সামাজিক বনায়নের জায়গায় বসতঘর

  • কক্সবাজার প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ২১, ২০১৯, ০৩:০৩ পিএম

কক্সবাজার : কক্সবাজার সদর উপজেলার ইসলামপুরে সামাজিক বনায়নের জমিতে বসত ঘর তৈরি ও পাহাড় কেটে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০০৫-০৬ সালের বাফার জোন বাগানের দুই নম্বর প্লটে সম্প্রতি এ ঘটনা ঘটে। 

অন্যদিকে রাতের অন্ধকারে বাগানের শত শত গাছ কেটে বিভিন্ন স্থানে পাচার অব্যাহত রয়েছে। সংশ্লিষ্ট বন বিভাগ এ ব্যাপারে কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। বনবিভাগের ভিলিজার পরিচয় স্থানীয় কতিপয় ভূমিদস্যু ও বনখেকো এ অপকর্ম চালাচ্ছে। এতে করে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন প্রকৃত উপকারভোগীরা। 

প্রাপ্ত তথ্য প্রকাশ, কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের আওতাধীন নাপিত খালি বনবিট এলাকায় ২০০৫-০৬ সালে সামাজিক বনায়নের নীতিমালা অনুসারে প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়। জনপ্রতি ১ হেক্টর করে প্রতি ১০ জনের একটি গ্রুপ করে নাপিতখালী বনবিট কর্তৃপক্ষ নির্বাচিত উপকারভোগীদের মধ্যে  বাফার জোনের এ বাগান বরাদ্দ দেন। 

উপকারভোগীদের সাথে এ সংক্রান্ত ব্যাপারে বন কতৃর্পক্ষের দলিলে চুক্তিনামা হয়েছে।  পরবর্তীতে তা উপকারভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়। এসব প্লটের উপকারভোগীদের অন্যতম হচ্ছেন ঈদগাঁও ইসলামাবাদ এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং কক্সবাজার সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ডাক্তার শামসুল হুদা চৌধুরী। 

তিনি অভিযোগ করেন, ২ নম্বর প্লটের সভাপতি ডাক্তার রফিকের হাতে তাদের প্লটের দলিল হস্তান্তর করা হয়। দীর্ঘদিন পর্যন্ত তিনি তার প্লটের পাহারা ও বিবিধ খরচ বাবদ প্রতি মাসে প্লট সভাপতিকে ৫০০ টাকা হারে আদায় করে আসছেন। ইত্যবসরে স্থানীয় প্রভাবশালী ভূমিদস্যুরা উক্ত প্লটের মধ্যে টিনের ঘর তৈরি ও  পাহাড় কেটে রাস্তা নির্মাণ করেছে। প্লটের গাছ কেটে তাতে টিনের ঘর নির্মাণ ও বসবাস করে আসলেও সংশ্লিষ্টদের উচ্ছেদে বন কর্তৃপক্ষ কোনো ভূমিকা রাখছে না। 

এলাকার দুষ্কৃতিকারী বনখেকোরা উক্ত সামাজিক বনায়নের পাহাড় কেটে রাস্তা নির্মাণ করে প্রতি রাতে ট্রাক ভর্তি করে শত শত গাছ পাচার করলেও ভুক্তভোগীরা কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না। স্থানীয় কতিপয় লোক নিজেদের ভিলেজার পরিচয় দিয়ে ভূমি দখল করে নিচ্ছে। আর এ ক্ষেত্রে প্লট সভাপতি তাদেরকে পরোক্ষভাবে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। একই সাথে স্থানীয় সাবেক এক হেডম্যানের তিন ছেলে ও দুষ্কৃতকারীদের আস্কারা দিয়ে যাচ্ছে। 

প্লট দখলের প্রতিবাদ করলে উক্ত ভূমিদস্যুরা তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মেরে ফেলার হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। তিনি আরো অভিযোগ করেন, গত শুক্রবার উক্ত প্লটে নতুনভাবে রুপিত প্রায় ৫০০ চারা গাছ স্থানীয় দুই সহোদর মিলে উপড়ে ফেলে  এবং পাহাড়ের মাটি কেটে নিয়ে যায়। 

অভিযোগের ব্যাপারে ফুলছড়ির ফরেস্ট রেঞ্জার মোহাম্মদ জাকারিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ ধরনের কোন অভিযোগ তিনি এখনো পাননি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দিলে তিনি বিধিমতে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তার মতে নুরুল আলম এবং নুরুল আজিম নামে নাপিত খালি বিটে কোন ভিলেজার নেই। অপর অভিযুক্তদের ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান। 

অপরদিকে নাপিতখালী বিট কর্মকর্তা আবুল কালামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ও এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাননি বলে জানান। এরপর ও তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন। অন্যদিকে এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সোনালীনিউজ/এমআরকে/এএস