খেজুর গাছের রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছে গাছিরা

  • ভোলা প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০১৮, ০৮:৩৩ পিএম

ভোলা : শীতের আমেজে হিমেল ঝিরঝিরি বাতাসে খেজুর গাছের তলায় গাছিরা যখন দাঁড়ায় আপন মনে তখন তাদের মন ভরে যায় অনাবিল আনন্দে। এ সময় শীতের সঙ্গে খেজুর রসের এক নিবিড় সম্পর্ক। খেজুর গাছ পরখ করে রস সংগ্রহ করে তারা।

বিশেষ কায়দায় রশি বেঁধে খেজুর গাছে উঠে ধারাল কাচি দিয়ে বাদামী রঙের কপালি বের করে। আর কিছুদিন পরই সেখান থেকে খেজুরের রস সংগ্রহ করে। গ্রামবাংলার প্রত্যেকটি ঘরে ঘরে এই রস দিয়ে তৈরি হয় বিভিন্ন রকমের পিঠা কিংবা পায়েস।

এখন পুরাদমে শীত চলছে, ভোলা জেলার ভোলা সদর, দৌলতখান, বোরহানউদ্দিন, তজুমদ্দিন, লালমোহন, চরফ্যাশন ও মনপুরা উপজেলার গাছিরা খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করার জন্য ব্যস্ত সময় পার করছে। শীত শুরু হওয়ার সঙ্গে খেজুর গাছ কাটার প্রতিযোগীতা পড়ে যায় গাছিদের মধ্যে। তাই খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে এসব এলাকার গাছিরা।  

ওই সময় খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহকারী গাছিদের প্রাণ ভরে উঠে আনন্দে। যদিও আগের মতো খেজুর গাছ না থাকায় এখন আর নেই সেই রমারমা অবস্থা। খেজুরের গুড় থেকে এক সময় বাদামি চিনিও তৈরি হতো। যার স্বাদ ও ঘ্রাণ ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। শীতকে কেন্দ্র করে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের প্রতীক খেজুরের রসকে ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে গ্রামগুলোতে।
 
এক সময় গ্রামের জনপদের সাধারণ মানুষ শীতের সকালে ঘুম থেকে উঠে কাঁপতে কাঁপতে ঠান্ডা খেজুর রস না খেলে যেন দিনটাই মাটি গয়ে যেত। কিন্তু ইটভাটার আগ্রাসনের কারণে আগের তুলনায় খেজুর গাছের সংখ্যা দিন দিন ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে।

ইটভাটায় খেজুর গাছ পোড়ানো আইনত নিষিদ্ধ হওয়ার পরেও ইটভাটার মালিকরা ধ্বংস করে চলছে খেজুর গাছ।

জানা গেছে, ভোলা জেলায় প্রায় ৭৫টি ইটভাটা রয়েছে। এ সকলের অধিকাংশ ইটভাটাগুলো কয়লা দিয়ে পোড়ানোর কথা থাকলেও অধিকাংশ ইটভাটাগুলোতে কয়লার পরিবর্তে কাঠ, এমনকি পরিবেশ বান্ধব খেজুর গাছ পোড়ানো হচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে খেজুর গাছকে ব্যবহার করায় প্রায় বিলুপ্তির পথে ভোলার শত শত বছরের ঐতিহ্যবাহী পরিবেশ বান্ধব খেজুর গাছ। ফলে এ জনপদের মানুষ এখন খেজুরের রসের মজার মজার খাবার থেকে অনেকেই বঞ্চিত হচ্ছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর