মনু নদের ভাঙন

ত্রাণ না পেয়ে পানিবন্দি মানুষের হাহাকার

  • মৌলবীবাজার প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুন ৬, ২০১৭, ১০:২৯ পিএম
মনু নদীর ভাঙনে পানিবন্দি কুলাউড়া ও রাজনগর উপজেলার মানুষ

মৌলভীবাজার: মনু নদের প্রতিরক্ষা বাঁধে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া ও রাজনগর উপজেলায় সৃষ্ট ভাঙন দিয়ে পানি প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। এদিকে দুই উপজেলার হাজার হাজার দুর্গত পরিবারের মানুষের মাঝে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে সামান্য চিড়া গুড় ছাড়া সরকারি কোনো ত্রাণই পৌঁছায়নি। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের মাঝে চলছে হাহাকার।

এদিকে বন্যার পানি না নামায় মনু নদের প্রতিরক্ষা বাঁধে আশ্রয় নিচ্ছে মানুষ। তবে অধিকাংশ বন্যা কবলিত মানুষ নিজ বাড়িতে পানিবন্দি অবস্থায় বসবাস করছেন।

কুলাউড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শিমুল আলী জানান, জেলা প্রশাসক থেকে প্রাপ্ত নগদ অর্থ ও চাল মঙ্গলবার (৬ জুন) উত্তোলন করা সম্ভব হয়নি। তবে প্রাপ্ত এই ত্রাণ কুলাউড়া উপজেলার ক্ষতিগ্রস্থ শরীফপুর, হাজীপুর ও টিলাগাঁও ইউনিয়নে বিতরণ করা হবে।

টিলাগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মালিক ও শরীফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জুনাব আলী জানান, স্থানীয়ভাবে ইউনিয়নের পক্ষ থেকে কিছু শুকনা চিড়া ও গুড় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। তবে কোনো সরকারি ত্রাণ এখনো পৌঁছায়নি।

হাজীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত বাচ্চু জানান, ভাঙন সৃষ্টি হওয়ায় পানি ঢোকায় ইউনিয়নের ১৫-২০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, সবাই শরীফপুর ইউনিয়ন নিয়ে চিন্তিত, কিন্তু হাজীপুরের বানভাসী মানুষের কথা কেউ ভাবছে না। বিষয়টি তিনি কুলাউড়া উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করেছেন।

রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাজমুল হক সেলিম ও টেংরা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. রিপন মিয়া জানান. নিজস্ব অর্থায়নে আমরা মানুষকে যতটা পারছি সহায়তা করার চেষ্টা করছি। এখনো পর্যন্ত সরকারি কোনো ত্রাণ পাইনি।

কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌধুরী মো. গোলাম রাব্বি জানান, উপজেলায় দুর্গত মানুষের জন্য মাত্র ৬ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্ধ পেয়েছি। এই ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের তাদের অবস্থান থেকে দুর্গত মানুষকে সহায়তার জন্য বলা হয়েছে। কুলাউড়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে টিলাগাঁও ইউনিয়নে ৩০০ পরিবারকে ত্রাণ হিসেবে শুকনো চিড়া, গুড় ও পানি বিতরণ করা হচ্ছে।

কুলাউড়া উপজেলা চেয়ারম্যান আসম কামরুল ইসলাম জানান, সরেজমিন নিশ্চিন্তপুর ও মিয়ারপাড়া ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার মানুষের জন্য অল্প পরিমাণ ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম জানান, তাৎক্ষণিকভাবে আমার হাতে যা ছিলো, অর্থাৎ ৪০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের জন্য বরাদ্ধ দিয়েছি। এই বরাদ্ধ পাবে মনু ও ধলাই নদীর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ। আরো লিখছি, বরাদ্ধ এলেই দ্রুত তা দেয়া হবে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম