পুলিশের নির্যাতনেই রায়হানের মৃত্যু: পিবিআই

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ৫, ২০২১, ০৩:২৩ পিএম

সিলেট: পুলিশের নির্যাতনেই রায়হান আহমদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

বুধবার (৫ মে) রায়হান হত্যা মামলার অভিযোগপত্র জমা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছে পিবিআই।

সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই সিলেট বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. হুমায়ন কবীর জানান, গত ১১ অক্টোবর পৌনে ২টার দিকে সাইদুল শেখ ও রনি শেখ নামে দুই ব্যক্তি কাষ্টঘরে সুইপার কলোনিতে গিয়ে ৬০০ টাকায় ৪ পিস ইয়াবা কেনেন। এ সময় সুইপার কলোনিতে অবস্থান করছিলেন রায়হান। বিক্রি করা ইয়াবা আসল নয়- এ অভিযোগে সাইদুল শেখের কাছ থেকে একটি মোবাইল ও ৯ হাজার ৭০০ টাকা ছিনিয়ে নেয় রায়হান। 

এ ঘটনার পর সাইদুল শেখ বন্দরবাজার এলাকার মাশরাফিয়া রেস্টুরেন্টের সামনে বন্দরবাজার ফাঁড়ির দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন। সাইদুল শেখ অভিযোগে বলেন, পুলিশ সদস্য পরিচয়ে মারধর করে টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়েছে রায়হান।

পুলিশ সুপার মো. হুমায়ন কবীর বলেন, এই অভিযোগের ভিত্তিতে সুইপার কলোনির চুলাই লালের ঘর থেকে ভিকটিম রায়হানকে আটক করে ফাঁড়িতে নিয়ে আসে। এ সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন রায়হান। পরে বাসা থেকে টাকা এনে সাইদুল শেখের টাকা ফেরত দিতে এবং ছিনতাই ও পুলিশের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করায় ফাঁড়িতে তাকে মারপিট করেন পুলিশ সদস্যরা। এরপর ভোরে আহতাবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মো. হুমায়ন কবীর বলেন, রায়হানের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা ছিল। পরবর্তীতে সেটির বিচার কাজ শেষ হয়। এরপর ২০১৮ সালে তার বিরুদ্ধে আরও একটি মাদক মামলা দায়ের করা হয়। সেটি বিচারাধীন রয়েছে। তিনি বলেন, রায়হান মাদক বেচাকেনার সঙ্গে জড়িত কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে কাষ্টঘর এলাকায় তার সব সময় আসা যাওয়া ছিল। ঘটনার দিন রাতেও তিনি সেখানে অবস্থান করছিলেন।

পিবিআই পুলিশ সুপার বলেন, আমরা ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে কথা বলেছি। মামলার ১৯৬২ পৃষ্টার চার্জশিটে ৬৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১০ জন ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। মামলার ধারায় আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

তিনি আরও বলেন, চার্জশিটে অভিযুক্ত ৬ জনের মধ্যে ৫ পুলিশ সদস্যই জেলহাজতে রয়েছেন। পুলিশের বাইরে আলামত নষ্টকারী আব্দুল্লাহ আল নোমান পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।

সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই সিলেটের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ খালেদ উজ জামান ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আওলাদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

সোনালীনিউজ/আইএ