কুড়িগ্রাম: হে ব্রহ্মপুত্র মহাভাগত মোর পাপ মোচন করো- এই পবিত্র মন্ত্র উচ্চারণ করে সনাতন ধর্মে বিশ্বাসী লাখ লাখ পুণ্যার্থী মঙ্গলবার কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা শহর ঘেঁষে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র নদে অষ্টমীর স্নান সম্পন্ন করেছেন। চিলমারীর রণপাগলী সার্বজনীন পূজা মন্দিরের পুরোহিত বুদ্ধদেব চক্রবর্তী জানান,পঞ্জিকা অনুযায়ী এবার শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথি চৈত্র মাসে পড়েনি। পড়েছে ৩ বৈশাখ। তাই মঙ্গলবার এই পুণ্য স্নান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ভোর ৪টা থেকে বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত ছিল স্নানের উপযুক্ত সময়।চিলমারী উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শচীন্দ্র নাথ বর্মণ বলেন, এবার পুণ্য স্নানে ৫ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটেছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি জেলার এবং রংপুর বিভাগের জেলাগুলো ছাড়াও উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা থেকে রেল,সড়ক এবং নৌ-পথে এখানে এসেছেন। সোমবার থেকে এখানে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে দলে দলে মানুষ আসা শুরু করে। ফলে চিলমারীর রমনা ঘাট থেকে দক্ষিণ দিকে জোড়গাছ ঘাট পর্যন্ত তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছিল মানুষের উপচে পড়া ভিড়।
এদিকে এই পুণ্য স্নানকে ঘিরে ব্রহ্মপুত্র পাড়ে বসেছে বিশাল মেলা। অষ্টমীর স্নান মেলা উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক বিষু নাথ বর্মন জানান,মেলা সরকারিভাবে ১৮ হাজার টাকায় ইজারা দেয়া হয়েছে। পুণ্যার্থী ছাড়াও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের সমাগম ঘটেছে মেলায়।
মাছ,দৈ,চিড়া,মুড়ি,খৈ,খেলনা সামগ্রী,তৈষজপত্র,মাটি তৈরি হাঁড়িপাতিল এবং বিভিন্ন খাবার সামগ্রীসহ নানান পণ্য বেচা-কেনা ভালো হয়েছে। মেলায় বেচাকেনার পরিমাণ ১০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে মেলা কমিটির ধারণা।
এ প্রসঙ্গে চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিনহাজুল ইসলাম বলেন, সুষ্ঠুভাবে স্নান এবং মেলার জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, আনসার ভিডিপি নিয়োজিত রয়েছে। বিশুদ্ধ পানিয় জল সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া স্নান শেষে মহিলাদের কাপড় পাল্টানোর জন্য সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে দুই শতাধিক তাঁবু স্থাপন করা হয়েছে।
এমএস