৫০ কোটি টাকা আত্মসাতে এনজিও কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

  • ফরহাদ খান, নড়াইল | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ২২, ২০১৮, ১০:৪১ এএম

নড়াইল: জেলার কালিয়ায় প্রায় আট হাজার গ্রাহকের অর্ধশত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বেসরকারি সংস্থা ‘চলন্তিকা যুব সোসাইটি’র নির্বাহী পরিচালক সরোয়ার হোসাইনকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সোমবার (২১ মে) দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে নড়াইল জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে খুলনার দৌলতপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এদিকে, সরোয়ারের বিরুদ্ধে আদালতে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। সরোয়ার খুলনার শিপইয়ার্ড এলাকার সোলাইমান সরদারের ছেলে। মামলায় সরোয়ার হোসাইন ও চলন্তিকা যুব সোসাইটির চেয়ারম্যান খবিরুজ্জামানসহ সাতজনকে আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা পলাতক রয়েছে।

কালিয়া থানা সূত্রে জানা যায়, শ্যামল কুমার ঘোষ নামে এক ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক সম্প্রতি নড়াইলের একটি আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি গত ১৯ মে কালিয়া থানায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়।

এ মামলায় প্রেক্ষিতে কালিয়ার থানার ওসি (তদন্ত) ইকরাম হোসেন ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ওবায়দুল্লাহ অভিযান চালিয়ে সরোয়ার হোসাইনকে খুলনা থেকে গ্রেপ্তার সোমবার সকালে কালিয়া থানায় নিয়ে আসে। এর আগে গত ৯ এপ্রিল কালিয়া উপজেলার জোকা গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ গ্রাহক সাজ্জাদুর রহমান বাদী হয়ে খবিরুজ্জামানসহ আটজনের বিরুদ্ধে কালিয়া থানায় আরো একটি মামলা দায়ের করেন।
এছাড়া অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় পুলিশ চলন্তিকা যুব সোসাইটির ছয় কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে। তবে সংস্থার চেয়ারম্যান খবিরুজ্জামান এখনো পলাতক আছেন। খবিরুজ্জামান খুলনার সোনাডাঙ্গা এলাকার ইব্রাহিম হাওলাদারের ছেলে।

কালিয়া থানার ওসি শেখ শমসের আলী বলেন, ‘গ্রেপ্তার সরোয়ার হোসাইনের নামে আদালতে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। তবে এখনো রিমান্ড শুনানি হয়নি। এছাড়া খবিরুজ্জামানকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

মামলার বিবরণে ও ক্ষতিগ্রস্থ গ্রাহক সূত্রে জানা যায়, চলন্তিকা যুব সোসাইটি নামের বেসরকারি সংস্থাটি ২০০৪ সালে কালিয়া উপজেলায় কাজ শুরু করে। এর প্রধান কার্যালয় খুলনায় বলে জানা গেছে। গ্রাহককে ছয় বছরে দ্বিগুণ এবং দশ বছরে তিনগুণ মুনাফা দেয়ার ঘোষণা দিয়ে ব্যাপক কার্যক্রম শুরু করে।

কালিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন মেয়াদী আমানত, মাসিক আমানত সংগ্রহ ও ঋণদান কর্মসূচীর কাজ শুরু করে। অধিক মুনাফার প্রলোভন দিয়ে ২০১৭ সাল পর্যন্ত কালিয়ার বিভিন্ন এলাকার আট হাজার গ্রাহকের প্রায় ৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় এনজিওটি। সুযোগ বুঝে গত ৩ এপ্রিল চলন্তিকা যুব সোসাইটির কর্মকর্তারা কালিয়া ছেড়ে পালিয়ে যান।

এরপর চলন্তিকার কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ক্ষতিগ্রস্থ গ্রাহকেরা কালিয়া উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন। কালিয়া ছাড়াও আশেপাশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় চলন্তিকার কয়েকটি শাখা রয়েছে। এ ঘটনার পর ওই সব শাখার কার্যক্রম এখনো চলছে কিনা তা জানা যায়নি।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন