আলোর ফেরিওয়ালা চাঁপাইনবাবগঞ্জে, পাঁচ মিনিটেই সংযোগ

  • চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০১৯, ০৬:৪৩ পিএম
ছবি : সোনালীনিউজ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ : জেলার সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের শেখটোলা গ্রামে ইঞ্জিনচালিত ভটভটিতে মাইকসহ গেলেন কয়েকজন লোক। পল্লী বিদ্যুতের এসব কর্মীদের কাছে রয়েছে বৈদ্যুতিক সব সরঞ্জাম। প্রবেশ করলেন খামার ব্যবসায়ী চেনু মন্ডলের বাড়িতে। গৃহকর্তার কাছ থেকে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের আবেদন সংগ্রহ করেই ওয়ারিং পরিদর্শন সম্পন্ন করা হলো। সেখানে বসেই মিটারের রসিদের জামানত গ্রহণ করা হয়।

একদিকে কাগজপত্রের কাজ সম্পন্ন হচ্ছে অন্যদিকে মিটার স্থাপনের কাজ করছিলেন কয়েকজন লাইনম্যান। মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যে স্বপ্নের বৈদ্যুতিক আলোয় আলোকিত হলো চেনু মন্ডলের বাড়ি। নতুন সংযোগ পেয়ে শুধু ওই বাড়ির লোকজনই নয় আশেপাশের লোকজনও আনন্দে ভাসছেন। এটিই হচ্ছে পল্লী বিদ্যুতের ‘আলোর ফেরিওয়ালা’।

রোববার (২০ জানুয়ারি) থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহারাজপুর সাব-জোনাল অফিসের একদল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভটভটিতে করে মিটার প্রত্যাশীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এভাবেই সংযোগ দিচ্ছেন।

গৃহবধূ সায়েরা বেগম বলেন, এত সহজে নতুন সংযোগ পাওয়া যাবে, তা আমাদের স্বপ্নেও ছিল না। রাস্তা দিয়ে মাইকিং করতে করতে এই গাড়িটি যাচ্ছিল, তাদেরকে ডাকলাম এবং ৫৬৫ টাকা দিলাম। আর এতেই সঙ্গে সঙ্গে নতুন সংযোগ পেয়ে গেলাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনেক ধন্যবাদ, এমন উদ্যোগের জন্য।

শুধু সায়েরা বেগমের বাড়িতেই নয় প্রথম দিনেই মহারাজপুর সাব-জোনাল অফিসের আওতাধীন প্রায় ৮টি বাড়িতে বৈদ্যুতিক সংযোগ দিয়েছে আলোর ফেরিওয়ালা টিম।

একই গ্রামের নতুন সংযোগ পাওয়া মো. তেনু বলেন, যেখানে আজ থেকে ১০ বছর আগেও বিদ্যুৎ পাওয়াটা ছিল মানুষের জন্য স্বপ্নের ব্যাপার। দিন রাত ২৪ ঘণ্টায় যে এলাকার মানুষের ভাগ্যে বিদ্যুৎ জুটতো মাত্র ৪/৫ ঘণ্টা, বাসাবাড়ি কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুতের লাইন নিতে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস এমনকি বছর পেরিয়ে গেলেও মানুষ প্রত্যাশিত বিদ্যুৎ পায়নি। হাজার হাজার টাকা দিয়েও যেখানে মানুষের কপালে জোটেনি বিদ্যুতের লাইন, সেখানে মাত্র ৫ মিনিটে ঘরে বসেই পাচ্ছে বৈদ্যুতিক লাইন। এ যেন সত্যিই স্বপ্ন।

এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার মো. সোহেল রানা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ ৫ মিনিটেই আলোর ফেরিওয়ালার মাধ্যমে বৈদ্যুতিক সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। এই জেলা ইতিমধ্যেই শত ভাগ বিদ্যুতের আওতায় এসেছে। ইউপি চেয়ারম্যানদের দেওয়া তথ্যানুসারে যাদের বাড়িতে এখনো বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি তাদের যদি খুঁটি লাগে তাহলে আগামী ৭ দিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে। খুঁটি দিয়েই তাদের বাড়িতে বৈদ্যুতিক সংযোগ দেওয়া হবে।

তিনি জানান, সংযোগের সময় ৫৬৫ টাকার মধ্যে ১১৫ টাকা আবেদন ফি, ৪০০ টাকা জামানত ও ৪০ টাকা সদস্য ফি নিয়ে ৫ মিনিটেই নতুন সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। গ্রাহক হয়রানি বন্ধ ও দুর্নীতিমুক্ত করতেই ‘আলোর ফেরিওয়ালা’ কর্মসূচি চালু করা হয়েছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর