টিউশনি করে জিপিএ-৫ পেলেও কলেজে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রাত্রী

  • নেত্রকোনা প্রতিনিধি: | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২৩, ০১:২২ পিএম

নেত্রকোনা: জেলার মদন উপজেলায় হতদরিদ্র পরিবারের মেধাবী ছাত্রী রাত্রী সরকার টিউশনি করে এবার এস এস সিতে জিপিএ-৫ পেলেও অর্থাভাবে কলেজে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছে। উচ্চশিক্ষার জন্য ভর্তি ও পড়ালেখার খরচের চিন্তায় বাবা-মা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার মদন শহীদ স্মরণিকা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে  ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে এসএসসিতে মানবিক শাখা থেকে  জিপিএ-৫ পেয়েছে রাত্রী সরকার। সে পড়ার ফাঁকে ফাঁকে টিউশনি করে নিজের খরচ নির্বাহ করেছে বলে শিক্ষার্থীরা জানায়।

রাত্রীর বাবা খুবই হতদরিদ্র । পড়া লেখার খরচ চাালাতে যখন হিমশিম খাচ্ছিল পরিবারটি ঠিক এ সময় পড়া লেখার পাশাপাশি অন্য শিশুদের প্রাইভেট পড়ানো শুরু করে রাত্রী সরকার। ভিটাবাড়ি ছাড়া আর কিছুই নেই। থাকার মত আছে একটি টিনসেটের চালা।

অন্যের জমিতে কৃষি কাজ ও বাজারে তরকারি বিক্রি করে সংসার চালান তার বাবা। অভাবের এই সংসারে কষ্ট করে পড়াশোনা করেছে রাত্রী সরকার। পৌর সদরের ৭ নং ওয়ার্ডের দিনমজুর দুই সন্তানের জনক বাবা স্বপন সরকারের এক মাত্র মেয়ে রাত্রী সরকার।

রাত্রী সরকার জানায়, ‘এতদিন নিজে প্রাইভেট পড়িয়ে পড়ালেখার খরচ জুগিয়েছি। বাবা বই কিনে দেওয়ারও সামর্থ্য ছিল না। স্যারেরা আমাকে বই দিয়ে অনেক সাহায্য সহযোগিতা করেছেন।

[204823]

এদিকে রাত্রীর ইচ্ছা একটি ভাল কলেজে ভর্তি হতে। ভালো কোনো কলেজে ভর্তি এবং পড়ালেখার খরচ চালানো রাত্রীর দিনমজুর বাবার পক্ষে সম্ভব নয়। অর্থের অভাবে আমার ভালো কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আমি ভালভাবে ভাল কলেজে ভর্তি হতে চাই। ভবিষ্যতে একজন ইউএনও হয়ে দরিদ্রদের সেবা করতে চাই। জানিনা সেই স্বপ্ন পূরণ হবে কি না। 

রাত্রীর মা দীপ্তি সরকার বলেন, ‘অভাব-অনাটনের মধ্যেও মেয়েটি অন্য বাচ্চাদের প্রাইভেট পড়িয়ে ভালো ফলাফল করেছে। ভাল ফলাফল শুনে খুশি হইছিলাম ঠিকই, কিন্তু এহন মেয়েটি ভাল কলেজে পড়ার জন্য কান্নাকাটি করতেছে। কেমনে তারে ভর্তি করব?  এমনেই তার বাবা দিন মজুর মাঝে মধ্যে তরকারির ব্যবসা করে কোনো মতে সংসার চলে। ভাল কলেজে ভর্তি করার সামর্থ্য আমরার নেই। 

প্রধান শিক্ষক আক্কাস উদ্দিন বলেন, মেয়েটি খুবই কষ্ট করে প্রাইভেট পড়িয়ে পড়াশুনা করে ভাল ফলাফল করেছে। রাত্রী হতদরিদ্র হওয়ায় স্কুল থেকে তার কোনো পরীক্ষার ফি সহ কোনো টাকা নেওয়া হতো না। গরিব পরিবারের সন্তান হয়েও ভালো রেজাল্ট করে এখন অর্থের অভাবে ভালো কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তার। জেলা কিংবা উপজেলা প্রশাসন, বিত্তবানেরা এগিয়ে এলে মেয়েটির শিক্ষার পথ সুগম হবে বলে আমার বিশ্বাস।

এআর