ঢাকা : ভোক্তাদের খাদ্যপণ্য ও বিভিন্ন সেবা নিয়ে সার্বক্ষণিক (২৪ ঘণ্টা) সেবা দিতে হটলাইন চালুতে ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ চাওয়ার বিষয়ে ব্যাখা জানতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালককে (প্রশাসন ও অর্থ বিভাগ) তলব করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আগামী ২৭ আগস্ট মঙ্গলবার পরিচালক শামীম আল মামুনকে হাইকোর্টে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান। আর নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম এবং ভোক্তা অধিকারের পক্ষে ছিলেন কামরুজ্জামান কচি।
পরে শিহাব উদ্দিন খান জানান, গত ১৬ জুন হাইকোর্ট দুই মাসের মধ্যে একটি হটলাইন সেবা চালু করতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এ আদেশের পর মঙ্গলবার ভোক্তা অধিকারের আইনজীবী আদালতে একটি আবেদন দিয়ে জানান, এ জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
এ কথা শুনে আদালত বলেন-হটলাইন চালু করতে ৫০ লাখ টাকা লাগবে? এ বিষয়ে ব্যাখ্যা শুনতে আদালত ওই পরিচালককে ২৭ আগস্ট তলব করেছেন বলে জানান শিহাব উদ্দিন খান।
গত ১৬ জুন ওই আদেশের পর অধিদপ্তর ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেন। ৪ জুলাই করা এ কমিটিতে পরিচালক শামীম আল মামুনকে সভাপতি করা হয়।
এরপর ১৪ জুলাই অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (তৎকালীন অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা) মো.হারুন-উজ-জামান ভূঁইয়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবরে ‘হটলাইন স্থাপনের ব্যয় নির্বাহের জন্য ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের অনুকূলে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি সরঞ্জামাদি খাতে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ প্রদান’ বিষয়ে একটি চিঠি দেন।
এতে বলা হয়, ‘রিট মামলায় (৫৩৫০/২০১৯) অধিদপ্তরকে ভোক্তাদের সার্বক্ষণিক (২৪ ঘণ্টা) সেবা প্রদানের লক্ষ্যে দুই মাসের মধ্যে একটি হটলাইন স্থাপন করার জন্য হাইকোর্ট ১৬ জুন আদেশ দেন।
এ আদেশ প্রতিপালনের জন্য পরিচালককে (প্রশাসন ও অর্থ) সভাপতি করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি ইতিমধ্যে বিটিআরসির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। বিটিআরসি থেকে প্রাপ্ত ধারণানুযায়ী হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী একটি হটলাইন স্থাপন করতে আনুমানিক ৫০ লাখ টাকা ব্যয় হবে। কিন্তু ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের বাজেটে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি সরঞ্জামাদি খাতে মাত্র ২ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে যা হটলাইন স্থাপনের ব্যয় নির্বাহের জন্য অপ্রতুল। এ অবস্থায় হটলাইন স্থাপনে ব্যয় নির্বাহে জরুরি ভিত্তিতে ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।’
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া নামি-দামি কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানের নিম্নমানের (সাব-স্ট্যান্ডার্ড) পণ্য বাজার থেকে সরাতে করা এক রিটের শুনানিতে গত ১৬ জুন ওই আদেশ দিয়েছিলো।
সম্প্রতি ৪০৬টি খাদ্যপণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে বিএসটিআই। এর মধ্যে ৩১৩টি পণ্যের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ৩১৩টির মধ্যে ৫২ পণ্য মানহীন বলে প্রতিবেদন দেয় মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাটি। বাকি ৯৩ পণ্যের পরীক্ষার ফলাফল প্রতিবেদন ১৬ তারিখের মধ্যে দিতে বিএসটিআইকে নির্দেশ দেন আদালত। সে অনুসারে বিএসটিআই ৯৩ পণ্যের মান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে। এর মধ্যে ২২টি পণ্য নিম্নমানের বলে জানায় তারা।
গত ৮ মে ভোক্তা অধিকার সংস্থা ‘কনসাস কনজুমার্স সোসাইটি’র (সিসিএস) নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান ওই রিট করেন।
গত ১২ মে ওই রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট বাজার থেকে আইনানুসারে এসব পণ্য সরিয়ে নিতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেন।
সোনালীনিউজ/এমটিআই