একদিকে নদী খনন অন্য দিকে নদী দখল করে পুকুর

  • ঝিনাইদহ প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০১৯, ০৩:০৬ পিএম

ঢাকা : নদীর জায়গা দখল করে পুকুর তৈরি করা হয়েছে। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের বুড়ি ভৈরব নদীর পাশে এক প্রভাশালী এই পুকুর খনন করেছেন।  তার এ পুকুর তৈরিতে খোদ নদী খননের কাজে নিয়োজিত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের লোকজন সহযোগীতা করেছেন বলে অভিযোগ এলাকাবাসির। তাদের অভিযোগ নদীর পাশে অনেকের মালিকানা জমি খনন করে নদী করা হলেও ওই প্রভাশলীর দখল করা পুকুর পাড় উল্টো বেধে ওেয়া হয়েছে।

লিখিত অভিযোগে জানা যায়, কালীগঞ্জ উপজেলার কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়ন ও বারবাজার ইউনিয়নের মাঝ দিয়ে বুড়ি ভৈরব নদীটি বয়ে গেছে। এই নদীটিতে নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে সরকার প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যায়ে খনন কাজ করছে। কিন্তুছ স্থানী প্রভাবশালী সিদ্দিকুর রহমান খনন কাজ চলা বুড়ি ভৈরব নদীর মাঝে প্রায় ২ একর ৩৫ শতক জমি দখল করে পুকুর করেছেন। এতে নদী খননের উদ্দেশ্য বাধা গ্রস্থ হবে। সেই সাথে পাল্টে গেছেন নদী খননের ম্যাপ।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ও নদী খনন কাজে নিয়োজিত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজারকে টাকা দিয়ে পুকুর করেছেন। তবে অভিযুক্ত সিদ্দিকুর রহমানের দাবি পুকুরটি তার নিজস্ব জমিতেই রয়েছে।

এ ঘটনায় উপজেলার মাসলিয়া গ্রামবাসীর পক্ষে আব্দুল জান্নান নামের এক ব্যক্তি পানি উন্নয়ন বোর্ড, ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা ভুমি অফিসে অভিযোগ দায়ের করেছেন। ইতিমধ্যে নদীর মধ্যে থেকে পুকুর উচ্ছেদের দাবিতে তারা মানববন্ধন কর্মসূচীও পালন করেছেন।

মাসলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান জানান, সম্পুর্ণ অবৈধ ভাবে নদীর জায়গা দখল করে সিদ্দিকুর রহমান পুকুর তৈরি করেছেন। বিষয়টি অভিযোগ আকারে পানি উন্নয়নবোর্ডে ও ঠিকাদারকে জানানো হলেও তারা কর্ণপাত করেনি।  

লিখিত অভিযোগকারী আব্দুল জান্নানের দাবি, তাদের ব্যক্তিগত জমির মধ্যে দিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার নদী খনন করলেও সিদ্দিকুর রহমানের পুকুরে পাড় তারা বেধে দিয়েছে। আমরা গ্রামবাসী বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছি।  

হাসিলবাগ গ্রামের আবু বক্কার জানান, তাদের প্রায় ৩৫ শতক ফসলি জমি নদীর মধ্যে খনন করে নিয়েছে। কিন্তু পাশের হাজী সিদ্দিকের প্রায় ২.৩৫ একর জমি পানি উন্নয়ণ বোর্ড হাত না দিয়ে বরং খনন করে দিয়েছে।  

অভিযুক্ত সিদ্দিকুর রহমান জানান, তিনি নিজের জমিতে এই পুকুর করেছেন। নদীর পাশের জমিতে তার পুকুর। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে আমি জানিয়েছি তাই তারা পুকুরের পাশ থেকে কিছু অংশ খনন করে মাটি তার পুকুর পাড়ে দিয়েছে। আমি যদি কাউকে ম্যানেজ করে এই কাজটি করতে পারি তাহলে জনগনের কি? আমার ক্ষমতা আছে আমি করেছি। কেউ পারলে এই পুকুর উচ্ছেদ করে দেখাক।  

পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদারের ম্যানেজার ইউনুচ আলী জানান, আমরা নদীর ম্যাপ অনুযায়ী খনন করেছি। খনন কাজ এখন চলছে। কারো কাছ থেকে টাকা নেইনি। যে পুকুরের কথা বলা হচ্ছে ওই পুকুরের মালিক আমাদের কাগজপত্র দেখিছেন।

সোনালীনিউজ/এটি/এএস