• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

৫ দিনে ৭০ রোহিঙ্গা মুসলিমকে হত্যা


আন্তর্জাতিক ডেস্ক নভেম্বর ১৫, ২০১৬, ০৭:১৩ পিএম
৫ দিনে ৭০ রোহিঙ্গা মুসলিমকে হত্যা

মিয়ানমারের মুসলিম অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যে গত পাঁচ দিনের অভিযানে ৭০ রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়েছে বলে স্বীকার করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। রাখাইন রাজ্যে সম্প্রতি শুরু হওয়া ‘বিদ্রোহ’ দমনের অংশ হিসেবে এই অভিযান চালানো হয়েছে বলে দাবি তাদের। নিহতদের ‘সহিংস হামলাকারী’ বলে বর্ণনা করেছে সেনাবাহিনী।

এদিকে বিবিসি জানিয়েছে, সেনাবাহিনীর হাতে নিহতের সংখ্যা সম্ভবত আরো অনেক বেশি। তাছাড়া সহিংসতা সম্পর্কে কর্মকর্তা যে তথ্য দিচ্ছে তা বিভ্রান্তিতে পূর্ণ বলেও উল্লেখ করেছে সংবাদমাধ্যমটি। রোহিঙ্গা সূত্রে পাওয়া খবর অনুসারে, সেনাবাহিনী সেখানে বেসামরিক অধিবাসীদের হত্যার পাশাপাশি সেখানকার নারীদের ধর্ষণও করেছে। তারা গ্রামের পর গ্রাম তারা জ্বালিয়ে দিয়েছে।

এর আগে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি এবং ভিডিওতে দেখা যায়, নিহতদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশুও রয়েছে। সেনা অভিযান থেকে বাঁচতে শত শত রোহিঙ্গা মুসলিম ঘরবাড়ি ছাড়ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। বর্তমানে কোনো সংবাদমাধ্যমকে রাখাইন রাজ্যে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

মিয়ানমারের সরকারি গণমাধ্যমগুলো জানায়, রোহিঙ্গারা নিজেরাই নিজেদের বাড়িঘরে আগুন দিচ্ছে। কিন্তু বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে রোহিঙ্গারা একে মিথ্যা বলে দাবি করেছে। রোববার রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে ১৩০টির বেশি বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ছবিতে দেখা যায়, একটি বাড়িতে নিহত এক নারী ও কয়েক শিশুর লাশ পড়ে আছে। অন্যরা তাদের জ্বলন্ত বাড়িঘর ছেড়ে পালাচ্ছে এবং সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার গানশিপ মাথার ওপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে।

এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত নীরব রয়েছেন মিয়ানমারের শান্তিতে নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চি। যদিও এখন পর্যন্ত রাখাইন রাজ্যের নিরাপত্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ রয়ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে। তবু সু চির ভূমিকা সমালোচিত হচ্ছে। ওই অঞ্চলে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনে কূটনৈতিকদের দাবিও তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন।

গত ৯ অক্টোবর বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যের কয়েকটি সীমান্ত ফাঁড়িতে বেশ কিছু হামলার ঘটনার পর থেকে সেখানে সেনা উপস্থিতি বাড়িয়েছে দেশটির সরকার। ওই এলাকায় সাংবাদিক এবং সাহায্যকর্মীদের প্রবেশও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

এদিকে স্থানীয় বাসিন্দা ও মানবাধিকার কর্মীরা অভিযোগ করেছেন, রাখাইন অঞ্চলের মানুষের ওপর মিয়ানমারের সেনারা নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছেন। সেখানকার নারীদের ধর্ষণ করা হচ্ছে এবং বাড়িঘরে আগুন দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের।

২০১২ সালে রোহিঙ্গাদের রাখাইন রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে কয়েকশ মানুষ নিহত হওয়ার পর সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সেখানে সবচেয়ে সহিংস অবস্থা চলছে। প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গার বাস। তবে মিয়ানমার সরকার তাদের নাগরিকত্ব দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে। আর এ কারণে অনেকে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বাংলাদেশে পাড়ি জমায়।

সোনালীনিউজ/ ঢাকা/ আরএস

Wordbridge School
Link copied!