আচরণবিধি পর্যবেক্ষণে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট

নগরবাসীর আলোচনায় দুই দলের মেয়র প্রার্থী

  • খুলনা প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ২১, ২০১৮, ০২:৫৬ পিএম

খুলনা : খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচন নিয়ে সর্বত্র সরব আলোচনা চলছে। কে হবেন ‘নগর পিতা’ এই প্রশ্নে নগরবাসীর আলোচনায় উঠে আসছে নানা হিসাব-নিকাশ। অবশ্য তাদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থীই। আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে সিটি করপোরেশনের নির্বাচন দুটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের ‘প্রেসটিজ ইস্যুতে’ পরিণত হয়েছে। আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু না হলেও অন্য দলগুলোর পাশাপাশি এ দুটি দল সমানে চালিয়ে যাচ্ছে কৌশলী প্রচারণা।

শুক্রবার (২০ এপ্রিল) সকালে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক নগরীর ২৮ ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে কর্মিসভায় বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, খুলনার উন্নয়নের স্বার্থে আমার ব্যবহারে কেউ কষ্ট পেলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আমি ব্যক্তিগত স্বার্থে সচেতনভাবে কাউকেই কষ্ট দিইনি।

আমি মেয়র থাকাকালে খুলনা মহানগরীকে ‘তিলোত্তমা নগরী’ হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করেছি। সেই উন্নয়নকে আবার শুরু করার জন্য আপনাদের পাশে থাকতে চাই। দুপুরে খালেক জুমার নামাজের পর মুসল্লিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। পরে তিনি বাগমারা ব্যাংক কলোনিতে মতবিনিময় করেন।

বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু নগরীর ১, ২, ৮ ও ১১ নম্বর ওয়ার্ড নেতাকর্মীদের এক কর্মিসভায় বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, খুলনা শহরের মানুষের চাওয়া-পাওয়ার আন্দোলনে সব সময় আমি পাশে ছিলাম। জনগণ ইচ্ছা করলেই আমাকে কাছে পায়। মেয়র নির্বাচিত হলে একইভাবে তারা আমাকে কাছে পাবে। মঞ্জু সকালে প্রাতঃভ্রমণকারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

বৃহৎ এ দুই দলের বাইরেও কয়েকটি দল কেসিসি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী দিয়েছে। এর মধ্যে সিপিবি মনোনীত মেয়র প্রার্থী মিজানুর রহমান বাবু জানান, শুক্রবার (২০ এপ্রিল) পার্টির নারী সেল, যুব ইউনিয়ন এবং শিল্পাঞ্চলে তিনি মতবিনিময় করেন। জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী এসএম শফিকুর রহমান মুশফিক বলেন, প্রচারণা শুরু করিনি। প্রতীক বরাদ্দের পর প্রচারণা শুরু করব। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক দলীয় পর্যায়ে নির্বাচনী আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।

খুলনার ব্যবসায়ী কমল সাহা জানান, নগরীর উন্নয়নে যিনি ভ‚মিকা রাখবেন এমন প্রার্থীকে তিনি বেছে নেবেন। নারী নেত্রী শামীমা সুলতানা শীলু বলেন, আমরা পরিচ্ছন্ন নগরী চাই। সাংবাদিক শেখ আবু হাসান বলেন, দীর্ঘদিন খুলনা নগরীর কোনো উন্নয়ন হয়নি। আমরা এমন একজন মেয়র চাই, যিনি নগরীর সার্বিক উন্নয়নে আন্তরিকভাবে কাজ করবেন, নাগরিকদের প্রত্যাশার বিষয়টি যিনি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবেন, তাকেই আমরা ভোট দেব।

এদিকে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক করতে নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এসব পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ২৩ এপ্রিল তিনটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে। রিটার্নিং অফিসার মো. ইউনুচ আলী জানান, সোমবার বেলা ১১টায় আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক, দুপুর ১২টায় নির্বাচনী ব্যয় নির্বাহবিষয়ক এবং দুপুর ১টায় অনুষ্ঠিত হবে পরিদর্শক ও ভ্রাম্যমাণ টিমের বৈঠক। বৈঠকগুলো হবে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে।

আচরণবিধি পর্যবেক্ষণে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট : খুলনা জেলা প্রশাসক মো. আমিন উল আহসান জানান, কেসিসি নির্বাচনে ৩১টি ওয়ার্ডকে ৫টি ভাগে বিভক্ত করে ৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ টিম নির্বাচনী আচরণবিধি অনুসরণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবে, যা স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯-এর আওতায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধ প্রতিরোধ কার্যক্রমে ভ‚মিকা রাখবে।

জেলা প্রশাসক জানান, নির্বাচনী আচরণবিধি পর্যবেক্ষণ ও তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সাধারণ ওয়ার্ড ১, ২, ৩, ৪, ৫ ও ৬ নম্বর মিলিয়ে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একইভাবে সাধারণ ওয়ার্ড ৭, ৮, ৯, ১০, ১১, ১২ ও ১৩ নম্বর, সাধারণ ওয়ার্ড ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮ ও ১৯ নম্বর, সাধারণ ওয়ার্ড ২০, ২১, ২২, ২৩, ২৪ ও ২৫ নম্বর এবং সাধারণ ওয়ার্ড ২৬, ২৭, ২৮, ২৯, ৩০ ও ৩১ নম্বরে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন শুরু করছেন। ২৪ এপ্রিল প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হলে আরো ১০ জন ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।

এ ছাড়া ১২ থেকে ১৭ মে পর্যন্ত ৩১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন। প্রয়োজনে ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা আরো বাড়ানো হতে পারে বলে তিনি জানান।

সোনালীনিউজ/এমটিআই