যে কারণে বসত বাড়িতে এত গোখরা সাপ

  • রাজশাহী প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ১৮, ২০১৭, ০৬:৫৮ পিএম

ঢাকা: সম্প্রতি রাজশাহীর বুধপাড়া এলাকায় একটি কাচা বাড়ির বসত ঘরের ইঁদুরের গর্ত থেকে মারা হয় ২৭টি গোখরা। এর একদিন পর তানোরের একটি বাড়ির রান্না ঘরের ইঁদুরের গর্তে মিলে ১২৫টি গোখরা। 

এরপর দেশের বিভিন্ন এলাকায় বসত বাড়িতে পাওয়া যায় শতশত গোখরা ও সাপের ডিম। কিন্তু হঠাৎ কেন বসত বাড়িতে এত  গোখরা সাপের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে- এমন প্রশ্ন মুখে মুখে। 

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও প্রাণী বিশেষজ্ঞ বিধান চন্দ্র দাস বলেন, সাপের প্রজনন কাল এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত। এর মধ্যে তারা ডিম পাড়ে। একটি সাপ ৩০ থেকে ৩৫টি ডিম পাড়তে পারে। প্রায় ৪০ থেকে ৫০ দিনের মধ্যে বাচ্চা ফোটায়। সাপের বাচ্চা ফোটাতে ডিমের উপর মা সাপ বেঁড়ি পাকিয়ে বসে থাকে। অনেক সময় মা সাপ ডিম পেড়ে চলে গেলেও মাটির উষ্ণতায় ডিম ফোটে বাচ্চা বের হয়।

অধ্যাপক বিধান চন্দ্র দাস বলেন, ক্ষেতে অতিরিক্ত বিষ প্রয়োগের কারণে মাঠে ইঁদুর থাকতে পারছে না। আর ঝোপ-ঝাড় কমে যাওয়ার কারণে ইঁদুর কাঁচা বসত বাড়িতে গর্ত করে বাসা বাঁধছে। ইঁদুরের পিছু নিয়ে বসত বাড়িতে উঠে আসছে সাপও। বিশেষ করে তাদের প্রজনন মৌসুমে মাঠ-ঘাটে ডিম পাড়ার স্থান না পেয়ে বসত বাড়িতে উঠে গিয়েছে সাপ বলে মনে করেন এই প্রাণীবিদ।

তিনি বলেন, সাপের উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে নিজেদের বসত বাড়ির আশেপাশে যতোটা সম্ভব পরিস্কার রাখতে হবে। বাড়ির আশেপাশে যদি কোন গর্ত থাকে তাহলে তা ভরাট করতে হবে। এভাবে সাপের উপদ্রব থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভাব বলে জানান তিনি।

অধ্যাপক বিধান চন্দ্র বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য সাপ অপরিহার্য প্রাণী। তাকে কোনো ভাবেই মেরে ফেলা যাবে না। সাপ আঘাত না পেলে ছোবল দেয় না। আতঙ্কিত না হয়ে সাপের উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে কৌশলী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এ প্রাণীবিদ।

রাজশাহীর রাজবাড়ী স্নেক ফার্মের কর্ণধার রনজু বিশ্বাস বলেন, গোখরা সাপ বছরে একবার ডিম দেয়। এরা বছরে একবার ডিম দিলেও একবার মিলনে দুই বছরে দুই বার ডিম দিতে পারে। নিরাপদ যায়গা হিসেবে সাপ বাড়ির ইঁদুরের গর্তে ডিম ফোটায় বলেন তিনি।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেএ