রাডার ক্রয় দুর্নীতি

হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেনি আপিল বিভাগ

  • আদালত প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২০, ২০১৬, ০৩:০৯ পিএম

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের রাডার দুর্নীতি ক্রয় সংক্রান্ত মামলায় প্রসিকিউশনের সাক্ষীদের পুনরায় পরীক্ষাকরণের ও ৩১ মার্চের মধ্যে বিচার শেষ করতে হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেনি চেম্বার বিচারপতি। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা এক আবেদনের প্রেক্ষিতে অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি নিজামুল হক রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ না দিয়ে আগামী ২ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য্য করেন।

পরে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, চেম্বার বিচারপতির এই আদেশের ফলে হাইকোর্টের রায় আপাতত বহাল থাকল। এর আগে (২৪ নভেম্বর) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই রায় দিয়েছিলেন। রায়ে মামলাটি যুক্তিতর্কের পর্যায় থেকে প্রত্যাহার করে প্রসিকিউশনের সাক্ষীদের পুনরায় জেরার সুযোগ দিতে বলা হয়। একইসঙ্গে মামলার কার্যক্রম ৩১ মার্চের মধ্যে শুনানি শেষ করতে বলা হয়।

হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে মামলার আরেক আসামি বিমান বাহিনীর সাবেক সুলতান মাহমুদ আপিল করলে চেম্বার আদালত মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) এই আদেশ দেন। এরশাদ ও সুলতান মাহমুদ ছাড়া এই মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বিমান বাহিনীর সাবেক সহকারী প্রধান মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ও ইউনাইটেড ট্রেডার্সের পরিচালক এ কে এম মুসা। মামলার শুরু থেকে মুসা পলাতক রয়েছেন।

চলতি বছর ৭ নভেম্বর এরশাদের বিরুদ্ধে রাডার ক্রয় দুর্নীতির মামলাটিতে পুনরায় সাক্ষ্যগ্রহণের দুদকের আবেদন খারিজ করে দেন ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কামরুল হোসেন মোল্লা। নিম্ন আদালতের এই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করে দুদক।

আবেদনের পর দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানিয়েছিলেন, ন্যায়বিচারের স্বার্থে বাকি সাক্ষীদের সাক্ষ্য নেয়া প্রয়োজন বলে গত গত ২১ অক্টোবর নিম্ন আদালতে পুনরায় সাক্ষ্যগ্রহণের আবেদন করেছিল দুদক। সেই আবেদন খারিজ হওয়ায় হাইকোর্টে এই রিভিশন আবেদন করা হয়।

দুই যুগ আগের করা এই মামলাটি বিচারের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছানোর পর ২০১৪ সালে ঢাকার তৎকালীন বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবদুর রশীদ শুনানিতে বিব্রত বোধ করেন। এরপর মামলাটি কামরুল হোসেন মোল্লার আদালতে আসে। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মামলাটি এখন যুক্তিতর্কের পর্যায়ে রয়েছে।

মামলার বিবরণীতে জানা যায়, ১৯৯২ সালের ৪ মে তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো মামলাটি দায়ের করে। ১৯৯৪ সালের ২৭ অক্টোবর আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। ১৯৯৫ সালের ১২ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এই মামলায় ৩৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষী নিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করা হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে যুক্তিতর্কের পর্যায়ে রয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়, তৎকালীন বিমান বাহিনী প্রধান সদর উদ্দিন আহমেদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কাছে বাহিনীর জন্য যুগোপযোগী রাডার ক্রয়ের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপতির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় ফ্রান্সের থমসন সিএসএফ কোম্পানি নির্মিত অত্যাধুনিক একটি হাই পাওয়ার রাডার ও দুটি লো লেভেল রাডার ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়।

তৎকালীন সেনাবাহিনী প্রধান এরশাদসহ অপর আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে আর্থিক সুবিধাপ্রাপ্ত হয়ে থমসন সিএসএফ কোম্পানির রাডার না কিনে বেশি দামে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্টিং কোম্পানির রাডার কেনে। এতে সরকারের ৬৪ কোটি ৪ লাখ ৪২ হাজার ৯১৮ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর