শরণখোলায় বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে গ্রাহক হয়রানি

  • শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ১৮, ২০১৮, ০৭:৪৮ পিএম

বাগেরহাট : শরণখোলায় পল্লী বিদ্যুতের বিল পরিশোধ করতে গ্রহকদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলা দুটি পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন। বিগত বছরগুলোতে শরণখোলা উপজেলার বিদ্যুৎ গ্রাহকরা বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের রায়েন্দা বাজার শাখায় বিল পরিশোধ করে আসছিল কিন্তু ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কর্তৃপক্ষের বনিবনা না হওয়ায় প্রথমে সোনালী ব্যাংক এবং পরে কৃষি ব্যাংক বিল নেয়া বন্ধ করে দেন।

পরবর্তীতে গ্রাহকরা শরণখোলা পল্লী বিদ্যুৎ অভিযোগ কেন্দ্রে (অফিসে) জমা দিতে শুরু করেন। কয়েক মাস অতিবাহিত হলে কর্তৃপক্ষ নিজ অফিসে বিদ্যুৎ বিল গ্রহণ না করিয়া গ্রহকদের হয়রানি করার উদ্দেশে ব্যাংক এশিয়ায়  (এজেন্ট ব্যাংকিং) জমা করার নির্দেশনা দেয়। ওই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ৬০০ টাকা পর্যন্ত ৫ টাকা, ৬০১ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত ১০ টাকা এবং তার উর্ধ্বে ১২ টাকা করে প্রতিটি বিলে অতিরিক্ত আদায় করে নিচ্ছে। এতে গ্রাহকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এ ব্যাপারে ড. মাসুম বিল্লাহ ডিএন কারিগরি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. মঞ্জুরুল হাসান খোকন বলেন, তাঁর বাড়ি ও দোকান মিলে ১২টি মিটার থাকায় প্রতি মাসে বিদ্যুৎ বিল ছাড়াও অতিরিক্ত ১০০ টাকার ওপরে গুণতে হচ্ছে। শরণখোলা উপজেলার ‘সুজন’ সম্পাদক ডা. রুহুল আমিন গাজী বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্তা ব্যক্তিরা গ্রাহক হয়রানি করার জন্য ব্যাংক এশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করে কোনো প্রকার রশিদ ছাড়াই অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ অনৈতিক ও আপত্তিকর।

দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের মৃত. হাজী জালাল উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে আ. হাই হাওলাদার ১৫ জুলাই ৫টি বিল নিয়ে ব্যাংক এশিয়ায় হাজির হলে তাকে অতিরিক্ত ২৫ টাকা গুনতে হয়েছে। এ নিয়ে তিনি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। পরে তিনি শরণখোলায় কর্মরত সাংবাদিকসহ রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন শরণখোলা উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, সরকারের বিদ্যুৎ খাতে যে উন্নয়ন হয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্তা ব্যক্তিরা ব্যাংক এশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করে তা মেলান করে দিচ্ছে।

বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিবেচনা করা উচিত। এ ছাড়া উপজেলার ১৫ সহস্রাধিক গ্রাহক হয়রানি বন্ধ করে অনতিবিলম্বে বিদ্যুৎ অফিসে দুইজন ক্যাশিয়ার নিয়োগ করে বিদ্যুৎ বিল গ্রহণ করা উচিত। এ ব্যাপারে ব্যাংক এশিয়ার শরণখোলার এজেন্ট শেখ আছাদুজ্জামান আসদ বলেন, ব্যাংক এশিয়ার প্রধান কার্যালয়ের সঙ্গে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চুক্তি মোতাবেক প্রতি বিলের সঙ্গে ৫-১২ টাকা অতিরিক্ত নেয়া হচ্ছে।

পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. জুলফিকার রহমান জানান, গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ আন্তরিকভাবে দুঃখিত। বিদ্যুৎ বিলের টাকা গ্রহণে স্থানীয় ব্যাংকগুলো রাজি না হওয়ায় ব্যাংক এশিয়ার সঙ্গে এ ধরনের চুক্তি করতে হয়েছে। এ ছাড়া সমস্যা সমাধানের চেষ্টা অব্যহত রয়েছে। তবে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা পেলে গ্রাহকদের এ সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর