স্কুলছাত্রীর ধর্ষণ দৃশ্য মোবাইলে ধারণ

  • যশোর প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৭, ১০:০৩ পিএম

যশোর: যশোরের মনিরামপুরে ৯ম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণের পর মোবাইলে দৃশ্য ধরণের অভিযোগ উঠেছে। গত ২৯ জানুয়ারি উপজেলার রাজগঞ্জ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

‘ধর্ষক’ যুবকের বাবা পুলিশ সদস্য হওয়ায় ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে উপজেলার রাজগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ি। মামলা নেয়ার পরিবর্তে স্থানীয়ভাবে মিমাংসা করার পরামর্শ দেয়া হয় ধর্ষিতার পরিবারকে। এক পর্যায়ে একটি মানবাধিকার সংস্থার তৎপরতায় পুলিশ ৯ ফেব্রুয়ারি ওই মেয়েটিকে হেফাজতে নিয়ে আদালতে নিলে বিচারক তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

এদিকে ঘটনার প্রতিবাদে ও জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবিতে রোববার ( ১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে একটি মানববাধিকার সংগঠন যশোর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করে।

স্কুলছাত্রীর ভাষ্য অনুযায়ী, গত ২৯ জানুয়ারি উপজেলার হানুয়ার গ্রামের পুলিশ সদস্য হাবিবুর রহমানের ছেলে রুমান, মনোহরপুর গ্রামের আজিজুর রহমানের ছেলে রয়েল ও একই গ্রামের মোর্শেদের ছেলে রুবেল তাকে অপহরণ করে নলতা (হাকিমপুর) গ্রামের জনৈক কবিরাজ সাখাওয়াতের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে ধর্ষণ করাসহ মারপিট করে  রুমান এবং রুবেল ও রয়েল।

এসময় অচেতন অবস্থায় স্থানীয় মেম্বর মিজানুর রহমান তাকে উদ্ধার করে রাজগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই আইন উদ্দিনকে খবর দেয়। কিন্তু প্রধান অভিযুক্ত রুমানের বাবা পুলিশে চাকরি করায় স্থানীয় ফাঁড়ির পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে মনিরামপুর থানায় ঘটনাটি জানানো হলে ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ (ওসি) বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেন।

এক পর্যায়ে পুলিশ গত ৭ ফেব্রুয়ারি এ ঘটনায় মামলা করেন। তবে ধর্ষণের বিষয়টি এড়িয়ে পুলিশ নির্যাতিত মেয়েটির মাকে দিয়ে ৩ জনের বিরুদ্ধে থানায় অপহরণের মামলা করেন। পরে ‘ধর্ষক’ ও তার ২ সহযোগির মোবাইলে ধারণ করা ধর্ষণের ভিডিও ফুটেজ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় একটি মানবাধিকার সংস্থা ধর্ষিতার পরিবারের সহায়তায় এগিয়ে আসে। সংস্থাটি ধর্ষণের মামলা করাতে তাকে নিয়ে থানায় যায়। এসময় ভিডিও ফুটেজ দেখে ওসি বিপ্লব কুমার নাথ মেয়েটিকে হেফাজতে নিয়ে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে এবং জবানবন্দি রেকর্ড করতে ৯ ফেব্রুয়ারি আদালতে পাঠায়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মনিরামপুর থানার ওসি বিপ্লব কুমার নাথ জানান, পুলিশ ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার বা গাফিলতি করার চেষ্টা করেনি। ঘটনা স্থানীয় পর্যায়ে মিমাংসার চেষ্টা করে স্থানীয় মেম্বার। তাই দেরি হয়। এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, অভিযুক্তের বাবা পুলিশের চাকরি করেন কিনা তা জানা নেই।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম