৃষ্টি হলে নালা-নর্দমায় জমে থাকা পানিতে এডিস মশা বংশবিস্তারের সুযোগও পায় বেশি। কিন্তু এবার বর্ষা আগে আসার কারণে জুলাইয়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দিয়েছে। সেপ্টেম্বর নাগাদ এই প্রাদুর্ভাব আরো ছড়িয়ে পড়তে পারে।
মশা মারার বরাদ্দই নেই ঢাকার ৩৬ ওয়ার্ডে : ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের বাজেটে নতুন করে যুক্ত ৩৬টি ওয়ার্ডের মশক নিধনে কোনো কার্যক্রম নেই। মশা মারার জন্য কোনো অর্থ বরাদ্দ নেই; তাই নেই জনবল, যন্ত্রপাতিও। ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার পর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ওয়ার্ডগুলোতে কিছু যন্ত্রপাতি ও অস্থায়ী লোকবল নিয়োগ দিলেও তাকে প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলছেন কাউন্সিলররা। আর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নতুন ১৮টি ওয়ার্ডে তা-ও নেই।
২০১৭ সালের ২৭ জুলাই রাজধানী লাগোয়া বাড্ডা, ভাটারা, সাতারকুল, বেরাঈদ, ডুমনি, উত্তরখান, দক্ষিণখান, হরিরামপুর, শ্যামপুর, দনিয়া, মাতুয়াইল, সারুলিয়া, ডেমরা, মান্ডা, দক্ষিণগাঁও ও নাসিরাবাদসহ ১৬টি ইউনিয়নকে ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনে যুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করে সরকার। নতুন যুক্ত ইউনিয়নের এলাকাগুলো নিয়ে দুই করপোরেশনে আরো ৩৬টি ওয়ার্ড করা হয়। ২৯ বর্গকিলোমিটার আয়তনের সিটি করপোরেশন বেড়ে ২৭০ বর্গকিলোমিটার হয়।
জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মশক নিধন খাতে ২৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখে ডিএসসিসি। অন্যদিকে ডিএনসিসির বরাদ্দ ২১ কোটি টাকা। তবে এই অর্থ পুরোনো ওয়ার্ডগুলোর জন্য।
ডিএসসিসির মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ও ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তবে তারা জানান, আগামী অর্থবছরে নতুন ওয়ার্ডের মশক নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রাখা হবে। গত বছরের বাজেটে নতুন ওয়ার্ডগুলোর জন্য কোনো বরাদ্দ ছিল না। ফলে পুরোনো ওয়ার্ডের বরাদ্দ থেকেই নতুন ওয়ার্ডে মশা মারার কাজ চালানো হচ্ছে।
রাবি প্রতিনিধি জানান, সারা দেশে মহামারি আকার ধারণ করা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। ফলে আতঙ্কে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ শিক্ষার্থী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। প্রকোপ মোকাবেলায় বিশ্ববিদ্যালয় অভ্যন্তরের ড্রেন পরিষ্কারসহ কার্যকর ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি জানান, পাহাড়ি জনপদ খাগড়াছড়িতেও ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। সোমবার (২৯ জুলাই) সকাল পর্যন্ত খাগড়াছড়ি সদর আধুনিক হাসপাতালে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে চারজন ভর্তি হয়েছেন।
আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার নয়ন ময় ত্রিপুরা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ডেঙ্গু আক্রান্ত চার রোগী ভর্তি হয়েছেন। তারা ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে খাগড়াছড়ি এসেছে। এর মধ্যে দুজন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্থ হয়ে বাসায় ফিরে গেছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরো দুজনকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তারা শঙ্কামুক্ত।
তবে রোগীর অভিভাবকদের অভিযোগ হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় ডায়াগনস্টিক সেন্টারে শুধু একটি পরীক্ষার জন্য দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে।
আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি জানান, বগুড়ার আদমদীঘিতে সাজেদুর রহমান সাজু (৩৫) নামে এক গাড়িচালক ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে সোমবার ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। ২-৩ দিন আগে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিলে তাকে ঢাকা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে মারা যান সাজু।
বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, বাগেরহাটে চারজন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীকে শনাক্ত করা হয়েছে। তারা বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এর মধ্যে একজন ছাড়া অন্য তিনজন চিকিৎসা শেষে বাড়িতে চলে গেছেন। গত সোমবার সকালে বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. জি কে এম সামসুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সোমবার সকাল পর্যন্ত এ হাসপাতালে ৫৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হন। এদের মধ্যে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ২০ জন। এদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় একজনকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। বিশেষ কর্নার করে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে কর্তৃপক্ষ।
রংপুর ব্যুরো জানায়, গতকাল সোমবার সকালে রংপুর মহানগরীর ১নং এমপি চেকপোস্টের শ্যামা সুন্দরী ক্যানেলে মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কাজের উদ্বোধন করেছেন রংপুর সিটি করপোরেশন মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।
এ সময় তিনি বলেন, রংপুর মহানগরীতে বর্তমানে এডিস মশা কিংবা ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছুই নেই। কোনোভাবেই যাতে এই মশা বিস্তার লাভ করতে না পারে সে জন্য আমরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছি। এরই মধ্যে মশা নিধনে কাজ শুরু করে দিয়েছি আমরা।
বেড়া (পাবনা) প্রতিনিধি জানান, ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে বেড়া পৌরসভার মৈত্র বাঁধা মহল্লার মৃত বাতেন শেখের ছেলে আলম শেখ (৪০) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকার তেজগাঁও এলাকায় সেলুনে কর্মরত আলম এক সপ্তাহ আগে জ্বরে আক্রান্ত হন এবং হাসপাতালে না গিয়ে ঢাকার বাসায় চিকিৎসা নিতে থাকেন। গত রোববার দুপুরে তিনি মারা যান। গতকাল তার মরদেহ ঢাকা থেকে বেড়ায় এনে দাফন করা হয়।
জামালপুর প্রতিনিধি জানান, জামালপুরে নতুন করে ১৪ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। ১১ জনকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া দুজনকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল ও ময়মনসিংহ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মাদারীপুর প্রতিনিধি জানান, মাদারীপুরে ডেঙ্গুজ্বরে ১৩ রোগী আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদের প্রত্যেককে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে ঢাকা ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাদারীপুরের সিভিল সার্জন মো. শফিকুল ইসলাম।
মাগুরা প্রতিনিধি জানান, মাগুরায় সরকারি হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে প্রতিদিনই জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়লেও সেখানে সরাসরি ডেঙ্গু রোগী শনাক্তকরণের কোনো সুযোগ নেই। স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ এবং হাসপাতালের পক্ষ থেকে জীবাণু পরীক্ষার কিটের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট বিভাগে আবেদন করা হলেও এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে।
গত এক সপ্তাহে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৫৬ জন। কিন্তু কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত কি না কিট না থাকায় তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি জানান, টাঙ্গাইলে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ২৫ জন টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
সোনালীনিউজ/এমটিআই