নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোই ১৫ গ্রামের চলাচলে ভরসা

  • মেহেরপুর প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২২, ০১:৩৮ পিএম
১৫ গ্রামের চলাচলে ভরসা

মেহেরপুর: মেহেরপুর সদর উপজেলার হিতিমপাড়া-গাঁড়াবাড়ীয়া গ্রামের ভৈরব নদীর উপর খেয়াঘাটে ৫ ০ বছরেও হয়নি ব্রিজ। বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন চলাচল করে গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ। প্রয়োজনের তাগিদে গ্রামের মানুষ নিজেরা বাঁশ খুটি দিয়ে সেতু তৈরী করে কোন রকমে চলাচলের ব্যবস্থা করেছে। নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোই ১৫ গ্রামের চলাচলে একমাত্র ভরসা।

মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করলেও আজও  চোখে পড়েনি জনপ্রতিনিধি বা সরকারী কোন কর্তৃপক্ষের। ফলে দুটি উপজেলার (সদর ও গাংনী) মানুষের সেতু বন্ধন অধরাই রয়ে গেছে। বাঁশের সেতুটি দিয়ে সদর উপজেলার হিতিমপাড়া, কুতুবপুর, তেরঘরীয়া, শোলমারী, ভিটাপাড়া, রামদাসপুর
শুভরাজপুর, কালিগাংনী, দিঘিরপাড়া, উজলপুর গাংনী উপজেলার গাড়াবাড়ীয়া, কাথুলী, সহগলপুর, রামকৃষ্ণপুর ধলা, রাধাগোবিন্দপুর ধলা, ১৫ টি গ্রামের  মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করে থাকে।

সেতুটির পশ্চিম পাশের অন্তত ৫ টি গ্রামের মানুষকে নিত্যদিন তাদের কৃষি পণ্য সংগ্রহ, বিপনন, চিকিৎসা ও শিক্ষার্থীদের স্কুল কলেজে যেতে হয়। পূর্ব দিকের গাড়াবাড়িয়া গ্রামে পূর্ব দিকেরও ৫টি গ্রামের মানুষকে নানা কাজে যাতায়াত করতে হয় নদীর অপর দিকের গ্রামগুলোতে।

এ বছর ভারি বর্ষনে বাঁশের সেতুটি পানির নিচে তলিয়ে গিয়েছিল। যার ফলে দীর্ঘ বাঁশের সেতুটি এখন দুর্বল কাঠামোর উপর দাঁড়িয়ে আছে। তার পরেও মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অতি প্রয়োজনে সেতটিু দিয়ে পারাপার করছে।

সেতুটি ভেঙ্গে গিয়ে যে কোন সময় মারাত্মক দূর্ঘটনা ঘটতে পারে এমন আশঙ্কা এলাকাবাসির।

মেহেরপুর শহর থেকে উত্তরাঞ্চলের সেতু গুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম সেতু হচ্ছে গাড়াবাড়িয়া- হিতিমপাড়া সেতু। ভৈরব নদী খননের পর ওই সেতুর আশপাশে কম গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় চারটি ব্রিজ নির্মাণ করা হলেও গাড়াবাড়িয়া-হিতিমপাড়া সেতুটি আজও নির্মাণ করা হয়নি।

এলাকার সংসদ সদস্য, এলজিইডি থেকে বার বার আশা দিলেও সেতুটি বাস্তবায়নে এগিয়ে আসেনি কেউ। বাঁশের সেতু দিয়ে যাতায়াতকারী শিক্ষার্থী মাবিয়া খাতুন ,লাভলী খাতুন, রাসেল আহমেদ  জানান, ব্রিজ না থাকায় বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুকি নিয়ে স্কুলে যাতায়াত করতে হয়। বর্ষার সময় সাঁকো ডুবে গেলে অনেক দুরের রাস্তা কাথুলী ব্রিজ দিয়ে স্কুল কলেজে যেতে হয়। তাতে খরচ বেশি হওয়া সহ পড়াশুনা মারাত্মকভাবে বিঘিুত হয়।

কুতুবপুর স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক রেজাউল ইসলাম জানান, উপজেলার দু’টি ইউনিয়নের ১৪ গ্রামের ছেলে-মেয়েদের উচ্চ শিক্ষার জন্য এই ব্রিজ দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। অথচ কম গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ব্রিজ হলেও এই ব্রিজটি আজও হলোনা।

এব্যাপারে কাথুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান রানা বলেন, শত বছরের পুরাতন এই খেয়া ঘাটটিতে আজও ব্রিজ নির্মাণ করা হয়নি। ব্রিজ নির্মাণ হলে দুই উপজেলার মানুষ এর সুফল ভোগ করবে। ব্রিজটি দ্রুত নির্মাণের দাবি করে তিনি বলেন এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ব্রিজ নির্মাণের। ব্রিজটি নির্মিত হলে শিক্ষার পাশাপাশি অর্থনেতিক উন্নয়ন হবে। পাশাপাশি জনগনের দূর্ভোগ কমবে।

এব্যাপারে মেহেরপুরের এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান বলেন, গাড়াবাড়িয়া-হিতিমপাড়া ব্রিজ নির্মাণে প্রপোজাল পাঠানো হয়েছিল। তবে ত্রুটিযুক্ত হওয়ায় তা ফিরে এসেছে। আমরা আবার সংশোধন করে প্রপোজালটি পাঠিয়ে দেব।

সোনালীনিউজ/এআই/এসআই