• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০৯ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

রাঙামাটিতে ফের উদ্ধার অভিযান চলছে


রাঙামাটি প্রতিনিধি জুন ১৪, ২০১৭, ১১:৪৫ এএম
রাঙামাটিতে ফের উদ্ধার অভিযান চলছে

রাঙামাটি: প্রবল বর্ষণে রাঙামাটিতে পাহাড় ধসের ঘটনায় দ্বিতীয় দিনে ফের উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়েছে। বুধবার (১৪ জুন) সকালে এ উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়। এর আগে রাতে কাজ করার উপযোগী সরঞ্জাম না থাকায় মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর উদ্ধার অভিযান স্থগিত করা হয়।

রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মানজুরুল মান্নান এ তথ্য জানিয়েছেন।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে গত ১১ জুন থেকে সারাদেশে বৃষ্টি হয়েছে। এরমধ্যে ভারী বৃষ্টিপাত চলছে দক্ষিণ পূর্বের জেলাগুলোতে। প্রবলবর্ষণের কারণে পাহাড়ি ঢল নামে। এতে ১২ জুন রাতে পরিস্থিতি নাজুক হয়ে পড়ে। বৃষ্টির পানিতে নিচের মাটি সরে গিয়ে পাহাড়ি জেলাগুলোতে পাহাড় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে।

মঙ্গলবার (১৩ জুন) রাত পৌনে ৯টার দিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব জি এম আবদুল কাদেরের কাছে তিন জেলায় পাহাড় ধসের ঘটনায় চার সেনা কর্মকর্তাসহ ১৩২ জনের লাশ উদ্ধারের খবর আসে।

মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সর্বশষ তথ্য অনুযায়ী রাঙামাটিতে ৯৮ জন, চট্টগ্রামে ২৭ এবং বান্দরবানে সাতজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান ৯৮ জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন।

সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত পাহাড়ধসের এ দুর্ঘটনা ঘটে। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত ১৩২ জনের মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

রাঙামাটিতে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ৫০ জনকে। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর। রাঙামাটি সদর, কাউখালী, কাপ্তাই ও বিলাইছড়ি উপজেলায় পাহাড়ধসে এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে।

রাঙামাটি প্রতিনিধি জানান, টানা বর্ষণে পাহাড় ধসে রাঙামাটিতে সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যসহ ৯৮ জন নিহত হয়েছেন।

সেনা সদস্য হতাহত হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ভোরে রাঙামাটির মানিকছড়িতে একটি পাহাড় ধসে মাটি ও গাছ পড়ে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়ক বন্ধ হয়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে রাঙামাটি জোন সদরের নির্দেশে মানিকছড়ি আর্মি ক্যাম্প থেকে সেনাবাহিনীর একটি দল উক্ত সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে।

উদ্ধার কার্যক্রম চলার সময় আনুমানিক বেলা ১১টায় উদ্ধার কার্যস্থল সংলগ্ন পাহাড়ের একটি বড় অংশ উদ্ধারকারী দলের ওপর ধসে পড়লে তারা মূল সড়ক থেকে ৩০ ফুট নিচে পড়ে যান। পরে একই ক্যাম্প থেকে আরও একটি উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুজন সেনা কর্মকর্তাসহ চারজন সেনাসদস্যকে নিহত এবং ১০ জন সেনাসদস্যকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেন।

পাহাড়ধসে কাউখালী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ২৮ জন মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন কাউখালীর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল করিম ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) কমল বরণ সাহা। তবে নিহতদের পরিচয় জানাতে পারেননি তারা।

এদিকে কাপ্তাই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ধসে ১৫ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দিলদার হোসেন। এছাড়া বিলাইছড়ি ও জুড়াছড়ি উপজেলায় পাহাড় ধসে পাঁচজন নিহত হয়েছেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। এখনও উদ্ধার কাজ চলছে। তবে রাতে কাজ ধীর গতিতে এগোচ্ছে। নিখোঁজ আছেন আরও অনেকে।

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি জানান, টানা বৃষ্টিতে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া, চন্দনাইশ ও বাঁশখালী উপজেলায় পাহাড়ধসে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৭ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে, পাহাড়ি ঢলের কারণে রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় রাঙামাটি ও বান্দরবানের সঙ্গে চট্টগ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

বান্দরবান প্রতিনিধি জানান, টানা বর্ষণে পাহাড়ধসে বান্দরবানে শিশুসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১১ জন। এদিকে, অব্যাহত বর্ষণে ভোররাতে বাজালিয়ায় সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় বান্দরবান-চট্টগ্রাম সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!