রংপুর : গোখাদ্যের দাম বাড়ার প্রতিবাদে ও আসন্ন বাজেটে খামারিদের ভর্তুকি দেওয়াসহ ছয় দফা দাবিতে গরু নিয়ে রংপুরে নগরীতে বিক্ষোভ এবং জেলা ও বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ কার্যালয় ঘেরাও করেছেন খামারিরা।
বুধবার (২৫ মে) দুপুরে রংপুর ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে কয়েকশ গরু খামারি এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেন।
খামারিদের অন্য দাবিগুলো হলো- প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে খামারি পর্যায়ে চিকিৎসাসেবা বৃদ্ধি, নিম্নমানের গুঁড়া দুধ আমদানি বন্ধ, গো-খাদ্যের ভেজাল রোধে কার্যকর ভূমিকা, গো-খাদ্যের সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের বিচারের আওতায় আনা এবং সরকারের পক্ষ থেকে খামারিদের ঘাস চাষের জন্য জমি বরাদ্দ দেওয়া।
জানা গেছে, প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী প্রাণিসম্পদ কার্যালয় ঘেরাও করে রাখেন তারা। এতে নগরীর প্রধান সড়কে যান চলাচল বিঘ্ন হয়। বাধে তীব্র যানজট। পরে প্রাণিসম্পদ বিভাগের রংপুরের পরিচালক অলিয়ার রহমান আকন্দ খামারিদের দাবি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন বলে আশ্বাস দিলে খামারিরা ফিরে যান।
এসময় গরুর গায়ে ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে বাঁচান, গরুর খাবারের দাম কমাও, দুধের দাম বাড়িয়ে দাও, নইলে মোদের জীবন নাও’ এমন শ্লোগান সম্বলিত ফেস্টুন লিখে খামারিরা রংপুর জেলা ও বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অফিস ঘেরাও করেন।
খামারিরা প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করে দুধের দাম বাড়ানো, খামারি পর্যায়ে আগামী বাজেটে গো-খাদ্যে ভর্তুকি দেওয়াসহ ছয় দফা দাবি তুলে ধরেন। খামারিরা বলেন, অচিরেই গো-খাদ্যের দাম না কমালে এবং বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান না হলে দেশ থেকে খামার যেমন ধ্বংস হবে, তেমনি বেকার হবে লাখ লাখ যুবক।
তারা অভিযোগ করেন, গোখাদ্যের অভাবে রংপুরের আট হাজার খামারের মধ্যে পাঁচ হাজার খামারের গরু পানির দরে বিক্রি করে দিতে হয়েছে। খাদ্যের দাম না কমলে রংপুরের বেশিরভাগ খামার বন্ধ হয়ে যাবে। খাবারের দাম বাড়লেও ব্র্যাক ও মিল্ক ভিটা আগের দামে দুধ কিনছে। অথচ দাম বৃদ্ধির ফলে প্রতি কেজি দুধ উৎপাদনে খরচ পড়ছে ৫২ টাকা অথচ দাম পাচ্ছেন ৪০ টাকা। খামারিরা গরুগুলোকে সন্তানের মতো লালনপালন করেন। রংপুরে প্রায় এক লাখেরও বেশি পরিবার খামারের ওপর নির্ভরশীল। খাবারের দাম না কমালে লাখও পরিবার বেকার হয়ে পড়বে।
তারা দাবি করেন, গোখাদ্যের দাম কমাতে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। ভারতের মতো আমাদের দেশেও আসন্ন বাজেটে খামারিদের ভর্তুকি দিয়ে নিম্নমানের দুধ আমদানি বন্ধ, সরকারের পক্ষ থেকে খামারিদের ঘাস চাষের জন্য জমি বরাদ্দসহ পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
বিক্ষোভ চলাকালে জেলা ও বিভাগীয় ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লতিফুর রহমান মিলনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন জেলার সাধারণ সম্পাদক এস এম আসিফুল ইসলাম আসিফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম ও ওয়েজ করনী বাবু প্রমুখ।
সোনালীনিউজ/এনএন