নাতির সহপাঠীদের পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন দাদা

  • কুষ্টিয়া প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ১০, ২০১৯, ০৬:৩১ পিএম

কুষ্টিয়া : দাদা আবদুল গফুর বিশ্বাস নাতির কথা বলতে বলতে আ'র্তনাদ করছেন। বলছেন, আবরার কারো কোনো ক্ষতি করতে পারে না। আমার বড়ই আদরের নাতি ছিল আবরার। আবরারের সহপাঠীদের পেয়ে কান্না ভেঙে পড়েন এই বৃদ্ধ। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদের গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ায়তে গিয়ে এমনটা দেখা যায়। 

নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের উপস্থিতি দেখে আবদুল গফুর বিশ্বাস জানতে চান- কী হয়েছে? কিন্তু পরিবারের সদস্যদের অনুরোধ এবং শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় সত্য আড়াল করে তাকে জানানো হয়, আবরার সড়ক দু'র্ঘটনায় আহত হয়েছেন। হাসপাতালে ভর্তি আছেন এবং এখন ভালো আছেন।

জানা গেছে, আবদুল গফুর বিশ্বাসের পাঁচ ছেলে চাকরির সুবাদে বাড়ির বাইরে থাকেন। একসঙ্গে এত লোক কখনও তাদের বাড়িতে আসে না। অনেকে কান্নাকাটি করছেন, অনেকেই ভারাক্রান্ত। সব মিলিয়ে অজানা শঙ্কা আবদুল গফুরের মনে। যখন জানতে পারেন তার প্রিয় নাতি নেই তখন আর ঠিক থাকতে পারেন না। বারবার বিলাপ করতে থাকেন। ছুটিতে বাড়িতে এলেই গ্রামের বাড়িতে ছুটে আসত আবরার। খোঁজখবরও নিতো। 

মেধাবী নাতিকে নিয়ে গর্বিত এ বৃদ্ধ জীবনের শেষলগ্নে এসেও স্বপ্ন দেখেন তার নাতি অনেক বড় ইঞ্জিনিয়ার হবে। পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করবে। যদিও তার এবং পরিবারের একসময় চাওয়া ছিল আবরার ডাক্তার হবে।কোনো ধরনের প্রস্তুতি ছাড়া মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণও হয়েছিলেন আবরার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকায় দ্বিতীয় হয়েছিলেন। কিন্তু নিজের ইচ্ছাতেই বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হন। অত্যন্ত মেধাবী আব'রার ফাহাদের মৃ'ত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তার পরিবার আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আব'রার ফাহাদকে থেমে থেমে ৫ ঘণ্টা অমানুষিক নি'র্যাতন চালায় ঘা'তকরা। বুয়েট ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক উপ-সম্পাদক অমিত সাহার শেরেবাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে রাত ৮টার পর থেকেই শুরু হয় নির্যাতনের পালা। মূলত ৩ দফায় পেটানোর একপর্যায়ে মৃ'ত্যুর কোলে ঢলে পড়েন এ মেধাবী ছাত্র। 

এ দিকে, রিমান্ডে থাকা আসামিরা ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, এ হ'ত্যাকা'ন্ডে অংশ নিয়েছিল ২৪-২৫ জন। এদিকে হ'ত্যাকা'ন্ড নিয়ে সবশেষ ফাঁস হওয়া ভিডিওতে আব'রারের লাশ পাশে রেখেই খুনিদের শেরেবাংলা হলের প্রভোস্ট জাফর ইকবাল খান এবং ছাত্রকল্যাণের পরিচালক মিজানুর রহমানের সঙ্গে আলাপচারিতায় লিপ্ত হতে দেখা যায়। এ সময় তাদের সবাইকে নির্লিপ্ত মনে হয়েছে।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ