হবিগঞ্জে পাহাড় ও টিলা সংরক্ষণে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ

  • আদালত প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ১২, ২০১৭, ০৯:৩৩ পিএম

হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জ জেলার সকল পাহাড় ও টিলা সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ওই জেলার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে (এসপি) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে বিষয়টি নিয়মিত তদারকি করার জন্য ওই দুই কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া একই জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার দিনারপুরে পাহাড় ও টিলা কাটা অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) করা এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ রায় দেন হাইকোর্ট।

২০১৫ সালের ২২ আগস্ট ‘পাহাড় কাটা থামছে না’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন যুক্ত করে এ রিট আবেদন করা হয়। রিট আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন, অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। তিনি রায়ের পর সাংবাদিকদের বলেন, দিনারপুরে পাহাড় ও টিলা কাটা রোধে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এছাড়া হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও পুরিশ সুপারকে গোটা জেলায় পাহাড় ও টিলা সংরক্ষণে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

রিট আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট ওই বছরের ১৪ ডিসেম্বর এক আদেশে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দিনারপুরে অবাধে পাহাড় ও টিলা কাটার ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন। একইসঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়।

আদালতের এ আদেশ পালন করে দুই সপ্তাহের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেটের বিভাগীয় পরিচালক, হবিগঞ্জের উপ পরিচালক, হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার, নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ওসিকে নির্দেশ দেয়া হয়। আদালত অন্তবর্তীকালীন এ নির্দেশনার পাশাপাশি রুল জারি করেন। এ রুলের ওপর শুনানি শেষে রায় দেন হাইকোর্ট।

পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না পাহাড় কাটা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি হিসেবে খ্যাত হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দিনারপুরে অবাধে পাহাড় ও টিলা কেটে উজাড় করা হচ্ছে। কিছুদিন বন্ধ থাকার পর প্রায় দুই মাস ধরে ওই পরগনার সবচেয়ে উঁচু পাহাড় মিরের টিলা কেটে উজাড় করছে প্রভাবশালী মহল।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার বনগাঁও গ্রামের মৃত নওয়াব উল্লার ছেলে সোনা মিয়াসহ একটি প্রভাবশালী মহল ওই পাহাড় কাটায় জড়িত। তারা প্রকাশ্যে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। পাহাড় কাটার কারণে পাহাড় ও টিলাধসে মৃত্যুর ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে। পরিবেশও ভারসাম্য হারাচ্ছে। পাহাড় কাটায় দিনারপুর এলাকার প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য হারিয়ে যাচ্ছে।

গত সাত বছরে নবীগঞ্জের দিনারপুরে পাহাড়ের মাটিচাপা পড়ে একই পরিবারের ছয়জনসহ অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এগুলো বেশির ভাগই কাটা হয়েছে আবাসিক প্রকল্প, বাণিজ্যিক মার্কেট কিংবা ঘরবাড়ি তৈরির মাটি ভরাটের জন্য। এখন মাধবপুরে চালু হওয়া সিরামিক কারখানায় এবং বিবিয়ানায় বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পেও এখান থেকে মাটি সরবরাহ করা হচ্ছে।’

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম