সেপটিক ট্যাংকে মা-ছেলের লাশ, স্বামীসহ আটক ৩

  • শেরপুর প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০২২, ০৮:৩৭ পিএম
নিহত রোকসানা বেগম ও তার ছেলে জুনায়েদ হাসান রাফিদ। ফাইল ছবি:

শেরপুর: শেরপুরে নিখোঁজের ৫দিন পর ভাড়া বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে মা-সন্তানের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে শহরের শিংপাড়া মহল্লা থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হচ্ছেন- রোকসানা বেগম (২৮) ও তার ছেলে জুনায়েদ হাসান রাফিদ (১১)। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে ঘাতক স্বামী মাশেকসহ (৩৮) ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। 

এদিকে খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ হান্নান মিয়াসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

জানা যায়, গত ২০০৮ সালে শেরপুর সদর উপজেলার ভাতশালা ইউনিয়নের মধ্যবয়ড়া গ্রামের জনৈক জালাল উদ্দিনের ছেলে অটোরিক্সাচালক মাশেকের সাথে বিয়ে হয় শেরপুর শহরের খরমপুর টিক্কাপাড়া মহল্লার সুরুজ মিয়ার মেয়ে রোকসানা বেগমের। বিয়ের পর তাদের সংসারে ২ সন্তান জন্মগ্রহণ করে। এদিকে বিয়ের পর থেকেই মাশেক মাদক সেবনে জড়িয়ে পড়ে। স্ত্রী রোকসানা বেগম স্থানীয় মাধবপুরস্থ ফ্যামিলি নার্সিং হোমে কাজ করে সংসারের জন্য কিছুটা আয়ের পথ এবং স্বামীকে সহযোগিতা করে আসছিল। তারপরও স্বামী প্রায় সময় স্ত্রী রোকসানা বেগমকে মারধর করতো। এ নিয়ে স্ত্রী রোকসানা বেগম মাশেকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা দায়ের করলেও পরবর্তীতে উভয় পরিবার মিমাংসা করে দেওয়ায় মামলা প্রত্যাহার করে নেন রোকসানা বেগম। 

তারা শহরের বিভিন্ন বাসায় ভাড়া থাকলেও স্বামী-স্ত্রীর কলহের কারণে বাসার মালিকরা তাড়িয়ে দিতো। পরে বেশ কিছুদিন ধরে শিংপাড়া এলাকার ধানচাল ব্যবসায়ী বাসেত খানের বাসা ভাড়া ছিল এই দম্পতি। এখানেও তাদের স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া বিবাদ থেমে থাকেনি।

এ অবস্থায় শনিবার (৩ ডিসেম্বর) রাত থেকে নিখোঁজ হয় রোকসানা ও তার চতুর্থ শ্রেণিপড়ুয়া ছেলে রাফিদ। ওই ঘটনায় রোকসানার বড় বোন সুফিয়া বেগম বাদী হয়ে বুধবার রাতে সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। তদন্তের এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার দুইটার দিকে শিংপাড়া মহল্লার ভাড়া বাসার সেপটিক ট্যাংক থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মা-ছেলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে রোকসানার স্বামী মাশেকসহ তার মা ও বোনকে আটক করা হয়।

এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জের ধরেই মা-ছেলেকে হত্যা করে লাশ গুমের উদ্দেশ্যে সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

সোনালীনিউজ/আইএ