ঢাকা : মাহিন্দ্র সিং পেশায় কৃষক। ভারতের রাজস্থান রাজ্যের ঝুনঝুনু গ্রামের বাসিন্দা তিনি। দীর্ঘদিন প্রবাস জীবন কাটিয়ে তিনি বর্তমানে কৃষিকাজে মন দিয়েছেন। মাহিন্দ্র যখন বিদেশে আসা-যাওয়ার মধ্যে ছিলেন তখন তার মেয়ে রিনা সিং প্রায়ই তার কাছে উড়োজাহাজে ওঠার বায়না ধরত। আবদারের সুরে ছোট্ট রিনা বলত- বাবা তুমি তো প্লেনে যাও। আমি কবে প্লেনে উঠব?
দেখতে দেখতে সেদিনের সেই ছোট্ট রিনা এখন বড় হয়েছে। বিয়ের সানাইও বেজেছে। নিজের সীমিত সামর্থ্য দিয়ে একটু একটু করে বাবা মাহিন্দ্র সিং মেয়ের সব আশা পূরণ করেছেন। কিন্তু রিনার ছোট্ট বেলার সেই উড়োজাহাজে ওঠার স্বপ্ন পূরণ করতে পারেননি।
বিয়ের কিছুদিন আগে থেকেই মাহিন্দ্রর মাথায় ব্যাপারটা ঘুরপাক খাচ্ছিল। তিনি পরিকল্পনা করেন বিয়ের দিনই মেয়ের স্বপ্ন পূরণ করবেন। মেয়েকে হেলিকপ্টারে শ্বশুর বাড়ি পাঠাবেন। এরপর তিনি গোপনে হেলিকপ্টার ভাড়া করেন। স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে উড্ডয়নের অনুমতিও নেন। বিয়ের দিন যখন বাড়ির পাশে খোলা জায়গায় হেলিকপ্টার এসে নামে তখন রিনা বিস্মিত চোখে বাবার দিকে তাকিয়ে দেখেন- তিনি মুখ টিপে হাসছেন! ততক্ষণে মেয়ের চোখে নেমেছে আনন্দঅশ্রু।
যথারীতি বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে নতুন বর-বধূকে নিয়ে হেলিকপ্টার গন্তব্যে রওনা হয়ে যায়। মেয়েকে বিদায় দিয়ে মাহিন্দ্র সিং বেদনায় ভারাক্রান্ত হলেও মনটা তার আনন্দে ভরে ওঠে। ভাবতে থাকেন জীবনের শেষ সঞ্চয় দিয়ে হলেও মেয়ের আশা তিনি পূরণ করতে পেরেছেন।
মাহিন্দ্রর আর্থিক অবস্থা ততটা স্বচ্ছল না হলেও বাবা হিসেবে তিনি যা করেছেন এলাকায় সাড়া পড়ে গেছে। প্রশংসার বৃষ্টিতে ভিজছেন তিনি।
সোনালীনিউজ/ এএস