লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দাসের হাট হামিদিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুরাদ হাসানের অপসারণের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২১ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে দাসের বাজার সড়কে মাদ্রাসার সামনে দাঁড়িয়ে অপসারণের এক দফা দাবি জানিয়ে মানববন্ধন পালন করে তারা৷
এসময় বাজারের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে। এতে শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয় এলাকাবাসী, অভিভাবক, শিক্ষক এবং সাবেক শিক্ষার্থীরাও অংশ নেয়।
আন্দোলনকারীরা অধ্যক্ষ মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, আর্থিক দুর্নীতি, নিয়োগে অনিয়ম, পূর্বের কমিটির মাধ্যমে নিজের প্রভাব-আধিপত্য বিস্তার, মাদ্রাসার অব্যবস্থাপনা, নিন্মমূখী শিক্ষার মান ও বিয়ের নামে নারীদের সাথে প্রতারণার অভিযোগ তোলেন।
এর আগেও একই দাবিতে গত ১৬ জুলাই বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- জনতা ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদল সভাপতি কামরুল ইসলামো শামিম, চরশাহী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ওমর ফারুক হৃদয় চৌধুরী, সাবেক শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তার, সাইফুল ইসলাম, আলিম প্রথম বর্ষের ছাত্র আকরাম হোসেন, ফরহাদ হোসেন ও ছাত্রী জান্নাতুল আফরিন প্রমুখ।
[253167]
এদিকে, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে গত বৃহস্পতিবার মাদ্রাসা থেকে সটকে পড়েন অধ্যক্ষ। এরপর থেকে তিনি আর মাদ্রাসায় আসছেন না। অনুপস্থিত রয়েছেন বলে জানিয়েছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে, তার অনিয়মের তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
এতে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, অধ্যক্ষ অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে জড়িত। তিনি নিজে অনৈতিক সুবিধা দিয়ে ওই পদে নিয়োগ পেয়েছেন। পরে শিক্ষক ও অন্যান্য পদে নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। তার কারণে আমরা শিক্ষার্থীরা হয়রানির শিকার হচ্ছি।
তাদের অভিযোগ, শারিরীক শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক হারুনুর রশিদ প্রায় ৫ মাস আগে মারা যান৷ কিন্তু তার নামে এখনো বেতন বরাদ্দ হচ্ছে।
মাদ্রাসা অধ্যক্ষ মুরাদ হাসান বলেন, আমার বিরুদ্ধে একটি পক্ষ ষড়যন্ত্র করছে। আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ সঠিক নয়৷ আমার কাছে অর্থের হিসেব রয়েছে। মাদ্রাসায় অনুপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মাদ্রাসার কাজে ডিসি অফিসে আছি।
মাদ্রাসায় অনুপস্থিতির বিষয়ে মাদ্রাসায় গিয়ে জানা গেছে, আন্দোলনের পর থেকে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির শঙ্কায় তিনি মাদ্রাসায় যাচ্ছেন না৷ এমনটিই জানিয়েছেন মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল মো. ফখর উদ্দিন৷
ফখর উদ্দিন জানান, শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের কারণে যাতে মাদ্রাসার পরিবেশ নষ্ট না হয়, সে জন্য আমরা শিক্ষকরা বসে মিটিং করেছি। অধ্যক্ষ কয়েকদিন থেকে আসছেন না। তবে তিনি মাদ্রাসায় আসলে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠবেন৷ মাদ্রাসায় শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফেরাতে আমরা শিক্ষক, অভিভাবক, স্থানীয় গণ্যমান্য লোকজন এবং শিক্ষার্থীদের নিয়ে কমিটি গঠন করেছি।
এ বিষয়ে জানতে মাদ্রাসার সভাপতি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জামশেদ আলম রানার মোবাইল ফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ না করায় বক্তব্য জানা যায়নি।
এআর