জমি রেজিস্ট্রির জন্য ২৮ বছর ঘুরছেন মুক্তিযোদ্ধা

  • যশোর প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ২০, ২০১৭, ০৩:২০ পিএম

যশোর: ভবনসহ জমি কিনতে টাকা পরিশোধ করেও রেজিস্ট্রির জন্য ২৮ বছর ধরে ঘুরছেন যশোরের হারুনার রশিদ বাদশা নামে এক মুক্তিযোদ্ধা। এজন্য শালিস বৈঠক হলেও টাকা গ্রহীতা জমি রেজিস্ট্রি করে দিতে চেয়েও দেননি বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।

শেষ পর্যন্ত ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা হারুনার রশিদ বাদশা আদালতে মামলা করেন। শনিবার (২০ মে) যশোর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ দাবি করেন।

লিখিত বক্তব্যে হারুনার রশিদ বাদশা বলেন, যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের সাবেক বেনাপোল বাসস্ট্যান্ডে ৫৭৯ দাগের ১১ দশমিক ৬৯ শতকের উপর ভবনটির নাম হোটেল শাহারিয়ার। ভবন ও জমির মালিক ১৯৮৮ সালে আবদুল মজিদ খান তার বাবার চিকিৎসা ও হাউজ বিল্ডিং করপোরেশনের লোন পরিশোধের জন্য ৫ লাখ টাকায় বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেন।

আমি সম্মত হয়ে ১৯৮৮ সালের ২০ নভেম্বর থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে তাকে ৪ লাখ ৩ হাজার ৫০০ টাকা দিয়েছিলাম। অবশিষ্ট ৯৬ হাজার ৫০০ টাকা জমি রেজিস্ট্রির দিন দিতে চাই। কিন্তু জমি রেজিস্ট্রি করে দিতে টালবাহানা করেন জামাল। মাসের পর মাস তার পিছু ঘুরেছি। এই পরিস্থিতিতে ১৯৯৫ সালের ১০ ডিসেম্বর এলাকায় শালিস বৈঠক ডাকা হয়। সেখানে জামাল অতিরিক্ত টাকা দাবি করলে শালিসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বকেয়া ৯৬ হাজার ৫০০ টাকারসহ অতিরিক্ত সাড়ে ৮ হাজার টাকা অর্থ্যাৎ ১ লাখ ৫ হাজার টাকা দিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

সেই অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে ১ লাখ ৪ হাজার টাকা দেয়া হয়। তারপরও জমি রেজিস্ট্রি করে দেয়নি। তখন ২০০৮ সালের ১৮ জুন আদালতে মামলা করি। সেই থেকে মামলা পরিচালনা করে আসছি। এরই মধ্যে জামাল খান মারা যায় এবং এখন মামলার দেখভাল করছেন তার স্ত্রী ও সন্তানরা। তারা এখন আমার বিরুদ্ধে জমি দখলের মিথ্যা অভিযোগ করে সমাজে আমার সম্মানক্ষুন্নের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বাদশা আরও বলেন, ‘অভিযুক্ত জামাল আহমেদ খান একজন রাজাকার। সাংবাদিক রুকুনউদ্দৌল্লাহ’র লেখা ‘মুক্তিযুদ্ধে যশোর’ বইয়ের ১৬৩ নাম্বার পৃষ্ঠায় রেলগেট এলাকার রাজাকারের তালিকায় তার নাম রয়েছে। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধারা যেসব রাজাকারের তালিকা তৈরি করেছে সেই বইয়ের ১৪৯ পৃষ্ঠায়ও জামালের নাম রয়েছে। তাই এই পরিবারের হাতে যেন একজন মুক্তিযোদ্ধা নির্যাতিত না হয় এজন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করা হয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক জেলা কমান্ডার আবদুর রাজ্জাক, মুক্তিযোদ্ধা ও সমাজসেবক হাসনুর করিম কামাল, সিরাজুল ইসলাম, যশোর পৌর ৩ নাম্বার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নূর ইসলাম, জেলা যুবলীগ নেতা কামরুজ্জামান মামুন, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মেসবাহ উদ্দিন প্রমুখ।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন