ঢাকা: দ্য পুওর মাস্ট নো দ্যাট উই লাভ দেম (গরিবরা বুঝবে যে আমরা তাদের ভালোবাসি) মাদার তেরেসা এ কথা বলতেন, বিশ্বাস করতেন এবং আজীবন চর্চা করতেন। জীবনের অধিকাংশ সময় তিনি ব্যয় করেছেন আর্তমানবতার সেবায়। তিনি ছিলেন অসহায়দের সহায়। ভালোবাসা বঞ্চিতদের তিনি ভালোবাসতেন। সমাজে যারা অনাকাঙ্ক্ষিত, আশ্রয়হীন, তিনি তাদের আশ্রয়দাত্রী ছিলেন।
তিনি ১৯৪৩ সালে দুর্ভিক্ষপীড়িত ও ১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের ফলে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গায় ভারতীয় উপমহাদেশের দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। এ ছাড়া ইথিওপিয়ার দুর্ভিক্ষপীড়িত, চেরনোবিল তেজস্ক্রিয়তায় আক্রান্ত, আর্মেনিয়ার ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানো তার উল্লেখযোগ্য কাজগুলোর অন্যতম।
পৃথীবিতে আমরা হয়তো মাদার তেরেসাকে আর পাবো না। তবে মাদার তেরেসার মতো মানুষের পাশে দাড়ানোর চেষ্টা করছে এমন মানুষ খুঁজলে হয়তো পাওয়া যায়। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এমন একজন মানুষকে খুজে পাওয়া গেলো বরগুনায়।
তিনি একজন মানুষ, কাজ অনেক। অসহায় দরিদ্র, অবহেলিত, শিক্ষা বঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোই তার নেশা। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ি। ব্যবসায় সফলতার পরে অংশ নেন রাজনীতিতে। রাজনীতির প্রতি অগাদ ভালোবাসায় জড়িয়ে যান তৃণমূলের মানুষের সঙ্গে। রাজনীতির সফলতার আন্দাজ করা না গেলেও গরীবের প্রতি তার ভালোবাসার আন্দাজ করা যায় সহসাই।
যার কথা বলছিলাম তিনি হলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক ও বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং স্পন্দন পাওয়ার অ্যান্ড অ্যানার্জি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মশিউর রহমান শিহাব। দেশের সর্ব দক্ষিণের জেলা বরগুনার রোড পাড়া গ্রামে তার জন্ম।
এদেশে হাজারো কোটি টাকার মালিক হলেও গরীবকে ভালোবেসে তাদের পাশে দাঁড়ানোর মানুষ কিন্তু হাতে গোনা। আর সেই সব হাতে গোনা মানুষদের মধ্যে তিনিও একজন।
উপকূলীয় জেলা বরগুনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার অসহায় দরিদ্র শিক্ষার্থীদের কাছে তিনি ভরসাস্থল। তাদের বিপদে আপদে সব সময় তার অবস্থান থাকে সবার আগে। তীব্র শীতে যখন উপকূলীয় জেলা বরগুনার মানুষ বিপর্যস্ত, তখন তাদের পাশে শীত বস্ত্র নিয়ে হাজির হন তিনি।
গ্রামের অসহায় দরিদ্র মানুষরা যখন দু’বেলা দু’মুঠো ভাত জোগাতে হিমশিম খান, তখন তাদের সন্তানদের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করা যেন তাদের কাছে অভিসাপ। ঠিক তখন ওই সব শিক্ষার্থীদের শিক্ষার খরচ বহনের হাত বাড়িয়ে দেন এই মানুষটি।
প্রতি ঈদে ছুটে যান গ্রামে গ্রামে তার প্রিয় মানুষের কাছে। ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে অসহায়দের হাতে তুলে দেন নতুন কাপড়।
আর এই বিলিয়ে দেয়ার মধ্যে তার একটা ভিন্নতা খুজে পাওয়া যায়। সচরাচর অসহায়দের সাহায্যে যারা করেন তাদের একটা উদ্দেশ্য থাকে। সেই উদ্দেশ্য সফল করতে তারা এই সাহায্যের পাশাপাশি ঢাকঢোলও পেটান সমান তালে।
তবে মশিউর রহমান শিহাবের বেলায় এই ঢাকঢোল পেটানোর ফারাকটা অনেক বেশি। কারণ তিনি প্রতি ঈদে অসহায়দের নতুন কাপড় দিয়ে যে সাহায্য করে থাকেন, তা শুধুই অগচরে। অসহায়দের সাহায্যের প্রচারের ঠাকঢোল পেটানোর ধারে কাছেও নেই বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের এই নেতার।
তার প্রমান পাওয়া যায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে। সরেজমিনে দেখা যায়- সন্ধ্যা বেলায় কাউকে না জানিয়ে টং দোকান বা গ্রামের কোন রাস্তায় হেটে বিলিয়ে দেন নতুন কাপড়, নগত অর্থ, গ্রামের তরুণদের সৎ এবং সঠিক পথে চলার পরামর্শ।
আর এসব কাজে শুধু অসহায় দরিদ্র মানুষের কাছেই তিনি প্রিয় নন, জেলার রাজনীতির তৃণমূল নেতা থেকে শুরু করে জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছেও তিনি অতি প্রিয় মানুষ।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এ সাবেক নেতা মশিউর রহমান শিহাব বলেন- ‘সবাই রাজনীতির মাধ্যমে সুবিধা গ্রহণ করে, কিন্তু আমি রাজনীতির মাধ্যমে মানুষের সুবিধা প্রদান করতে চাই। ভোগে নয়, আমি ত্যাগে বিশ্বাসি। অসহায় মানুষদের পাশে থাকাই আমার কাজ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে নিজেকে গড়ে তুলেছি। যতদিন বেঁচে আছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ম শেখ হাসিনার মত মানুষের ভালোবাসায় বেঁচে থাকতে চাই’।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এ সাবেক নেতা আরো বলেন- আমি দীর্ঘ সময় ধরে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমসাময়িক রাজনীতি করে আসছি। আওয়ামী লীগের সকল আন্দোলন সংগ্রামে দলের সঙ্গে রাজপথে ছিলাম। বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে ওতোপ্রোতভাবে যেসব পরিবারগুলো জড়িয়ে আছে, তাদের মধ্যে আমাদের পরিবার অন্যতম।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম সিদ্দিকুর রহমান বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। তৎকালীন সেই নেতার বড় ভাগ্নের ছেলে হিসেবে তার আদর্শকে বুকে ধারণ করে মানুষের পাশে থেকেছি। আমি শুধু রাজনীতিই করি না। আমি একজন সফল ব্যবসায়ি। আর এই ব্যবসার উপার্জন দিয়েই মানুষের পাশে আছি ভবিষ্যতেও থাকবো।
বরগুনার মাটি ও মানুষ আমার প্রাণ। প্রতিটি মূহুর্তেই আমার চিন্তা ও স্বপ্ন বরগুনার উন্নয়নের জন্য, বরগুনার অবহেলিত মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। আমার যতই বিপদ আসুক না কেন দক্ষিণবঙ্গের অবহেলিত জেলা বরগুনার উন্নয়নের জন্য আমি চেষ্টা করে যাবো জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে। মানুষের ভালোবাসা ও দোয়াই আমার পথ চলার শক্তি।
সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন