ছাগলের খৎনায় শত শত মানুষকে খাওয়ালেন দিনমজুর দম্পতি

  • কুষ্টিয়া প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৫, ২০২১, ১১:৩৫ এএম
ছাগলের খৎনায় শত শত মানুষ

কুষ্টিয়া: দাম্পত্যের বয়স প্রায় ২৫। কিন্তু এখনও নিঃসন্তান তারা। দারিদ্র্যের তীব্রতার জন্য আত্মীয়দের কাউকে নিজের বাসায় খেতে দিতে পারেননি। সম্প্রতি তাদের বাড়িতে পালিত একটি ছাগলের দুটি বাচ্চা হয়েছে। এখন সেই ছাগলের বাচ্চা দুটিকেই সন্তানবৎ লালনপালন করছেন এই দম্পতি।

কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার নন্দনালপুর ইউনিয়নের কাশেমপুর গ্রামের বাসিন্দা ওহাব ও লাইলী বেগম। প্রায় ২৫ বছর আগে এ দম্পতি সংসার পাতলেও তাদের নেই কোন সন্তান। তবে নিজেদের ছাগলছানার খৎনা দিয়ে ব্যতিক্রম এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন তারা।

সম্প্রতি তাদের ছাগলের দুটি বাচ্চা জন্ম হয়েছে। সেই বাচ্চা দুটোর খৎনা দিয়েছেন তারা। সাজিয়েছেন রঙিন কাপড়ে।

এ দম্পতি জানান, দীর্ঘ সংসার জীবনে অসংখ্য অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে দাওয়াত খেয়েছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত তাদের বাড়িতে কাউকে দাওয়াত দিয়ে খাওয়াতে পারেননি। তাই আত্মতুষ্টির জন্য ছাগলের খৎনা দিয়ে ব্যতিক্রম অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন এ দম্পতি।

শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার কুমারখালি উপজেলার নন্দনালপুর ইউনিয়নের কাশেমপুর গ্রামের দিনমজুর ওহাব আলীর বাড়িতে ছাগলের খৎনা অনুষ্ঠানে প্রায় ৩০০ আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা দাওয়াত খান।

এদিকে ব্যতিক্রম এমন আয়োজনের এমন খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ছাগলের বাচ্চা দুটি দেখতে উৎসুক জনতা তাদের বাড়িতে ভিড় করে।

এলাকাবাসী জানায়, ২৫ বছর আগে ওহাব ও লাইলী বেগম বিয়ে করেন। তাদের কোন সন্তান নেই। তাদের ছাগলের দুইটি বাচ্চা হয়েছে। সেই বাচ্চা দুইটির খৎনার আয়োজন করেছেন তারা। এজন্য বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৩০০ মানুষকে খাইয়েছেন তারা।

এ ব্যাপারে দিনমজুর ওহাব বলেন, ২৫ বছরের বিবাহিত জীবনে ঘরে কোন সন্তান জন্ম না নেয়ায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলাম। এবার আমার বাড়িতে ছাগলের দুটি বাচ্চা জন্ম নেয়। তাই আত্মতুষ্টির জন্য এমন আয়োজন করেছি।

এলাকাবাসী তানভীর হাসান বলেন, ছাগলের খৎনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে খুব আনন্দ পেয়েছি। অনুষ্ঠানে আত্মীয়-স্বজনদের এক মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে। জীবনে কখনো ছাগলের খৎনার অনুষ্ঠান দেখিনি। 

সোনালীনিউজ/এসআই