সন্তানকে পুড়িয়ে নিজের গায়েও আগুন দেন বাবা

  • হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৪, ০৪:২৯ পিএম

হরিরামপুর: সন্তানের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে নিজের শরীরেও আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন মহিন (৪০) নামের এক ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ভাড়ারিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হাবিল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

একমাত্র ছেলে তুহিনকে (৯) নিয়ে ভাড়ারিয়া গ্রামে থাকতেন মহিন। শিশু তুহিন ভাড়ারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র।

জানা গেছে, সংসারে অভাব অনটনের কারণে মহিনের স্ত্রী গত বছর কাজের সন্ধানে সৌদি আরব যান। সেখানে গিয়ে অন্য একজনকে বিয়ে করেন। এরপর থেকে মহিনের স্ত্রী সংসারে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেন। আজ সকালে তুহনি স্কুলে যাওয়ার উদ্দেশে প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এসময় শিশু তুহিনের গায়ে পেট্রোল ঢেলে গায়ে আগুন লাগিয়ে দের বাবা মহিন। তখন শিশু তুহিন দৌড়ে প্রতিবেশী লিপি আক্তারের বাড়ির উঠানে গেলে তিনি পানি দিয়ে আগুন নেভায়। ততক্ষণে তুহিনের মুখমণ্ডলসহ শরীরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে যায়।

এদিকে, স্থানীয়রা মহিনকে আটক করে মানিকগঞ্জ সদর থানায় বিষয়টি জানায়। আটকের সময় তুহিনের কাছ থেকে একটি চাপাতি উদ্ধার করে এলাকাবাসী। এরপর সুযোগ বুঝে নিজের গায়েও আগুন ধরিয়ে দেন মহিন। এর বাবা-ছেলেকে চিকিৎসার উদ্দেশে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

এ বিষয়ে প্রতিবেশি লিপি আক্তার জানান, সারা শরীরে আগুন জ্বলতে থাকা অবস্থায় শিশু তুহিন আমার বাড়ির উঠানে আসে। আমি পানি ঢেলে আগুন নেভায়। তখন মহিন আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। বিভিন্ন প্রকার গালিগালাজ ও আমার বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়াসহ প্রাণনাশের হুমকি দেন।

এদিকে মহিনের উপযুক্ত শাস্তির দাবি করে স্থানীয়রা জানায়, মহিন মাঝে মধ্যেই তার সন্তান তুহিনকে মারধর করত। কেউ এগিয়ে গেলে তাদের ওপর চড়াও হতেন। মহিন দীর্ঘদিন ধরে মাদকসেবন করতেন। তার ভয়ে প্রতিবেশীসহ এলাকার কেউ কথা বলার সাহস পেত না। আজ নিজ সন্তানে ওপর পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিল হোসেন বলেন, ‘বাবা-ছেলে দুজনেই অগ্নিদগ্ধ। ছেলের শরীরে আগুন দেওয়ার পরে বাবা তার নিজের শরীরেও আগুন দেন। বাবা ছেলে দুজনেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

এমএস