আটঘরে জমজমাট নৌকার হাট

  • মো. আমিনুল ইসলাম, ঝালকাঠি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ১৭, ২০১৭, ১১:৪১ এএম

ঝালকাঠি: বর্ষা মৌসুমে জমে উঠেছে ঝালকাঠির সীমান্তবর্তী আটঘর নৌকার হাট। দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে সর্ববৃহত এই হাটে চলছে জমজমাট বেচাকেনা। যুগ যুগ ধরে চলে আসা এ ব্যবসা এলাকার মানুষের কাছে একটি অন্যতম ঐতিহ্য। নয়নাভিরাম নৌকার পসরা চোখে না দেখলে মনেই হবে না জলে-ডাঙায় এক সঙ্গে এত নৌকার সমারোহ ঘটতে পারে।

ঝালকাঠি সদর উপজেলার ২০ গ্রামের দেড় হাজারের বেশি পরিবার কয়েক যুগ ধরে নৌকা-বৈঠা তৈরি ও বিক্রি করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করছে।


সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ অঞ্চলের কৃষিজীবী মানুষের জীবন-জীবিকার প্রধান বাহনই হচ্ছে নৌকা। আর তাই নৌকা বেচাকেনাকে কেন্দ্র করে সন্ধ্যা নদীর শাখা খালে যুগের পর যুগ বসছে নৌকার হাট।

প্রতি শুক্রবার এই হাট বসে। স্বরূপকাঠির আটঘর, আদমকাঠি, জিন্দাকাঠি, বাস্তকাঠি, দলহার, আতাপাড়া, ইন্দুরকানি, কুড়িয়ানা, ঝালকাঠির ভিমরুলি, শেখেরহাট, শতদশকাঠি, কাপুড়কাঠি, কৃর্ত্তিপাশা, জগদীশপুর, শাখাকাচি, কাচাবালিয়া, পোষন্ডা ও গাগর এলাকাজুড়ে গড়ে উঠেছে এই নৌ সাম্রাজ্য।

ভিমরুলি গ্রামে নৌকার মিস্ত্রি ও ব্যবসায়ী নারায়ণ চন্দ্র জানান, এই হাটে ১ হাজার ৮০০ থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত প্রকারভেদে নৌকা বিক্রি হয়। জেলার বাইরে থেকে পাইকারদের বড় বড় ট্রলার এসে একসঙ্গে ১৮-২০টি নৌকা কিনে তারা অন্য জেলায় নিয়ে বিক্রি করে। এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা যেহেতু নৌকায় করে খালের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য করে, সে কারণেই ডিঙি নৌকার চাহিদা বেশি। জ্যৈষ্ঠ থেকে কার্তিক-এই ছয় মাস আটঘর খালে প্রতি শুক্রবার ক্রেতা-বিক্রেতার নৌকা ও বৈঠা বেচাকেনা চলে।

বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন জানান, প্রতিবছর জ্যৈষ্ঠ মাস থেকে নৌকা তৈরির কাজ শুরু করেন, যা চলে আশ্বিন মাসের শেষ পর্যন্ত। কিন্তু কাঠ সঙ্কট, কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি ও গ্রামাঞ্চলে নৌকা ব্যবহার কমে যাওয়ার কারণে কারিগররা আগের মতো নৌকা তৈরিতে আগ্রহ পাচ্ছেন না।

অন্যদিকে ইজারাদারদের অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসার সম্পূর্ণ মুনাফা ভোগ করতে পারছেন না কারিগর ও বিক্রেতারা। এ অঞ্চলের নৌকা ব্যবসায়ীদের দাবি, তাদের যুগ যুগ ধরে চলে আসা ঐতিহ্যবাহী নৌহাট সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে নেয়া হোক সরকারি-বেসরকারি নানা উদ্যোগ।

ঝালকাঠি বিসিক কর্মকর্তা জালিছ মাহমুদ বলেন, বেসরকারী এনজিওদের ঋণ সহজে পাওয়া যায় বাড়িতে বসে। আর সরকারী ঋণ নিতে অনেক সময় লাগে, জেলা অফিস অনেক দুরে তাই যোগাযোগের অসুবিধা হয়। ঝালকাঠি জেলার আওতায় নৌকা তৈরির মিস্ত্রিরা ঋণ-সহায়তা নিতে এলে সহজ শর্তে ঋণ সহায়তা দেয়ার আশ্বাস দিলেন ঝালকাঠি বিসিক কর্মকর্তা জালিছ মাহমুদ।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন