নূর-তারেকসহ ৪ জনকে মারধর করতে চেয়েছিলো সহযোগীরা

  • নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০১৭, ১০:০৭ পিএম

নারায়ণগঞ্জ: চাঞ্চল্যকর সাত খুন মামলার রায় ঘোষণার দিন আদালতের এজলাসে নূর হোসেন, তারেক সাঈদসহ চার আসামিকে গণধোলাই ও নাশকতার পরিকল্পনা ছিল সাধারণ আসামিদের। গোয়েন্দাদের এমন তথ্যের ভিত্তিতে সেদিন আদালতপাড়ায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়। প্রস্তুত রাখা হয় বুলেট প্রুফ গাড়ি (সাঁজোয়া যান), জল কামান ও ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট।

রায় ঘোষণার আগে আসামিদের জুতা, মোজা ও হাতঘড়ি খুলে রাখা হয়। তা ছাড়া মামলার প্রধান চার আসামিকেও কাঠগড়ার বাইরে পুলিশ বেষ্টনীতে রাখা হয়। আদালতপাড়ায় আতঙ্ক না ছড়াতে গোয়েন্দাদের এমন তথ্য শুধু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়া আর কেউ জানতে পারেনি। ফলে রায় ঘোষণার তিন দিন পর সেদিনের কঠোর নিরাপত্তার বিষয় পুলিশ সদস্যদের মুখ থেকে প্রকাশ পেয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশ সদস্যরা জানান, মামলার সাক্ষ্য চলার সময় খাবার নিয়ে মারামারির ঘটনা ঘটে এবং নূর হোসেনকে থাপ্পড় দেয়া হয়। সেদিন থেকেই গোয়েন্দারা সাধারণ আসামিদের দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখেন। এ ছাড়া কারাগারে আসামিদের কথোপকথনে আড়িপাতা হয়। ফলে রায়ের দিনে আসামিদের পরিকল্পনার বিষয়টি তারা জানতে পারেন।

সূত্রটি আরো জানায়, ১৬ জানুয়ারি সকালে নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের জনাকীর্ণ এজলাসে বিচারক রায় পড়ার সময় নূর হোসেনের দুই সহযোগী কাঁদতে শুরু করলে নূর হোসেন কাঠগড়ার বাহির থেকে ‘কিছু হবে না’ বলে তাদের সাত্ত্বনা দেন। এতে নূর হোসেনের ওপর ফুঁসে উঠে তার সহযোগীরা।

এ মামলার আসামি র‌্যাবের সাবেক কর্মীরা তাদের ‘এ পরিণতির জন্য’ সিনিয়র তিন কর্মকর্তাকে দূষতে থাকেন। এ সময় তাদের একজন তারেক সাঈদকে গালাগাল করেন। উত্তেজিত ওই কর্মীরা ওই সময় তিন কর্মকর্তাকে কাছে পেলে গণধোলাই দেয়ার সম্ভাবনা ছিল। রায় ঘোষণার পর প্রিজন ভ্যানে উঠানোর সময় নূর হোসেনের গাড়িচালক মিজানুর রহমান দিপু সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে জুতা ছোড়ার চেষ্টা ও গালাগাল করেন।

ফতুল্লা মডেল থানার ওসি কামাল উদ্দিন বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্যে শঙ্কা যাই থাক রায়ের দিন কেউ কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর সুযোগ পায়নি। আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণার আগে থেকে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করা ও আসামিদের নিরাপত্তার বিষয়ে প্রস্তুতি নিয়েছি।’

তিনি জানান, জেলা পুলিশ সুপার মাইনুল হকের নেতৃত্বে ও দিকনির্দেশনায় নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছিল। সেদিন যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে জেলা পুলিশ প্রস্তুত ছিল। ওসি কামাল উদ্দিন আরো বলেন, প্রত্যেক আসামির জুতা এজলাসের বাইরে খুলে রাখা হয়। নূর হোসেনসহ র‌্যাবের চাকরিচ্যুত তিন কর্মকর্তাকে কাঠগড়ার বাইরে পুলিশ বেষ্টনীতে রাখা হয়েছিল।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন