• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

তৃতীয় দিনের ধর্মঘটেও দুর্ভোগে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ


যশোর প্রতিনিধি ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৭, ০৭:৪৩ পিএম
তৃতীয় দিনের ধর্মঘটেও দুর্ভোগে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ

বেনাপোল চেকপোষ্টে অপেক্ষমান যাত্রীরা

যশোর: দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলার চলমান পরিবহন ধর্মঘট তৃতীয় দিনে মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি)সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে সারাদেশের ন্যায় এসব এলাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষের।

সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) গভীর রাতে সারাদেশে এই ধর্মঘটের ঘোষণা দেয়া হয়।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন খুলনা বিভাগীয় কমিটির সভাপতি আজিজুল আলম মিন্টু সারা দেশে পরিবহন ধর্মঘটের সত্যতা নিশ্চিত জানান, চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স পরিবহনের বাস চালক জামির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেয়ার প্রতিবাদে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি) থেকে দক্ষিণবঙ্গের ১০টি জেলায় পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়।

একইসঙ্গে করণীয় নির্ধারণের জন্য সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ৩টায় ঢাকায় পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের যৌথসভা শুরু হয়। তিনি নিজেও ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন। সভাটি সিদ্ধান্ত ছাড়াই সোমবার রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত মুলতবি হয়। ঢাকার একটি রেস্তোরায় রাত সাড়ে ৮টায় মুলতবি সভা শুরু হয়ে রাত ১১টা পর্যন্ত চলে।

সভায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সারা দেশের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ওই সভা থেকে মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৬টা থেকে সারা দেশে একযোগে সকল ধরনের যানবাহন চলাচলে ধর্মঘট আহ্বান করা হয়েছে।

এদিকে, পরিবহন ধর্মঘট তৃতীয় দিনের মত অব্যাহত থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ। বিকল্প যানবাহন হিসেবে ট্রেন ও বিমানে যাতায়াত করছে সাধারণ মানুষ। তবে সেক্ষেত্রে অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। অপরদিকে দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোলে আমদানি পণ্য খালাসে ধস নেমেছে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছে পাসপোর্ট যাত্রীরাও।

পরিবহন ধর্মঘটে বেনাপোল স্থলবন্দরে আটকা পড়া যাত্রীরা

দেশের সর্ববৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোলে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর থেকে পণ্য খালাস নিয়েও গত তিনদিনে কোনো পণ্যবাহী গাড়ি ছেড়ে যায়নি। ফলে থমকে গেছে বন্দর এলাকা। বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) আবদুল জলিল জানান, প্রতিদিন এই বন্দর দিয়ে ৩শ’ ট্রাক পণ্য খালাস হয়ে থাকে। এখন বন্দর এলাকা ছেড়ে কোনো পণ্যবাহী ট্রাক যেতে পারছেনা। এজন্য বন্দরে সৃষ্টি হচ্ছে পণ্যজটের। পণ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে শত শত ট্রাক।

বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আজিম উদ্দিন গাজী জানান, ধর্মঘটের কারণে বন্দর থেকে আমদানি পণ্য খালাস হচ্ছে না। ট্রাক শ্রমিকরা ট্রাক না চালানোর এবং শ্রমিক ইউনিয়নের বাঁধার মুখে তারা কোনো ট্রাকে পণ্য লোড করতে পারছে না।

এদিকে ভারত থেকে ফেরত আসা পাসপোর্ট যাত্রীরা বেনাপোল বন্দর এলাকায় আটকা পড়েছে। শিশু ও রোগী যাত্রীদের নিয়ে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন এসব যাত্রীরা। অনেকে গন্তব্যস্থলে যাওয়ার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।

ভারত থেকে চিকিৎসা নিয়ে ফিরে আসা ঢাকার গাজীপুরের আসমা বেগম জানান. ‘আমার পরিবারের ৪ জন সদস্য চিকিৎসা নিতে কলকাতা গিয়েছিলাম। একসপ্তাহ পর দেশে ফিরে এসে জানতে পারলাম দেশে ধর্মঘট চলছে। সকাল থেকে বন্দরের চেকপোস্ট এলাকায় বসে আছি। কাছেও এমন কোনো বাড়তি টাকা নেই যে মাইক্রোবাস কিংবা প্রাইভেটে ভাড়া নিয়ে বাড়ি ফিরে যাব।’

আর সুযোগ বুঝে মাইক্রোবাস এবং ট্যাক্সি চালকরাও ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছে। বেনাপোল থেকে ঢাকার মাইক্রোবাস ভাড়া যেখানে ১৩-১৪ হাজার টাকা, সেখানে তা নেয়া হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। ৮ হাজার টাকার ট্যাক্সি ভাড়া হাকা হচ্ছে ১৫-১৬ হাজার  টাকা।

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সাংবাদিক মিশুক মুনীর ও চলচিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদসহ ৫জন নিহত হওয়ার মামলায় বাস চালক জামির হোসেনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের প্রতিবাদে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয় পরিবহন শ্রমিক  ফেডারেশনের আঞ্চলিক কমিটি।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!