এক রাতেই গুড়িয়ে দিলো শিক্ষক সমিতির ভবন

  • নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৪, ২০১৭, ০১:০৪ পিএম

বরিশাল: জেলার হিজলায় রাতের আধারে শিক্ষক সমিতির একটি ভবন গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রত্যক্ষ মদদে গত সোমবার গভীর রাতে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। এর ফলে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে উপজেলার ৮৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ শতাধিক শিক্ষক বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন।

হিজলা উপজেলা শিক্ষক সমিতির নেতারা জানিয়েছেন, সমিতির পাশের বিসিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মানের জন্য বরাদ্দকৃত ৭০ লাখ টাকা আত্মসাত করার লক্ষ্যে শিক্ষক সমিতির ভবন গুড়িয়ে দেয়া হয়। এ কাজের নেতৃত্ব দিয়েছেন বড় জালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং বিসিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শাহাবুদ্দিন পন্ডিতসহ তার অনুসারীরা।

সোমবার গভীর রাতে বিসিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শাহাবুদ্দিন পন্ডিতের নেতৃত্বে শ্রমিকরা সমিতির সামনের গেটে তালা লাগিয়ে ভবনের ভিতরের দেয়াল ভেঙ্গে ফেলে। সেখানে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি এবং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন বছরের বই ছিল। খবর পেয়ে সেখানে শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক শিক্ষক জহিরুল ইসলাম ছুটে গেলে তাকে লাঞ্চিত করা হয়।

হিজলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নেতা শেফালী মাহামুদ জানান, সোমবার গভীর রাতে ভবনটি গুড়িয়ে দেয়ার পর তাৎক্ষণিক জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পুলিশ সুপার, হিজলা থানা ওসিকে অবহিত করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি।

শিক্ষক সমিতির একাধিক শিক্ষক জানান, সমিতির জমিতে নিজেদের টাকায় টিনশেড ভবন করেছেন। বিসিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবন সম্প্রসারন করতে স্থানীয় সংসদ সদস্য পংকজ দেবনাথ ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দ এনেছেন। ওই নির্মান কাজের অর্থ লোপাটের জন্য শিক্ষক সমিতির ভবন ভাঙ্গা হয়েছে। হিজলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. খলিলুর রহমান বলেন, স্বাধীনার পূর্ব থেকে সেখানে তাদের ৩ শতাংশ জমি রয়েছে। যার দলিলপত্র আছে। এ বিষয়ে তারা আইনের আশ্রয় নেবেন।

তবে ইউপি চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন পন্ডিত জানান, জমিটি বিসিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের। শিক্ষক সমিতি জোরপূর্বক দখল করে রেখেছিল। তবে কে বা কারা সমিতির ভবন ভেঙ্গেছে তা তার জানা নেই।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও হিজলা উপজেলা চেয়ারম্যান সুলতান মাহামুদ টিপু বলেন, আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে কতিপয় ব্যক্তি শিক্ষকদের আশ্রয় স্থল ভাঙ্গার মত এমন ঘৃনিত কর্মকান্ড করেছে। দল তাদের দায়িত্ব নিবে না।

এব্যাপারে হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু জাফর রাশেদ বলেন, শিক্ষক সমিতির ভবনের জমি নিয়ে দ্বন্দ চলছিল। উভয় পক্ষই এটি দাবী করে আসছে। ভবনটি কারা ভেঙ্গেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শনও করেছেন। উভয় পক্ষের সাথে সমঝোতারও চেস্টা চলছে।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন