প্রকল্পের মেয়াদ কমে যাওয়ায়

শরণখোলায় নিম্নমানের উপকরণে চলছে সড়ক নির্মাণ

  • শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ১৯, ২০১৯, ০১:১১ পিএম

ঢাকা: প্রকল্পের মেয়াদ দিন দিন কমে যাওয়ার কারণে বাগেরহাটের শরণখোলায় যেন তেন ভাবে একটি সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নিয়মনীতির অনুসরণ না করে বালুর পরিবর্তে কাঁদা মাটি ভাটার ইটের পরিবর্তে গ্রামাঞ্চলের লোকাল পাজার নিম্নমানের ইট ব্যবহার করছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। তবে চলমান নির্মাণ কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা প্রকৌশল বিভাগের নজরদারী কম থাকায় নিম্নমানের কাজ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে অনেকটা চাঁপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। যার ফলে প্রকল্পের স্থায়ীত্ব নিয়ে সংঙ্কিত স্থানীয় জন সাধারণ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৬ সালে (সি.সি.আর.আই.পি) প্রকল্পের আওতায় ৯ কোটি ৯ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজাপুর বাজার-জীবন দুয়ারী-রায়েন্দা জি.সি সড়ক নির্মাণের কাজ পান ঢাকার বনানীস্থ মিজান কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কিন্তু প্রকল্পের মেয়াদ ইতোমধ্যে দু-দফা শেষ হলেও সড়কটির ৪৮.৮০ মিটার কার্পেটিং এর অর্ধেকও এ পর্যন্ত শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার কর্তৃপক্ষ।

আগামী ১০/১২ দিনের মধ্যে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ না হলে বর্ধিত সময়ের জন্য (৪র্থ বারের মত) আবেদন করতে হবে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের। তাই দ্রুত কাজ শেষ করতে গিয়ে অনিয়মের মধ্য দিয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সড়কটির কার্পেটিং এর কাজ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নিতে গেলে, সড়ক সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা আবুল হাশেম, গণি মিয়া, বারেক হাওলাদার সহ অনেকে বলেন, ৩ বছর পূর্বে সরকার রাস্তাটি পাকা করার জন্য কয়েক কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। কিন্তু প্রথম দিকে ঠিকাদার মাটি খুড়ে ২/৩ বছর রাস্তাটি ফেলে রাখার কারণে গ্রামের শত শত মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।

বর্তমানে কাজ শুরু হলেও তদারকির অভাব থাকায় ঠিকাদার তার ইচ্ছামত নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করছে। এছাড়াও নাম প্রকাশ না করা শর্তে, স্থানীয়দের কয়েকজন বলেন, গ্রামাঞ্চলের লোকাল পাজার ইট, খাল ও ডোবা থেকে কাঁদা-মাটি মিশ্রিত বালু উত্তোলণ করে রাস্তায় ব্যবহার করলেও কর্মকর্তাদের দৃষ্টিতে কাজ অনেক ভাল হচ্ছে। এমনকি কার্পেটিং এর পূর্বে রাস্তা জুড়ে ব্যাপকভাবে কেরোসিন ছিটিয়ে দেয়ায় তার গন্ধ বসতবাড়ি পর্যন্ত ছড়াচ্ছে। সঠিক তদারকির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা নিশ্চিত করতে না পারলে সরকারের কোটি কোটি টাকার প্রকল্পের সুফল বেশিদিন ভোগ করা যাবে না বলে সাধারণ মানুষের ধারণা। তাই যথাযথভাবে যাতে সড়কটি যাতে নির্মাণ করা হয় সেজন্য তারা দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের প্রতি জোর অনুরোধ করেন।

প্রকল্প এলাকায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নির্ভরযোগ্য কাউকে পাওয়া না গেলেও এ ব্যাপারে সাইড ইঞ্জিনিয়ার মো. বাবু বলেন, রাস্তাটি নির্মাণের ক্ষেত্রে কোন ধরনের অনিয়ম হচ্ছে না। নিয়ম মেনেই কার্যক্রম চলছে। কাজ সম্পর্কে স্থানীয়দের তেমন কোন জ্ঞান না থাকায় ঠিকাদারকে বেকায়দায় ফেলতে উল্টা পাল্টা অভিযোগ করেছে।

তবে, উপজেলা প্রকৌশলী চন্দন কুমার চক্রবর্তী জানান, ওই প্রকল্পের মেয়াদ চলতি মাসের ৩১ মে শেষ হবে। তাই ঠিকাদার সংশ্লিষ্টরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সড়কটি হস্তান্তরের জন্য খুব দ্রুত কাজ চালাচ্ছেন। এছাড়া অনিয়মের কোন সুযোগ নেই। উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের পাশাপাশি প্রতিনিয়ত উর্ধ্বতন কর্মকর্তারও প্রকল্পটির খোঁজ খবর নিচ্ছেন। তবে রাস্তার ম্যাকাডাম ঠিক রাখতে স্থানীয়ভাবে কিছু বালু ও লোকাল ইট ব্যবহার করতে হচ্ছে।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন