ঢাকা: নবম জাতীয় পে-স্কেল ঘোষণা, ৫০ শতাংশ মহার্ঘ্যভাতা, টাইম স্কেল সিলেকশন গ্রেড, বৈষম্য নিরসনসহ সরকারি কর্মচারীদের দাবি-দাওয়া পূরণে সরকার কাজ করছে বলে জানালেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) প্রতিমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে একান্ত সাক্ষাতে সোনালীনিউজের প্রতিনিধিকে তিনি বলেন, নতুন পে-স্কেলসহ কর্মচারীদের দাবির বিষয়ে সরকার অবগত এবং এটি বিবেচনাধীন আছে। তাদের দাবি-দাওয়ার বিষয়টি আলোচনার পর্যায়ে আছে এখনও ফাইনাল কিছু হয়নি।
আগামী নির্বাচনের আগে নবম জাতীয় পে-স্কেল ঘোষণা হতে পারে কিনা জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আশা করা যায়, সরকার বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। আমাদেরতো ৫ বছর পরপর পে-স্কেল ঘোষণা করার কথা কিন্তু করোনার কারণে পিছিয়ে গেছে। সবকিছু মিলয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত জানাবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।’
তিনি বলেন, কর্মচারীদের দাবি-দাওয়ার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে আমাদের কাছে আছে। আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি, কবে কি করা যায় চূড়ান্তভাবে জানাবো।
দাবি আদায়ে কর্মচারীদের আন্দোলন কর্মসূচির বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, শুধু শুধু দেশে একটা অস্থির পরিস্থিতির সৃষ্টি করে কারোই লাভ হবে না। শেখ হাসিনার সরকার কর্মচারীদের জন্য যা করেছে অন্য কেউ কোনোদিন করেনি, করতেও পারবে না। এখন দেশের কোনো মানুষ ভালো নেই এমনটা বলতে পারবেন না। সকলে ভালো আছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে চতুর্মুখী উন্নয়নে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নয়ন হচ্ছে এবং সরকারি চাকরিজীবীসহ সকল শ্রেণির মানুষের কথা মাথায় রেখেই পরিকল্পনা মাফিক কাজ হচ্ছে।
‘আপনারা জানেন, দুই বছর করোনার কারণে সবকিছুই একরকম স্থবির ছিলো। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশও বিপর্যস্ত অবস্থার মধ্যে পড়েছে কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যার দৃঢ় মনোবল এবং সুদূরপ্রসারী চিন্তা-চেতনার কারণে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা থামেনি। তাই কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি না করে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করুন। বঙ্গবন্ধু কন্যা কাউকেই নিরাশ করবেন না।’
উল্লেখ্য, নবম পে-স্কেলসহ ৭ দফা দাবিতে বিভাগীয় সমাবেশ করছেন সরকারি কর্মচারীরা। ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ২৭ মে ঢাকায় মহাসমাবেশের কথা রয়েছে।
‘বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী দাবি আদায়ে ঐক্য পরিষদ’-এর ৭ দফা দাবিসমূহ:
১। পে-কমিশন গঠন পূর্বক ৯ম পে স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। পে-স্কেল বাস্তবায়নের পূর্বে অন্তর্বতীকালীন কর্মচারীদের জন্য ৫০% মহার্ঘ্য ভাতা প্রদান করতে হবে।
২। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা অনুযায়ী ১০ ধাপে বেতন স্কেল নির্ধারণসহ পে-কমিশনে কর্মচারী প্রতিনিধি রাখাতে হবে।
৩। সচিবালয়ের ন্যায় সকল দপ্তর, অধিদপ্তরের পদ পদবী পরিবর্তনসহ এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রনয়ণ করতে হবে।
৪। টাইম স্কেল সিলেকশন গ্রেড পূণর্বহাল সহ বেতন জ্যেষ্ঠতা পূনঃবহল, বিদ্যমান গ্রাচুইটি/আনুতোষিকের হার ৯০% এর স্থলে ১০০% নির্ধারণ ও পেনশন গ্রাচুইটি ১ টাকার সমান ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে।
৫। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের আপীল বিভাগের রায় বাস্তবায়নসহ সহকারী শিক্ষকদের বেতন নিয়োগ বিধি-২০১৯ এর ভিত্তিতে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ।
৬। আউট সোর্সিং পদ্ধতি বাতিল পূর্বক উক্ত পদ্ধতিতে নিয়োগকৃত ও উন্নয়ন খাতের কর্মচারীদের রাজস্বখাতে স্থানান্তর করতে হবে। ব্লক পোষ্টে কর্মরত কর্মচারীসহ সকল পদে কর্মরতদের পদোন্নতি বা ৫ বছর পর পর উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে।
৭। বাজারমূল্যের উর্দ্ধগতি ও জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সাথে সমন্বয় পূর্বক সকল ভাতাদি
পুনঃনির্ধারণ করতে হবে। চাকুরীতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর ও অবসরের বয়স সীমা ৬২ বছর নির্ধারণ করতে হবে।
সোনালীনিউজ/আইএ