গাজীপুরে টিসিবির পণ্য বিক্রিতে কারসাজি, এক ব্যক্তির নামেই ১২ ডিলারশিপ 

  • গাজীপুর প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২৩, ০১:২৯ পিএম

গাজীপুর: শিল্প কারখানায় ভরপুর অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র গাজীপুর সিটি করপোরেশনে সরকারের খুলা বাজারে পণ্য বিক্রি কার্যক্রমে অংশ নিতে টিসিবির পণ্য বিক্রির জন্য একটি ওয়ার্ডে একজন ব্যক্তি তার আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের নামে অতন্ত্য কৌশলে ১২টি ডিলারশিপ ভাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।  

রোববার (১৯ নভেম্বর) সকালে সিটি করপোরেশন এলাকা ঘোরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। গাজীপুর মহানগরীর ১৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দারা অভিযোগ করে জানিয়েছেন, তাদের ওয়ার্ডের বাসিন্দা ফখরুল আলম রনি নগরীর ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হয়ে প্রভাব খাটিয়ে একাই নিয়ন্ত্রণ করেন অন্তত ২৫টি ডিলার পয়েন্ট। এবার তিনি অতন্ত্য সুকৌশলে প্রভাবশালী মহলের ক্ষমতা খাঁটিয়ে রনি তার মা, ভাই, মামা, মামাতো ভাই, আত্মীয় স্বজনের নামে কম পক্ষে ১২ টি ডিলার শিপ নিয়েছেন। ইতিমধ্যে এ বিষয়টি নিয়ে পুরো গাজীপুর জুড়েই ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে। 

জানাগেছে, এ রকম অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ইতিমধ্যে একজন ডিলার এ ঘটনায় টিসিবির চেয়ারম্যান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী, গাজীপুরের জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ওই অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন। 

গাজীপুর সদর উপজেলায় দেওয়া হয়েছে সাতটি লাইসেন্স সেখানে নগরীর ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যেই লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে আটটি। আর পুরো বাসন থানায় দেওয়া হয়েছে ১৫টি লাইসেন্স। রনির বন্ধু বান্ধব ও আত্নীয় স্বজনদের নামে এর মধ্যে ১২ টি ডিলার শিপ ভাগিয়ে নিয়েছেন।  

আর এসব ডিলার শিপ নিজে একাই নিয়ন্ত্রণ করেন রনি। মেসার্স ফিরোজা আলম এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ফকরুল আলম রনি নিজে। আর একই ওয়ার্ডের রনির মা ফিরোজা আলমের নামে ডিলারশিপ নিয়েছেন মেসার্স জারা সারা এন্টারপ্রাইজ নামে। মেসার্স হাকিম এন্টারপ্রাইজ তার মামার নামে এবং মেসার্স সুমন এন্টারপ্রাইজ, মিয়া এন্টারপ্রাইজ, মা-বাবা স্টোর, এসব প্রতিষ্ঠানে রনির মামাতো ভাইয়ের নামে টিসিবির লাইসেন্স নেন। এমন প্রায় ১২টি প্রতিষ্ঠানের নামে লাইসেন্স নিয়ে একজনই তা পরিচালনা করছেন।

বিভিন্ন গোপন সূত্র ও এলাকা বাসিরা জানিয়েছেন, রনির হাত অনেক লম্বা। তিনি পিসিবির শাখায় কলকাটি নাড়াতে পারেন। এজন্য তাই খুব কলাকৌশল অবলম্বন করেই একাই এত গুলো ডিলার শিপ নিজের নামে করিয়ে নিয়েছেন। তথ্য সূত্রে জানা যায়, মো.ফকরুল আলম রনির বড় এক ভাই যিনি টিসিবি বাণিজ্যিক শাখার পরিচালক। রনির আপন ফুফু টিসিবির সিএসএস শাখার একজন কর্মকর্তা, যিনি ডিলার নিয়োগের সকল কাগজপত্র প্রসেসিং করেন। তাদের পরিচয়ে রনি প্রভাব বিস্তার করে টিসিবির ডিলার বাণিজ্য করে যাচ্ছেন। রনি সিন্ডিকেটের আরও অন্তত ৩০টি ডিলারশিপের আবেদন টিসিবি দপ্তরে জমা আছে। এ সব বিষয়ে অভিযুক্তদের মোবাইল ফোনের কল লিস্ট ও ব্যাংক স্টেটমেন্ট তদন্ত করা হলে এর সত্যতা মিলবে বলে অভিযোগ উঠেছে। 

এসব বিষয়ে গাজীপুর জেলা টিসিবি দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট দের কাছে জানতে চাওয়া হলে। কেউ এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হোননি। 

এ দিকে এত অভিযোগের পরেও এ ব্যাপারে মেসার্স ফিরোজা আলম এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী ফকরুল আলম রনি বলেন, ডিলাররা যার যার লাইসেন্সে ব্যবসা করেন। একজন ঠিকাদারের পণ্য অন্য ঠিকাদার উত্তোলন করতে পারেন না। তবে প্রতিনিধির মাধ্যমে টিসিবির মালামাল উত্তোলন করতে পারেন। তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে এসব সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমাকে সমাজের কাছে নিচু করতেই এ ধরনের অপ্রচার চালানো হচ্ছে। 

সোনালীনিউজ/এমএস/এসআই