‘এ মামলা আজকেই প্রত্যাহার করা হোক’

  • আদালত প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ১৮, ২০২১, ১২:৫৬ পিএম

ঢাকা : প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের রিমান্ড নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২০ মে) আবার শুনানি হবে। মঙ্গলবার (১৮ মে) দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালত এ আদেশ দেন।

এদিন রোজিনা ইসলামের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করলে আংশিক শুনানি শেষে বিচারক বাকি শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার (২০ মে) তারিখ রেখেছেন। তার আগ পর্যন্ত কারাগারে থাকতে হবে এই সাংবাদিককে।

মামলার শুনানির সময় প্রথম আলার পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন পত্রিকাটির সহযোগী সম্পাদক কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক। প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্যসচিবের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করবে কিনা—জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আগে জামিনের জন্য আমরা আপিল করব। যদি জামিন পাই তারপর মামলার বিষয়টি আসবে। আইনের বাইরে কিছু করব না।

আনিসুল হক আরো বলেন, একজন নাগরিক, সাংবাদিক, লেখক এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষ হিসেবে বলতে চাই, এখানে রিমান্ডের আবেদন কেন করা হলো? এটা না করে জামিনের বিষয়ে কথা হতে পারত। স্বাধীন সাংবাদিকতার পক্ষে দেশের সব সাংবাদিক সমাজকে এক হতে হবে। সবাই মিলে আওয়াজ তুলতে হবে, এই মামলা আজকেই প্রত্যাহার করা হোক।

সংবাদপত্রকে সরকারের সহযোগী উল্লেখ করে এই কথাসাহিত্যিক বলেন, সংবাদপত্র সরকার ও প্রশাসনের সহযোগী। আমরা যদি দুর্নীতির খবর না তুলে ধরি তাহলে সরকার কীভাবে বুঝবে যে, দেশে দুর্নীতি হচ্ছে। কাজেই আমরা সরকারের উপকার করারা চেষ্টা করছি।

কেউ কেউ বলছেন, রোজিনা ইসলাম দেশে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে পারেন। আমি বলি একজন জার্নালিস্ট নারী, মা ও অসুস্থ নারী সচিবালয়ে গিয়ে যে পরিস্থিতির মোকাবিলা করলেন তাতে সারা পৃথিবীতে কি বাংলাদেশর মুখ উজ্জ্বল হলো নাকি অনুজ্জ্বল হলো?

কাজেই সরকারের প্রতি আহ্বান, যদি দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে চাই তাহলে এই মামলা এখনই প্রত্যাহার করে নেওয়া হোক।

এ সময় তিনি জানান, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ থেকে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়া হবে।

তিনি বলেন, সাংবাদিক হিসেবে নয়, আমি একজন সাধারণ নাগরিক, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে বলছি, প্রতিটি নাগরিকের অধিকার আছে তথ্য জানার। কিন্তু সাংবাদিকদের ওপর যদি জুলুম করা হয় সেটা সাংবাদিকতা, দেশ ও প্রশাসনের জন্য ভাবনার বিষয়। মহান নেতা বঙ্গবন্ধু বারবার সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলে গেছেন।

সোমবার পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে গেলে রোজিনা ইসলামকে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় আটকে রেখে হেনস্তা করা হয়। একপর্যায়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাত সাড়ে আটটার দিকে পুলিশ তাঁকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায়।

রাত পৌনে ১২টার দিকে পুলিশ জানায়, রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা হয়েছে। তাঁকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সাংবাদিকেরা সোমবার বিকেলে সচিবালয়ে এবং রাতে শাহবাগ থানার সামনে বিক্ষোভ করেন। এর নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে), অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংগঠন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই