অবরোধে সুযোগ নিচ্ছেন সবজি ব্যবসায়ীরা!

  • যশোর প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২৩, ১০:৫৮ এএম

যশোর : অবরোধকে ইস্যু করে গাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির অজুহাতে কম দামে সবজি কিনছেন ব্যাপারীরা (পাইকারি ব্যবসায়ী)। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকরা। আবার একই অজুহাত দিয়ে এসব ব্যাপারীরাই সবজি বিক্রি করছেন বেশি দামে। হরতাল-অবরোধকে বাড়তি মুনাফা করার একটা ‘হাতিয়ার’ হিসেবে ব্যবহার করছেন এসব ব্যবসায়ীরা।

যশোর সদরের সাতমাইল দেশে সবজির অন্যতম বড় পাইকারি বাজার। এখানে প্রতিদিন উঠছে শীতকালীন সবজিসহ অন্যান্য তরকারি। কিন্তু বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের ডাকে গত ২৯ অক্টোবর থেকে থেমে থেমে হরতাল-সড়ক, নৌ ও রেলপথ অবরোধের কর্মসূচি চলছে। অবরোধে গাড়ি চলাচল কম, তাই ট্রাক ভাড়াও বেশি এই অজুহাত দেখিয়ে কম দামে সবজি কেনেন ব্যাপারীরা। তারা এ বাজার থেকে সবজি কিনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করেন। ব্যাপারীদের দাবি তাদের দ্বিগুণ ভাড়ায় সবজি পরিবহন করতে হচ্ছে।

[210724]

বুধবার (৮ নভেম্বর) সাতমাইল বাজারে প্রতিকেজি মুলা পাইকারি বিক্রি হয়েছে ১৫ থেকে ১৮ থেকে টাকা, শিম ৩০- ৪০, পটোল ১৫-২০, বেগুন ২৮ থেকে ৩০ টাকা। অথচ গত রবিবার হাটের দিন এসব সবজি এর চেয়ে কেজি প্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি বিক্রি হয়েছে। মুলা, শিম বিক্রি করতে আসা কৃষক শামসুর রহমান বলেন, ‘বাজারে এখন সবজির আমদানি প্রচুর। তাতে একটু দাম কমে আসে। কিন্তু অবরোধের কারণে গাড়ি ভাড়া দ্বিগুণ দেখিয়ে সবজির দাম আরও কমিয়ে দিয়েছে ব্যাপারীদের সিন্ডিকেট।’

কৃষক ওবায়দুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘গাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির অজুহাতে ব্যাপারীরা কৃষকের কাছ থেকে স্বাভাবিক দরের চেয়ে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে সবজি কিনছে। তারা এখান থেকে সবজি কিনে নিয়ে আবার একই অজুহাতে বেশি দামে বিক্রি করছে। অবরোধকে ইস্যু করে এই পাইকারি ব্যবসায়ীরা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি লাভ করছে।’

তবে অবরোধের কারণে গাড়ির সংখ্যা কম থাকলেও ভাড়া দ্বিগুণ নয় বরং তিন থেকে চার হাজার টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে বলে জানান বাজারে থাকা ট্রাকচালক খায়রুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এ সময়ে আমাদের ঝুঁকি নিয়ে যেতে হয় এবং সবজি বাইরের জেলার বাজারে পৌঁছে দিয়ে প্রায়ই খালি ট্রাক নিয়ে ফিরতে হয়। এ কারণে ভাড়া কিছুটা বেশি নিই।’

অতিরিক্ত মুনাফার বিষয়টি অস্বীকার করে সাতমাইল বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী হানিফ ব্যাপারী বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ে আমরা অন্যান্য খরচের সঙ্গে প্রতি কেজিতে গাড়ি ভাড়ার খরচ ধরি তিন টাকা। এখন অবরোধের সময় ধরছি তিন টাকা পঞ্চাশ পয়সা। অবরোধ-হরতাল এলে গাড়ি ভাড়া দ্বিগুণ হয়ে যায়। ঢাকায় তরকারি পাঠাতে স্বাভাবিক সময়ে ট্রাক ভাড়া লাগে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা, এখন লাগছে ৩০ হাজার টাকা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তরকারি পাঠাতে লাগত ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা, এখন লাগছে ৪০ হাজার টাকা।

হরতাল-অবরোধে গাড়িভাড়া দ্বিগুণ হয়েছে বলে পাইকারি ব্যবসায়ীরা যে দাবি করছেন তা সঠিক নয় বলে জানান জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা রবিউল হোসেন।

তিনি বলেন, ‘অবরোধকে ইস্যু হিসেবে নিয়েছেন ব্যাপারীরা। গাড়ি ভাড়া বেশির কথা বলে তারা সবজির দাম কমিয়ে সুযোগ নিচ্ছেন। গাড়ি ভাড়া কিছুটা বেড়েছে। তবে তারা যা বলছে তা নয়।’

এমটিআই