শিশু সায়মা ধর্ষণ ও হত্যা

হারুনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

  • আদালত প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ৯, ২০১৯, ০১:২১ পিএম

ঢাকা : রাজধানীর ওয়ারীতে সাত বছর বয়সী শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে ঘাতক হারুন-উর-রশিদ।

সোমবার (৮ জুলাই) ঢাকা মহানগর হাকিম সরাফুজ্জামান আনছারী তার খাস কামরায় আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করেন। জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয় বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান জানিয়েছেন।

এর আগে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আরজুন গতকাল বেলা ১১টার দিকে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করে হারুনকে আদালতে পাঠান।

আদালতে সংশ্লিষ্ট পুলিশের এসআই মুন্সী আসলাম হোসেন বলেন, সকাল ১১টার দিকে হারুনকে আদালতে আনার কিছুক্ষণের মধ্যে তাকে বিচারকের খাস কামরায় নেওয়া হয়।

গত শুক্রবার রাতে ওয়ারীর বনগ্রামে বহুতল একটি ভবনের নয় তলার ফাঁকা ফ্ল্যাটে শিশু সায়মার মরদেহ পাওয়া যায়। ওই ভবনের ষষ্ঠ তলায় পরিবারের সঙ্গে থাকত সে। শিশুটির বাবা আবদুস সালাম নবাবপুরের একজন ব্যবসায়ী। তার দুই ছেলে, দুই মেয়ের মধ্যে সবার ছোট ওই মেয়েটি একটি স্কুলে নার্সারিতে পড়ত। গত শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে নিখোঁজ ছিল শিশুটি; খোঁজাখুঁজির পর রাতে পাওয়া যায় মরদেহ। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা আবদুস সালাম বাদী হয়ে ওয়ারী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামি হিসেবে কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি। এ ঘটনায় গত শনিবার রাতে হারুন-উর-রশিদ (২৬) নামের ওই যুবককে কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বনগ্রামের যে বহুতল ভবনে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনাটি ঘটেছে, তার অষ্টম তলায় খালাতো ভাই পারভেজের বাসায় থাকত ধর্ষক হারুন। ঠাঁটারীবাজারে পারভেজের রঙের দোকানেই সে কাজ করত।

এদিকে গতকাল নিহত সায়মার বনগ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে এখনো চলছে শোকের মাতম। মেয়ের ছবি বুকে নিয়ে বিলাপ করছেন মা সানজিদা আক্তার। তার হূদয়বিদারক কান্নায় সেখানের পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। তার কান্না দেখে আশপাশের অনেকেই কান্না থামাতে পারছেন না।

সায়মার বাবা আবদুস সালাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার ফুটফুটে মেয়ে। আমি বাইরে থেকে এলে আমাকে জড়িয়ে ধরত। সবার সঙ্গে মিশত। সবার আদরের ছিল। সবাই তাকে অনেক আদর করত। আজ সে নেই। তাকে ধর্ষণ করে মেরে ফেলেছে। আমার মেয়ের হত্যার বিচার চাই।

শিশু সায়মা ছিল এলাকার সবার প্রিয়। সবার মুখে মুখে তার হত্যাকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি চাচ্ছেন বনগ্রাম এলাকাবাসী। হত্যাকারীর যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়। তার শাস্তি দেখে যেন অন্য কেউ এমন অপরাধ করতে না পারে; এমনটাই দাবি বনগ্রামবাসীর।

বনগ্রামের বাসিন্দা ইউসুফ হোসেন বলেন, সায়মা ছিল সবার প্রিয়। তার হত্যাকাণ্ড মেনে নেওয়ার মতো নয়। তাকে যে হত্যা করেছে তার যেন সর্বোচ্চ শাস্তি হয়।

জামান উদ্দিন বলেন, সায়মার হত্যাকারীর যেন সর্বোচ্চ শাস্তি হয়। সরকার যেন সায়মা হত্যাকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই