ডিবি পরিচয়ে অপহরণ, মুক্তিপন আদায়

  • গাজীপুর প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০১৭, ০৯:০৩ পিএম

গাজীপুর: কালিয়াকৈরে মনির হোসেন (৩৫) নামে এক যুবককে ডিবি পরিচয়ে মারধর করে নগদ বিশ হাজার টাকা ও দুই ভরি ওজনের এটি চেন এবং দু’দিনের মধ্যে আরো দুই লাখ টাকা মুক্তিপন দেওয়ার শর্তে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

শনিবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার উত্তর তালতলী পশ্চিম পাড়া এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় মনির হোসেন বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় দ্ইুজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

ঘটনা ও মামলা সূত্রে জানা যায়, সকালে ৬/৭ জন যুবক ডিবি পরিচয়ে তালতলী এলাকার স্থানীয় রহিজ উদ্দিনের বাসায় উপস্থিত হয়। এসময় রহিজ উদ্দিনের ছেলে মনির হোসেন ঘরের ভেতর থেকে লোকজনের কথার আওয়াজ শুনতে পেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে। 

সঙ্গে সঙ্গে ডিবি পরিচয়ধারী একযুবক বলে উঠে ‘আসামী বেরিয়ে এসেছে ওকে নিয়ে চল’। মনির যেতে না চাইলে তাকে মারধর করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে মনিরের বৃদ্ধ বাবা-মা ও তার মেয়ে বাধা প্রদান করলে তাদেরকেও মারধর করে মনিরকে ধরে নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে মনিরের বৃদ্ধ বাবা রহিজ উদ্দিন (৬০) জানান, তিনি ফজরের নামাজ পরে বাড়ির উঠানে বসে আছেন, তার স্ত্রী ভাত পাক করছেন। এমন সময় সকাল ৮টার দিকে ৬/৭ জন যুবক তাদের বাড়িতে এসে বলে আপনার ছেলে কোথায় আমরা ডিবির লোক তাকে ডাকেন। 

পরে ছেলে ঘর থেকে বেরিয়ে এলে তাকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আমি বাধা প্রদান করি। পরে আমাকে ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দিয়ে ছেলেকে মারধর করতে থাকে। আমার স্ত্রী মরিয়ম বেগম (৫৫) এগিয়ে আসলে তার পায়ে একটি বারি মেরে বলে যদি ছেলেকে ভালমত ফেরত পেতে চান তাহলে ৫লক্ষ টাকা নিয়ে আসবেন। তানাহলে আপনার ছেলেকে এমন মামলায় চালান দেব তখন বুঝবেন। 

এমন সময় মনির হোসেনের মেয়ে ৮ম শ্রেনীর ছাত্রী মুন্নি আক্তার এগিয়ে এসে বলে আমার বাবাকে আপনারা কই নিয়ে যান আমার আব্বা কিরছে? এসময় সবুজ নামের এক যুবক তার গলায় থাকা একটি স্বর্নের চেন টানদিয়ে ছিরে নিয়ে যায় এবং বলে বেশি কথা বলবি না সবাইকে কিন্তু পুলিশে দিমু।

ঘটনার শিকার মনির হোসেন বলেন, আমাকে তালতলী এলাকা থেকে উপজেলার সুরিচালা এলাকার মো. হারিজ উদ্দিনের ছেলে সবুজের রুমে নিয়ে যায়। সেখানে নেয়ার পর আমাকে নানা ভাবে অত্যাচার করতে থাকে। একপর্যায়ে তারা আমাকে সিগারেটের আগুন দিয়ে আমার দুপায়ে ছেকা দেয় এবং বলে বাড়িতে ফোন করে দুই লাক্ষ টাকা আন। তানাহলে তুকে মেরে ফেলবো। পরে তাদের হাতে পায়ে ধরে কাদঁতে থাকি আর বলি আমাকে ছেড়ে দেন আমি গরীব মানুষ এতো টাকা আমি কোথায় পাবো। এর চেয়ে ভাল আমাকে মেরেই ফেলেন কারন আপনাদের দাবিকৃত টাকা কখনোই আমার পরিবারের পক্ষে পরিশোধ করা সম্ভব না। এসময় সবুজ বলে ঠিক আছে তরে দুটি শর্তে ছেড়ে দিতে পারি এক হলো কথাটা কাউকে বলতে পারবি না। দুই- দু’দিনের মধ্যে ২লাখ টাকা পরিশোধ করবি তানাহলে ধরে এনে জানে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয়। পরে আমি প্রানের ভয়ে শিকার করলে তারা আমাকে ছেড়ে দেয়। যুবদের মধ্যে সবুজ ও সিনাবহ এলাকার জুয়েল মাষ্টারের ছেলে উদ্দমকে চিনতে পারি।

এ বিষয়ে কালিয়াকৈর থানার ডিউটি অফিসার এসআই ফাতেমা আক্তার জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

সোনালীনিউজ/জেএ